ঋণ করে চলছে ৪৮.৭২% সঞ্চয় ভেঙে খাচ্ছে ৩২.৪১% মানুষ করোনার অর্থনৈতিক প্রতিঘাতে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার হু হু করে বাড়ছে

মুহাম্মাদ আখতারুজ্জামান : মহামারি করোনার অর্থনৈতিক প্রতিঘাতে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার হু হু করে বাড়ছে। করোনার প্রভাবে দারিদ্র্যের মাত্রাও বেড়েছে। এতে মানুষ খাদ্যবহির্ভূত ব্যয় কমিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি অনেকে সঞ্চয় ভেঙে খেয়েছেন, ঋণ নিয়েছেন এবং খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনেছেন। আয় কমে যাওয়া ও কর্মচ্যুতির ফলে ৪৮ দশমিক ৭২ শতাংশ ক্ষেত্রে ঋণ করে আর ৩২ দশমিক ৪১ শতাংশ মানুষ সঞ্চয় ভেঙে জীবন নির্বাহ করছেন। সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) জরিপ বলছে, দেশে সার্বিক দারিদ্র্যের হার বেড়ে হয়েছে ৪২ শতাংশ। রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগে দারিদ্র্যের হার সবচেয়ে বেশি। তবে সানেমের এ তথ্য মানতে নারাজ সরকারের অর্থমন্ত্রী ও পরিকল্পনামন্ত্রী।
জানা গেছে, গত প্রায় এক বছরে করোনা মহামারির প্রাদুর্ভাবে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বাধাগ্রস্ত হওয়ায় মানুষের আয় কমে গেছে, যা দারিদ্র্যের হারকে প্রভাবিত করেছে। এ সময়ে একাধিক বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পরিচালিত জরিপে দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়ে যাওয়ার তথ্য প্রকাশিত হয়েছে। সম্প্রতি সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) একটি জরিপ তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক সেলিম রায়হান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) ২০১৬ সালের তথ্য অনুযায়ী, দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ২৪ দশামিক ৩০ শতাংশ। ২০১৮ সালে জিইডি সানেমের গবেষণায় দেখা গেছে, দারিদ্র্যের হার ২১ দশমিক ৬০ শতাংশে নেমেছিল। কিন্তু সানেমের ২০২০ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরের গবেষণা বলছে, দারিদ্রের হার বেড়ে ৪২ শতাংশ হয়েছে।
বিবিএস পরিচালিত হাউজহোল্ড ইনকাম অ্যান্ড এক্সপেন্ডিচার সার্ভে (হায়েস) ২০১৬-এর চূড়ান্ত রিপোর্টে (মে ২০১৯) দাঁড়িয়েছিল ২১ দশমিক ৮ শতাংশে। ২০১৭ সালের অক্টোবরে প্রকাশিত হায়েসের প্রাথমিক রিপোর্টে দারিদ্র্যের হার দেখানো হয়েছিল ২৪ দশমিক ৩ শতাংশ। সানেমের সর্বশেষ ‘দারিদ্র্য ও জীবিকার ওপর কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে সদ্য সমাপ্ত ২০২০ সালের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে দেশজুড়ে খানা পর্যায়ে পরিচালিত জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। জরিপের ফলাফল অনুযায়ী, করোনার প্রভাবে দারিদ্র্যের হার ও মাত্রা দুটোই বেড়েছে। এতে মানুষ খাদ্যবহির্ভূত ব্যয় কমিয়ে দিয়েছে। পাশাপাশি অনেকে সঞ্চয় ভেঙে খেয়েছেন, ঋণ নিয়েছেন এবং খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এনেছেন। তবে জরিপে উঠে আসা সার্বিক দারিদ্র্য হারের তুলনায় রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগে দারিদ্র্যের হার বেশি। রংপুর, রাজশাহী ও ময়মনসিংহ বিভাগে দারিদ্র্যের হার ছিল রংপুরে ৫৭ দশমিক ৫ শতাংশ, রাজশাহীতে ৫৫ দশমিক ৫ শতাংশ এবং ময়মনসিংহ ৪৬ দশমিক ৫ শতাংশ। এর আগে বিবিএস পরিচালিত ২০১৬ সালের হায়েসের চূড়ান্ত রিপোর্টেও এ তিনটি বিভাগে দারিদ্র্যের হার ছিল সবচেয়ে বেশি। তখন রংপুর, ময়মনসিংহ ও রাজশাহী বিভাগে দারিদ্র্যের হার ছিল যথাক্রমে ৪৭ দশমিক ২, ৩২ দশমিক ৮ এবং ২৮ দশমিক ৯ শতাংশ।
জানা গেছে, সানেমের জরিপ প্রকাশিত হওয়ার আগে গত বছর একাধিক বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের জরিপে উঠে আসে দেশে উচ্চ দারিদ্র্য হারের তথ্য। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এবং ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্নেন্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (বি আইজিডি) জুন মাসের এক যৌথ গবেষণায় বলা হয়, দেশে দারিদ্র্য বেড়ে ৪৩ শতাংশ হয়েছে। গত বছরের জুনে প্রকাশিত সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণার ফলাফল অনুযায়ী, করোনার কারণে বেড়েছে কর্মহীন মানুষের সংখ্যা, আয় কমেছে মানুষের। ফলে দারিদ্র্যের হার বেড়ে ৩৫ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। গত বছর আগস্ট মাসে প্রকাশিত আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) ও অস্ট্রেলিয়ার ওয়াল্টার এলিজা হল ইনস্টিটিউটের এক যৌথ গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির সংক্রমণ ঠেকাতে মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে ৩০ মে পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশ সরকার ঘোষিত ছুটিতে ৯৬ শতাংশ পরিবারের গড় মাসিক উপার্জন হ্রাস পায়; ৯১ শতাংশ নিজেদের অর্থনৈতিকভাবে অস্থিতিশীল মনে করে এবং ৪৭ শতাংশ পরিবারের আয় দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যায়। পরিবারগুলোর ৭০ শতাংশ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। ১৫ শতাংশ খাদ্য সংকটে ভোগে বা কোনো একবেলা না খেয়ে থাকে। আর বিবিএসের গত সেপ্টেম্বর মাসের এক জরিপ অনুযায়ী, করোনা মহামারির প্রভাবে মানুষের মাসিক আয় ২০ দশমিক ২৪ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। মহামারিতে আয় কমে যাওয়ায় খাবার গ্রহণের পরিমাণ কমেছে ৫২ শতাংশের মতো পরিবারের।
হায়েস-২০১০ অনুযায়ী, দেশে ২০০৫ সালের ৪০ শতাংশ দারিদ্র্য হার হ্রাস পেয়ে ২০১০ সালে দাঁড়ায় ৩১ দশমিক ৫ শতাংশে। এতে প্রতিবছর দারিদ্র্য হার হ্রাস পায় ১ দশমিক ৭ শতাংশ হারে। হায়েস-২০১৬ মোতাবেক ২০১০ সাল-পরবর্তী বছরগুলোয় প্রতিবছর দারিদ্র্য হার হ্রাস পায় ১ দশমিক ২ শতাংশ হারে। দারিদ্র্য হার হ্রাসের শ্লথ গতি পরোক্ষভাবে দারিদ্র্য হার বৃদ্ধি ঘটায়।
যেসব কারণে ২০১০ সালের পর দারিদ্র্য হ্রাসের গতি শ্লথ হয়ে পড়ে এবং করোনাকালে দারিদ্র্য হার বৃদ্ধি পায় সেগুলোর মধ্যে রয়েছে কৃষি খাতে প্রবৃদ্ধি হার হ্রাস। সরকারি তথ্যে দেখা যায়, ২০০৯-১০ অর্থবছরে কৃষিখাতের ৬ দশমিক ৫৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হার পরবর্তী প্রায় এক দশকে গড়ে ৩ দশমিক ৮ শতাংশের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে (অর্থমন্ত্রীর বাজেট বক্তৃতা ২০১৮-১৯)। ২০১৯-২০ অর্থবছরে কৃষিতে প্রবৃদ্ধির হার সরকারিভাবে এখনো প্রকাশ করা হয়নি।  গত এক দশকে স্থূল দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) লক্ষণীয় প্রবৃদ্ধি ঘটলেও তা সাধারণ মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে তেমন কাজে আসছে না। দেশে সম্পদ অতিমাত্রায় কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়েছে। দ্রুত ধনীদের শীর্ষ দেশের তালিকায় উঠে এসেছে বাংলাদেশ। গত এক দশকে শুধু দারিদ্র্য হ্রাসের গতি মন্থর হয়নি, বেড়েছে দারিদ্র্য ঝুঁকিতে থাকা মানুষের সংখ্যা। বিবিএসের মতে, ২০০০ সালে যেখানে দেশে দারিদ্র্যের ঝুঁকিতে থাকা মানুষ ছিল ৩৫ শতাংশ, সেখানে ২০১৬ সালে তা বেড়ে ৫০ শতাংশ ছাড়িয়ে যায়। করোনাকালেও ধনী-গরিবের আয়বৈষম্য বেড়েছে।  আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ‘এশিয়া-প্যাসিফিক এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল আউটলুক-২০১৮’ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশে সার্বিক বেকারত্বের হার ২০১০ সালের ৩ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০১৭ সালে ৪ দশমিক ৪ শতাংশে এবং শ্রমশক্তির শিরোমণি যুবকদের বেকারত্ব হার ২০১০ সালের ৬ দশমিক ৪ শতাংশ থেকে বেড়ে ২০১৭ সালে ১২ দশমিক ৮ শতাংশে দাঁড়ায়। বেকারত্বের এ উচ্চহার অব্যাহত রয়েছে। করোনা মহামারির সংক্রমণ রোধে গত বছর মার্চের শেষ সপ্তাহ থেকে মে মাসের শেষ পর্যন্ত সময়ে লকডাউনের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে দেশে, বিশেষ করে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে বেকারত্বের হারে উল্লম্ফন ঘটে। গত ১ মে মাসের এক রিপোর্টে বলা হয়, করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে শুধু পরিবহণ খাতের ৫০ লাখ শ্রমিক ক্ষতিগ্রস্ত হন। হোটেল, রেস্তোরাঁ, টুরিজমসহ সেবা খাতের বহু কর্মী বেকার হয়ে পড়ে। করোনা মহামারির কারণে ২০২০ সালে শুধু তৈরি পোশাক শিল্পে সাড়ে তিন লাখের বেশি কর্মসংস্থান হ্রাস পায়। তা ছাড়া বৈশ্বিক করোনার কারণে বহুসংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিক চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরে এসে বেকারত্ব সমস্যাকে আরও জটিল করে তুলেছে। বেকারত্বের উল্লম্ফনে দারিদ্র্যের হার বৃদ্ধি পায়। কারণ, অর্থনীতির সংজ্ঞা মোতাবেক বেকারত্ব ও দারিদ্র্য একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ জানান অর্থনীতিবিদরা।
দারিদ্রের সংখ্যা না কমার কারণ হিসাবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চলতি অর্থবছরে (২০২০-২১) সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বরাদ্দের পরিমাণ ধরা হয়েছে ৯৫ হাজার ৫৭৪ কোটি টাকা, যা বাজেটের ১৬ দশমিক ৮৩ শতাংশ এবং জিডিপির ৩ দশমিক ০১ শতাংশ। গত অর্থবছরে (২০১৯-২০) সংশোধিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ ছিল ৮১ হাজার ৮৬৫ কোটি টাকা। তবে সমস্যা হলো বাজেটে সামাজিক নিরাপত্তা খাতে যেভাবে বরাদ্দ বেড়েছে, ভাতাভোগীর সংখ্যা বাড়ছে তার চেয়ে বেশি। চলতি অর্থবছরও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। এতে ভাতাভোগীদের অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে না এবং তারা ‘দারিদ্র্য চক্র’ থেকে বের হয়ে আসতে পারছে না। ফলে মন্থর হয়ে পড়ছে দারিদ্র্য কমার হার। করোনাকালে আয় হ্রাসের কারণে দারিদ্র্যসীমার সামান্য উপরে অবস্থানকারী অনেকে দারিদ্র্যের কাতারে এসে দাঁড়িয়েছে, যারা এ কর্মসূচির আওতায় আসেনি। ফলে বেড়ে যাচ্ছে দারিদ্র্যের হার।
সানেমের সর্বশেষ জরিপে গেল বছরের নভেম্বর ও ডিসেম্বরে দেশজুড়ে খানা পর্যায়ে টেলিফোনে পরিচালিত এই জরিপের আওতায় ছিল দেশের ৬৪ জেলায় ৫ হাজার ৫৭৭টি খানা। সানেম বলছে, যে দুই মাসে জরিপ চলেছে তখন দেশে সার্বিক দারিদ্র্যের হার ছিল ৪২ শতাংশ। সরকারের হিসাব অনুযায়ী এক বছর আগে ২০১৯ এর ডিসেম্বরে সার্বিকভাবে দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ২০ দশমিক ৫ শতাংশ।
সানেমের ২০২০ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরের গবেষণা বলছে, বাংলাদেশের গ্রামে দারিদ্র্যের হার বেড়ে হয়েছে ৪৫ দশমিক ৩০ শতাংশ। একইভাবে শহরে দারিদ্র্যের হার ২০১৬ সালে ১৮ দশমিক ১৯ শতাংশ থেকে বেড়ে যথাক্রমে ২০১৮ সালে ১৬ দশমিক ৩০ শতাংশ ও ২০২০ সালে তা বেড়ে ৩৫ দশমিক ৪০ শতাংশ হয়েছে বলে জানান তিনি। বাংলাদেশের অতি দারিদ্রের হার ২০১৮ সালের ৯ দশমিক ৪০ শতাংশ থেকে ২০২০ সালে বেড়ে হয়েছে ২৮ দশমিক ৫০ শতাংশ। ফলে গরিব হয়েছে আরো গরিব, ধনী হয়েছে আরো ধনী।
দারিদ্র্যের হারের সঙ্গে আয় বৈষম্যও বেড়েছে জানিয়ে সেলিম রায়হান বলেন, মহামারী শুরুর আগে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে দেশের দরিদ্রতম ২০ শতাংশ মানুষ দেশের মোট আয়ের ৭ দশমিক ৭২ শতাংশ পেত। আর দেশের মোট আয়ের ১৫ দশমিক ৮২ শতাংশ আয় করত দেশের ধনী ৫ শতাংশ মানুষ। কিন্তু করোনার প্রভাবে সেই অবস্থা পাল্টেছে। এখন দেশের মোট আয়ের ১৫ দশমিক ৮৬ শতাংশ ধনী ৫ শতাংশের দখলে। দেশের মোট আয়ের ৬ দশমিক ৪৭ শতাংশ দরিদ্রতম ২০ শতাংশের দখলে। এই গবেষণার সময়কাল ২০২০ সালের মার্চ থেকে নভেম্বর।
তবে সানেমের গবেষণা তথ্যের সাথে একমত নন বর্তমান সরকারের অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। অর্থমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস মহামারীতে বাংলাদেশের দারিদ্র্যের হার বেড়ে ৪২ শতাংশ হওয়ার যে তথ্য বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সানেম দিয়েছে, তা ‘বাস্তবতা থেকে বিচ্যুত’। বলে মন্তব্য করেছেন আ হ ম মুস্তফা কামাল। মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে প্রশোত্তর পর্বে সানেমের সাম্প্রতিক ওই গবেষণার প্রসঙ্গ ধরে প্রশ্ন উত্তর দিতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, টেলিফোনের মাধ্যমে ৫০০/৭০০/৩০০ মানুষের সঙ্গে কথা বললে গবেষণা হয় না। তারা যদি মেহেরবানি করে বলতে পারেন যে, কয়টা গ্রামে গিয়েছেন, কয়টা মানুষের সঙ্গে দেখা করেছেন…পুরোটাই অযৌক্তিক, রিয়েল পজিশন থেকে ডেসটর্টেড। আমি এসব নিয়ে কথা বলতে চাই না। সেই প্রতিবেদনের সমালোচনা করে অর্থমন্ত্রী বলেন, কী আজব কথাবার্তা বলে! আপনারা গ্রামে যাচ্ছেন? শহরে থাকছেন। আপনাদের ধারণা কী? গরীবের হার বেড়ে গেছে? কী আজিব কথাবার্তা বলে এসব! করোনার কারণে যদি কেউ না খেতে থাকে, চাকরি চলে যায়, তাহলে সেটা আপানারা বলতে পারেন। কিন্তু আমরা তো চাকরি ফেরত দিয়েছি। না খেয়ে একজনও নেই। আপনারা যদি বলতে পারেন যে কেউ না খেয়ে আছে সেটা আমরা দেখবো।
পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, দারিদ্র্যের হার বেড়ে ৪২ শতাংশ হয়েছে বলে সানেম যে তথ্য দিয়েছে, তা কোনোভাবেই সঠিক নয়। এ দাবি প্রত্যাখ্যান করে পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, প্রণোদনা প্যাকেজসহ সরকারের নানা পদক্ষেপের কারণে দেশের অর্থনীতি প্রায় আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে। তিনি বলেন, আমরা পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি ‘ধারণা জরিপ’ করেছি। তাতে দেখা গেছে, দেশে বর্তমানে দারিদ্র্যের হার ২২ থেকে ২৩ শতাংশের মধ্যে।

Check Also

কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ দেবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন

কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সচিবালয় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।