যুক্তরাষ্ট্রে চার বছরের মেয়াদ শেষে বিদায় নিচ্ছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একইসাথে নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে অভিষেক হতে যাচ্ছে জো বাইডেনের। তার সাথে শপথ নেবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমালা হ্যারিস।
হোয়াইট হাউজ ছাড়ার আগে বিদায়ী ভাষণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমরা যা করতে এসেছিলাম, সেগুলো তো করেছিই, আরো অনেক কিছু করেছি।’
ইউটিউবে পোস্ট করা একটি ভিডিও বার্তায় ট্রাম্প বলেন যে, তিনি অনেক ‘কঠিন লড়াইয়ের মোকাবেলা করেছেন, সবচেয়ে শক্ত লড়াই…কারণ আপনারা আমাকে এজন্যই নির্বাচিত করেছিলেন।’
গত নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের কাছে পরাজিত হলেও এখনো ওই ফলাফল পুরোপুরি মেনে নেননি ডোনাল্ড ট্রাম্প
তার এই ভিডিও বার্তায় তিনি উত্তরসূরির নামও উল্লেখ করেননি।
নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে বুধবার শপথ নিচ্ছেন জো বাইডেন। বাইডেন ও তার স্ত্রী জিল বাইডেন মঙ্গলবার তাদের ডেলাওয়ারের বাসভবন ছেড়ে ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওনা হয়েছেন। ২০০৮ সালে বারাক ওবামার ভাইস-প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার আগে ৩৬ বছর ধরে সেনেটর থাকার সময় এখানেই থাকতেন জো বাইডেন।
একটি আবেগী বিদায়ী বার্তায় তিনি বলেছেন, ‘যখন আমি মারা যাবো, ডেলাওয়ারের কথা আমার হৃদয়ে লেখা থাকবে।’
বুধবার তিনি হোয়াইট হাউজে যাবেন। বাংলাদেশ সময় রাতের বেলায় ক্যাপিটল ভবনের সামনের চত্বরে তার অভিষেক অনুষ্ঠান হবে।
তবে এর আগে আর কোনো অভিষেক অনুষ্ঠান এমনভাবে হয়নি। ক্যাপিটলে দাঙ্গার পর থেকে পুরো ওয়াশিংটন কড়া নিরাপত্তায় ঢেকে ফেলা হয়েছে। হাজার হাজার ন্যাশনাল গার্ড সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে এবং হোয়াইট হাউজের চারদিকে ধাতব বেড়া দেয়া হয়েছে।
সাধারণত যেখানে হাজার হাজার মানুষ অংশগ্রহণ করে, সেখানে তার শপথ গ্রহণ দেখার জন্য গুটিকয়েক মানুষকে ক্যাপিটলের সামনের ন্যাশনাল মলে আসতে দেয়া হবে।
এমনকি এই শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে থাকছেন না বিদায়ী প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। ১৮৬৯ সালে সর্বশেষ অ্যান্ড্রু জনসনের পর এই প্রথম আবার এ ধরণের ঘটনা ঘটতে যাচ্ছে। বুধবারই ট্রাম্প হোয়াইট হাউজ ছেড়ে ফ্লোরিডায় তার অবকাশ যাপন কেন্দ্রের উদ্দেশে যাত্রা করবেন।
হোয়াইট হাউজ ছাড়ার আগে বিদায়ী ভাষণে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, ‘আমরা যা করতে এসেছিলাম, সেগুলো তো করেছিই, আরো অনেক কিছু করেছি।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প আরো কী বলেছেন?
‘সহিংসতায় উস্কানি দেয়ার অভিযোগে’ অভিশংসিত হয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি দুবার অভিশংসিত হয়েছেন।
প্রথমবার অভিশংসন থেকে সেনেটে তিনি অব্যাহতি পেয়েছিলেন। কিন্তু এবার যদি তিনি সেনেটে দোষী সাব্যস্ত হন, তাহলে তিনি আর কখনো কোনো নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না।
করোনাভাইরাসে চার লাখ আমেরিকানের মৃত্যু আর দুই কোটি ৪০ লাখ মানুষ আক্রান্ত হলেও সেসব ছাড়িয়ে আলোচনায় জায়গা করে নিয়েছে ক্যাপিটল হিলের ওই দাঙ্গা।
তবে বিদায়ী ভাষণে ট্রাম্প দাবি করেছেন, তার প্রশাসন যুক্তরাষ্ট্রকে ‘বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত করেছে।’
‘আমাদের এজেন্ডা ডানপন্থী বা বামপন্থী, এটা রিপাবলিকান অথবা ডেমোক্র্যাটের বিষয় নয়, এটা পুরো জাতির জন্য, পুরো জাতির জন্য’ ট্রাম্প বলেছেন।
যখন তিনি প্রেসিডেন্টের দফতর ছাড়ছেন, তখন তার জন সমর্থনের হার ৩৪ শতাংশে নেমে এসেছে, যা কোনো বিদায়ী প্রেসিডেন্টের জন্য সর্বনিম্ন হারের একটি রেকর্ড।
সূত্র : বিবিসি