সাতক্ষীরা সংবাদদাতা: সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভা নির্বাচনে নজিরবিহীন ভোট কারচুপি, এজেন্টদের কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া, মেয়ার পদের ব্যালট পেপার না দেয়া, ভোটারদের কাছ থেকে ব্যালট কেড়ে নিয়ে নৌকা প্রতীকে সিল মেরে বাক্সে ভরা ও নৌকা প্রতীকে সিল মারা ব্যালট সরবরাহের অভিযোগে বিএনপির মেয়র প্রার্থী শরিফুজ্জামান তুহিন ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী নার্গিস সুলতানা ভোট বজন করেন। এছাড়া ৩নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী আসাদ খান,রফিকুল ইসলাম ও মোজাহিদুল ইসলাম এবং ২নং কাউন্সিলর প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান তুহিন, আব্দুল হাকিম ও কামরুজ্জামান বাবু ও ভোট বর্জন করেন। ভোটে গ্রহণে কারচুপির অভিযোগ এনে বেশিরভাগ কাউন্সিলর প্রাথী ভোট বর্জন করেন। এদের মধ্যে বিএনপির মেয়র প্রার্থী শরিফুজ্জামান তুহিন ও স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী নার্গিস সুলতানা তাদের নিজ কার্যালয়ে পৃথক সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন। সকাল সাড়ে ১০ টায় বিএনপির প্রার্থী শেখ শরিফুজ্জামান তুহিন অভিযোগ করে বলেন, তিনি ৩ ও ৮ নং কেন্দ্রে প্রবেশ করতে গেলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাকে বাধা দেয়। এমনকি অজ্ঞাতরা তাকে লাঞ্ছিত করেছে। তিনি ভোট কারচুপির ব্যাপক অভিযোগ তুলে বলেন কোন কেন্দ্রে তার এজেন্টদের প্রবেশ করতে দেয়নি। বিএনপির অপর বিদ্রোহী প্রার্থী নারগিছ সুলতানা ভোটে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ তুলে বলেন, কোন কেন্দ্রে তার এজেন্ট প্রবেশ করতে পারেনি। ফলে ভোট কারচুপির অভিযোগে ১১টার দিকে তিনিও নিজ বাসভবনে ভোট বর্জনের ঘোষনা দেন।
তবে জেলা নির্বাচন ও রিটানিং কর্মকর্তা নাজমুল কবীর জানান, তার কাছে ভোটে অনিয়মের তেমন কোন গুরুতর অভিযোগ আসেনি বা কোন প্রার্থী তার কাছে লিখিত ভাবে জানাইনি। নির্বাচনে পৌর এলাকার ৯টি কেন্দ্রে মোট ভোটার ২১ হাজার ২৮০জন।
এদিকে ভোটের দুদিন আগে আওয়ামীলীগের স্বতন্ত্র প্রাথীকে সহযোগীতার অভিযোগে কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টুকে তুলে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ। এছাড়া স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক সাজেদুর রহমান খান মজনু চৌধুরীর বাড়ি ঘেরাও করে রাখে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ । যে কারণে বাধ্য হয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান আওয়ামীলীগরে স্বতন্ত্র প্রার্থী। স্বতন্ত্র প্রার্থী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক আহ্বায়ক সাজেদুর রহমান খান চৌধুরী মজনুর সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, মজনু চৌধুরী বলেন, এর আগে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় জেলা আওয়ামী লীগের সদ্য নির্বাচিত সদস্য পদ থেকে বহিষ্কারের শিকার হন। তারপরও তিনি মোবাইল প্রতীক নিয়ে নির্বাচনী প্রচার চালিয়ে যাচ্ছিলেন।অভিযোগ করে তিনি বলেন, বৃহস্পতিবার রাতে কলারোয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম লাল্টুকে গোয়েন্দা পুলিশ পরিচয়ে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। তাকে চাপ দিয়ে বলা হয় ‘মজনু চৌধুরী তার প্রার্র্থীতা প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত তাকে আটকে রাখা হবে’।তিনি আরও বলেন, একদল সাদা পোশাকধারী পুলিশ একই রাতে মজনু চৌধুরীর বাড়ি ঘেরাও করে রাখে এবং চাপ সৃষ্টি করে বলা হয় তাকে প্রত্যাহার করতে হবে, অন্যথায় তাকেও ধরে নিয়ে যাওয়া হবে।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ পরিদর্শক ইয়াসিন আলী বলেন, এটা অপপ্রচার মাত্র। উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টুকে তুলে নেওয়া এবং মজনু চৌধুরীর বাড়ি ঘেরাও করার সঙ্গে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ জড়িত নয়। ঘটনাটি আওয়ামী লীগের দলীয় বিষয় বলে মন্তব্য করেন তিনি।এ প্রসঙ্গে জানতে চাওয়া হলে জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শেখ হারুনার রশীদ বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম আওয়ামী লীগের দলীয় হেফাজতে রয়েছেন। তিনি সুস্থ আছেন। যে কোনো সময় তিনি বাড়ি ফিরে যাবেন।
Check Also
যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার
নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …