মিয়ানমারে শীর্ষ নেতাদের আটকের পর বিরাজমান পরিস্থিতি বাংলাদেশ পর্যবেক্ষণ করছে বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশটিতে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখল ও রাষ্ট্রীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে এ কথা বলেন তিনি।
সোমবার সকালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী টেলিফোনে বলেন, মিয়ানমারের পরিস্থিতি আমরা পর্যবেক্ষণ করছি। একটু পরেই মিয়ানমারের অবস্থা নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফ করা হবে।
মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্ট, ক্ষমতাসীন দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির নেত্রী অং সান সু চিসহ দেশটির শীর্ষ নেতাদের সোমবার ভোরে আটক করে সেদেশের সেনাবাহিনী। এক বছরের জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে সেনাবাহিনী।
সামরিক বাহিনী পরিচালিত টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভিডিও ভাষণে বলা হয়েছে, সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান সিনিয়র জেনারেল মিং অং হ্লাইংয়ের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হয়েছে। তিনি এক বছর ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবেন। আর সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান ও ভাইস প্রেসিডেন্ট মিন্ট সুয়েকে ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
দেশটির বেসামরিক সরকার ও প্রভাবশালী সামরিক বাহিনীর মধ্যে কয়েক দিন ধরে দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনার পরিপ্রেক্ষিতে এসব ঘটনা ঘটল।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অভ্যুত্থানের পর মিয়ানমার সেনাবাহিনী জানিয়েছে, দেশটি এখন তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
২০২০ সালের ৮ নভেম্বরে নির্বাচনের পরে বেসামরিক সরকার এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে টানাপোড়ের মধ্যেই এই অভ্যুত্থানটি ঘটল।
নভেম্বরের জাতীয় নির্বাচনে সু চির দল এনএলডি ভূমিধস জয় পায়। পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য যেখানে ৩২২ আসনই যথেষ্ট, সেখানে এনএলডি পেয়েছে ৩৪৬ আসন।
কিন্তু সেনাবাহিনী সমর্থিত দল ইউনিয়ন সলিডারিটি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (ইউএসডিপি) ভোটে প্রতারণার অভিযোগ তুলে ফল মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানায়। দলটি নতুন করে নির্বাচন আয়োজনের দাবি তোলে। তার পর থেকেই দেশটিতে ফের সামরিক অভ্যুত্থানের আশঙ্কা করা হচ্ছিল।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, নভেম্বরের নির্বাচনের ধারাবাহিকতায় সোমবার দেশটিতে নতুন পার্লামেন্টের অধিবেশন বসার কথা ছিল। কিন্তু সেনাবাহিনী এই অধিবেশন স্থগিতের দাবি জানিয়েছিল। কিন্তু ক্ষমতাসীন এনএলডি পার্লামেন্ট অধিবেশন শুরু করার বিষয়ে প্রত্যয়ী ছিল। এ কারণে ভোরের আলো দেখার আগেই নেতাদের আটক করা হলো।