আবু সাইদ বিশ্বাসঃ ক্রাইমবাতা রিপোট: সাতক্ষীরা: প্রচন্ড শীতে সাতক্ষীরার জনজীবন বির্পযস্থ হয়ে পড়েছে। দিনভর সূর্যের দেখা না মেলোয় গরম কাপড়ের অভাবে খড়-কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে নিন্ম আয়ের মানুষ গুলো। উপ-মহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করায় মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। এতে সাতক্ষীরাসহ উপকূলীয় জেলা সমূহের উপর দিয়ে শৈত প্রবাহ বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
মাঘের শীতে বাঘও কাপে’। এ প্রবাদটি যেন সাতক্ষীরাতে সত্যি হতে চলেছে। সূর্যের দেখা না মেলায় গতকাল সোমবার শহরে মানুষের উপুস্থিত ছিল তুলনা মূলক কম । সন্ধার পর যেন শহর অনেকটাই ফাকা। সকালে ও শহরে কাউকে দেখা মিলছে না।
গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে তেঁতুলিয়ায় ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যেখানে খুলনা বিভাগে সর্বনিন্ম তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৯ দশমিক ৮ডিগ্রি সেলসিয়াস আর সাতক্ষীরা জেলায় তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। খুলনায় সর্বনিন্ম ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস,মংলায় ১৩দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস,যশোওে ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রের্কড করে আবহাওয়া অফিস।
শ্রীঙ্গল, পাবনা, নওগাঁ, দিনাজপুর, পঞ্চগড় ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চলের ওপর দিয়ে মৃদ্যু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। এছাড়া আগামী ৪ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে। সোমবার (১৮ জানুয়ারি) সকালে পূর্বাভাসে এ তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদফতর। আজ সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারাদেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে এবং কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে।
গত ১০ দিনে ঢান্ডা জর্নিত রোগে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালসহ বিভিন্ন চিকিৎসা কেন্দ্রে শহ¯্রাধীক শিশু ভর্তি হয়েছে । সব মিলিয়ে প্রায় ১০ হাজার লোক শীত জনিত রোগে আক্রান্ত বলে জেলা চিকিৎসা বিভাগ সূত্র জানায়। চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছে এখানকার চিকিৎসকরা।
শীতের কারণে নানা ধরনের রোগের প্রকোপ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণে মানুষ শীতজনিত রোগ ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট ও হাঁপানিতে আক্রান্ত হচ্ছে বেশী। হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার না থাকায় চিকিৎসা সেবা ব্যাহত হচেছ।
ঘন কুয়াশা আর শৈত্যপ্রবাহের কারণে বোরো ধানের বীজতলা হলুদ বর্ণ হয়ে মরে যাচ্ছে। আলুর খেতে লেটব্রাইট রোগসহ বিভিন্ন রোগ দেখা দিয়েছে। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নুরুল ইসলাম বলেন, আলু ক্ষেত লেটব্রাইট রোগ থেকে রক্ষা করতে কৃষি বিভাগ কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও সহযোগিতা প্রদান করছে।
শীতের কবল থেকে বাঁচতে খড়কুটো জালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে নিন্ম আয়ের মানুষ। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দরিদ্র ছিন্নমূল, ভাসমান ও স্বল্প আয়ের মানুষ। লেপ-তোশক ও শীতবস্ত্রের দোকানগুলোয় ক্রেতাদের ভিড় বেড়ে গেছে।
মধ্য রাত থেকে লতা পাতা জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করছে অনেক স্থানে। সরকারী এবং বেসরকারী পর্যায়ে এখনো শীর্তার্থদের মাঝে তেমন গরম কাপড় বিতরণে করা হয়নি। ভুক্ত ভোগীদের দাবী শীত নিবারণে গরম কাপড় বিতরণে বিত্তবানদের এগিয়ে আসা দরকার।