- মাকে বেঁধে রাখা হয়েছে গাছে, দুধ খেতে না পেয়ে কাঁদছে অবুঝ শিশু- এ নিষ্ঠুর বর্বরতা ঘটনা ঘটেছে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী ইউনিয়নের মালিরচালা গ্রামে। চোর সন্দেহে সন্ধ্যা রানী (৩৫) নামে এক আদিবাসী নারীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। তার স্বামীর নাম নারায়ণ বর্মণ। এ ব্যাপারে রোববার রাতে নির্যাতিত নারী বাদী হয়ে ৫ জনকে আসামি করে মামলা করেছেন।মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, নির্যাতিত সন্ধা রানীর দুই ছেলে ও এক মেয়ের জননী। তার ছোট ছেলে পলাশ (৮) একই গ্রামের মনিরুল ইসলাম ভূইয়ার পরিবারের ছেলে মেয়েদের সাথে প্রায়ই খেলা করত। ঘটনার ১৫ দিন আগে পলাশ মনিরুল ভূইয়ার বাড়ি থেকে ঘুড়ি বানানোর জন্য পত্রিকা নিয়ে আসে এবং তার সন্তানদের সঙ্গে ঘুড়ি উড়ায়। হঠাৎ মনিরুলের বাড়ি থেকে স্বর্ণ ও টাকাসহ মূল্যবান কাগজপত্র চুরি হয়ে যায়। এ ঘটনার জের ধরে ৩রা জানুয়ারি শিশু পলাশকে তারা বাড়িতে ধরে নিয়ে মারধর করে এবং মালামাল চুরি করে তার মায়ের কাছে জমা দেয়ার স্বীকারোক্তি আদায় করে।
৯ই জানুয়ারি মনিরুলের দুই বোন খুকি (৩৭) ও সুমি আক্তার (৩২) সন্ধ্যা রানীর বাড়ি গিয়ে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে যান। পরে তারা সন্ধ্যাকে বাড়ির পাশের একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন। এ সময় মনিরুল ভূইয়া তার দুই ছেলে মোস্তফা ও দুই বোন মিলে তাকে লাঠি দিয়ে এলোপাথাড়ি মারধর করে। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করেন।
মামলার আসামির মোস্তফা ভূইয়া বলেন, আমার ছোট বোনের গহনা চুরি করে সন্ধ্যা রানীর ছেলে পলাশ। সে চুরি করা গহনা তার মায়ের কাছে জমা দেয়। বারবার চাইলেও তারা দেয়নি। তাই আমার ছোট বোন সুমি সন্ধ্যা রানীকে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে। আমরা কিছু জানি না।
প্রত্যেক্ষদর্শী মহানন্দ চন্দ্র বর্মন বলেন, ঘটনার দিন সন্ধ্যা থেকে প্রায় চার ঘণ্টা সন্ধ্যা রানীকে বেঁধে রাখা হয়। এ সময় তার ৬ মাসের শিশু বাচ্চাকে মায়ের বুকের দুধও খেতে দেয়নি। পরে আমি দুই বন্ধুর সহযোগিতায় সন্ধা রানীকে উদ্ধার করি। বর্তমানে সে আমার বাড়িতে আছেন। এ ব্যাপারে ঘাটাইল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো. ছাইফুল ইসলাম বলেন, মামলার তদন্ত কাজ চলমান রয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।