নতুন বছরে নিজের প্রথম গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যে জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস কোভিড-১৯ মহামারি ও জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য বৈশ্বিক সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার প্রতি গুরুত্বারোপ করেছেন।
লন্ডনে অনুষ্ঠিত জাতিসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদের প্রথম অধিবেশনের ৭৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে রোববার এক ভার্চুয়্যাল অনুষ্ঠানে কথা বলেন জাতিসঙ্ঘ প্রধান।
তিনি বলেন, ‘সাধারণ পরিষদের কার্যক্রম বৈশ্বিক স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও জীবনধারণের মান উন্নয়ন এবং মানবাধিকার ও লিঙ্গ সমতার প্রসারে সাহায্য করেছে।’
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তাদের সম্মিলিত সাফল্যের জন্য গর্ব করতে পারে উল্লেখ করে মহাসচিব বলেন, মহামারিসহ গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলো মোকাবিলায় বৃহত্তর পদক্ষেপ দরকার।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারিতে মৃত্যের সংখ্যা প্রায় ২০ লাখে পৌঁছে গেছে।
মর্মান্তিক মানবিক ঘটনা
জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব প্রায়ই বলছেন যে, কেমন করে কোভিড-১৯ সঙ্কট একটি দেশের নিজেদের মধ্যে এবং বিভিন্ন দেশের মাঝে অসমতা, ভঙ্গুরতা আর নারী ও মেয়ে শিশুদের প্রতি হুমকিগুলো উন্মুক্ত করে দিয়েছে। সেই সাথে এ সঙ্কট বৈশ্বিক সহযোগিতা ও সংহতির গুরুতর ফারাকগুলো আরো সামনে নিয়ে এসেছে।
তিনি বলেন, ‘অতি সম্প্রতি এটি আমরা দেখেছি টিকার জাতীয়করণ নিয়ে। কিছু ধনী দেশ বিশ্বের গরিবদের কথা বিবেচনা না করেই নিজেদের লোকজনের জন্য টিকা কিনতে প্রতিযোগিতা করছে।’
অন্যদিকে, জলবায়ুর জরুরি পরিস্থিতি মোকাবিলায় বৈশ্বিক সাড়াদান একেবারে অপর্যাপ্ত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
জলবায়ু রক্ষা প্রথম অগ্রাধিকার
জাতিসঙ্ঘ প্রধান মহামারিকে ‘মর্মান্তিক মানবিক ঘটনা’ হিসেবে বর্ণনা করলেও জোর দিয়ে বলেছেন যে এটি টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এবং জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক প্যারিস চুক্তির আলোকে অধিকতর টেকসই ও ন্যায়সঙ্গত বিশ্ব কায়েমের সুযোগ হতে পারে।
তিনি বলেন, ‘চলতি শতকের মাঝামাঝি নাগাদ কার্বন নিরপেক্ষতা অর্জনের জন্য একটি বৈশ্বিক জোট গঠন করা হলো এ বছর জাতিসঙ্ঘের কেন্দ্রীয় লক্ষ্যবস্তু। ২০১০ সালের স্তরের তুলনায় বৈশ্বিক নিঃসরণ ২০৩০ নাগাদ ৪৫ শতাংশ কমিয়ে আনতে আমাদের দরকার অর্থবহ কাটছাঁট।’
অ্যান্তোনিও গুতেরেস জানান, গত বছর বিশ্বব্যাপী পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে যে বিশ্বের মানুষের কাছে প্রথম অগ্রাধিকার হলো জলবায়ুর পরিবর্তন রোধে পদক্ষেপ নেয়া। জাতিসঙ্ঘের ৭৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে পরিচালিত এ জরিপে ১৫ লাখের অধিক মানুষ জলবায়ুর পরিবর্তন নিয়ে তাদের আশা ও আকাঙ্ক্ষার কথা তুলে ধরেন।
সূত্র : ইউএনবি