হাইকোর্ট মাজার সংলগ্ন ঈদগাহের সামনের রাস্তায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে নিহত ব্যক্তির পরিচয় পাওয়া গেছে। হামিদুল ইসলাম নামের ওই ব্যক্তি সেগুনবাগিচায় ডিস লাইনের ব্যবসা করতেন। তিনি জাসদের শাহবাগ থানার সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
রোববার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে হামিদুলের ছোট ভাই মো. ওয়াহিদুল ইসলাম তার পরিচয় শনাক্ত করেন। তাদের বাড়ি ময়মনসিংহ সদর কলেজ রোডে। বাবার নাম রফিকুল ইসলাম।
পুলিশের ধারণা, ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে হামিদুল নিহত হয়েছেন। অন্যান্য বিষয়কে গুরুত্ব দিয়েও তদন্ত করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে পুলিশ।
শনিবার রাতে হাইকোর্ট মাজার সংলগ্ন ঈদগাহ মাঠের সামনের রাস্তায় দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়েছিলেন এক ব্যক্তি। এক রিকশাচালক তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তার হাতে এবং পায়ে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন ছিল। তাৎক্ষণিকভাবে তার পরিচয় জানা যায়নি। রোববার স্বজনরা তার লাশ শনাক্ত করেন।
হামিদুলের ভাই ওয়াহিদুল জানান, চার ভাইয়ের মধ্যে সবার বড় ছিলেন হামিদুল। তিনি মেয়ে নায়না ইসলাম, ছেলে নাহিদুল ইসলাম ও স্ত্রী নার্গিস আক্তারকে নিয়ে সেগুনবাচিগা হাইস্কুলের পাশে একটি বাসায় থাকতেন। ১৯৯০ সালের পর থেকে তিনি সেগুনবাগিচা ও এর আশপাশের এলাকাতে ডিস লাইনের ব্যবসা করেন। হামিদুলের সঙ্গে কারও শত্রুতা আছে বলে আমরা শুনিনি। তার শরীরে ছুরির আঘাতের চিহ্ন দেখে আমাদের মনে হচ্ছে এটি ছিনতাইকারীর ছুরির আঘাত।
পারিবারিক সূত্র জানায়, পুরান ঢাকার সিদ্দিকবাজারে একটি ভবনে তিনটি ফ্ল্যাট রয়েছে হামিদুলের। সাদেক মিয়া নামে একজন সেখানে ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেন। শনিবার রাতে হামিদুল সাদেকের সঙ্গে হাইকোর্ট মাজারের সামনে দেখা করেন।
সাদেক মিয়া বলেন, রাত ৮টার দিকে হাইকোর্ট মাজারের সামনে দেখা করে হামিদুলকে বাসা ভাড়ার ১২ হাজার টাকা দেন। টাকা দেয়ার পরে ম্যানেজার সাদেক সিদ্দিকবাজারের দিকে ও হামিদুল তার বাসার দিকে চলে যান। রাত দেড়টার দিকে হামিদুলের ছেলে ম্যানেজারকে ফোন করে বলেন, তার বাবা বাসায় ফেরেননি এখনও। এরপর খোঁজ নিতে থাকেন সাদেকও। মধ্যরাতে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এসে তার লাশের খোঁজ পান। সাদেক মিয়া জানান, তিনি জাসদের শাহবাগ থানার সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ছিলেন।
শাহবাগ থানার ওসি মো. মামুন অর রশিদ বলেন, ধারণা করা হচ্ছে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে হামিদুল নিহত হয়েছেন। তার মানিব্যাগ এবং মোবাইল খোয়া গিয়েছে। তবে অন্য কোনো কারণে তাকে হত্যা করা হয়েছে কিনা-তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।