চট্টগ্রামে আ. লীগের দু’পক্ষে সংঘর্ষে নিহত ১, বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থীসহ আটক ২৬

  • চট্টগ্রাম ব্যুরো

চট্টগ্রাম নগরীর পাঠানটুলী এলাকায় মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম সিটি কপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাউন্সিলর প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে গোলাগুলিতে আজগর আলী বাবুল সর্দার নিহত হওয়ার ঘটনায় ২৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। আটকদের মধ্যে বিদ্রোহী কাউন্সিলর প্রার্থী ও নগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবদুল কাদের (মাছ কাদের) রয়েছেন।

মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) রাত ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত ২৮ নম্বর পাঠানটুলী ওয়ার্ডের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে পুলিশ।
ডবলমুরিং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সদীপ কুমার দাশ নয়া দিগন্তকে বলেন, গোলাগুলিতে আজগর আলী বাবুল নিহত হওয়ার ঘটনায় আমরা আবদুল কাদেরসহ ২৬ জনকে আটক করেছি। আবদুল কাদেরকে তার বাসা থেকে আটক করা হয়।
আটকরা সবাই কাউন্সিলর প্রার্থী মো. আবদুল কাদেরের অনুসারী বলে জানা গেছে। তাদের নগরীর মনসুরাবাদস্থ ডিবি কার্যালয়ে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

সংঘর্ষে নিহতের ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুর মামলা দায়ের করছেন।

মঙ্গলবার রাত নয়টার দিকে পাঠানটুলীর মগ পুকুর এলাকায় আওয়ামী লীগের দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের গোলাগুলিতে স্থানীয় যুবলীগ নেতা আজগর আলী বাবুল নিহত হন। একই ঘটনায় মাহবুব নামে আরেক কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনার জন্য নজরুল ইসলাম বাহাদুর আবদুল কাদেরকে দায়ী করলেও তা অস্বীকার করেছেন আব্দুল কাদের।

আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলর প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাহাদুর মঙ্গলবার রাতে নয়া দিগন্তকে বলেন, মগপুকুর এলাকায় গণসংযোগকালে বিদ্রোহী প্রার্থী আবদুল কাদেরের অনুসারীরা শাটার গান নিয়ে হামলা চালায়। এতে স্থানীয় যুবলীগ কর্মী আজগর আলী বাবুল গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। আমাকে বাঁচাতে গিয়ে এ সময় যুবলীগ কর্মী মাহবুবও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।

তবে অভিযোগ অস্বীকার করে বিদ্রোহী প্রার্থী ও সাবেক কাউন্সিলর আবদুল কাদের মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টায় নয়া দিগন্তকে বলেন, আমার কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে আবু শাহ মাজার এলাকায় গণসংযোগ করছিলাম। আমি দোতলা একটি বাসায় অবস্থান করার সময় নিচে থাকা আমার অনুসারীদের আচমকা ধাওয়া করে নজরুল ইসলাম বাহাদুরের অনুসারীরা। এরপর তারা গুলি ছুঁড়লে আমি বাসার ভিতরেই অবস্থান নেই। এ সময় একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান।

চট্টগ্রাম নগর পুলিশের (সিএমপি) উপ-কমিশনার (পশ্চিম) ফারুক-উল-হক বলেন, দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে দু’জন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে একজন মারা গেছেন। এলাকায় আমি নিজে উপস্থিত আছি, আমাদের অতিরিক্ত ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে।

জানা গেছে নগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবদুল কাদের ২০১৫ সালে ওই ওয়ার্ড থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হন। কাদের নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। অপরদিকে নজরুল ইসলাম বাহাদুর চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগের সদস্য এবং ২৮ নম্বর পাঠানটুলী ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। ২০১০-২০১৫ মেয়াদে তিনি ওয়ার্ড কাউন্সিলর ছিলেন।

Check Also

বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়িয়ে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেবহাটায় মানববন্ধন

দেবহাটা প্রতিনিধি: স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের গ্রেফতার এবং বিএনপির …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।