কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক মিডিয়া আল জাজিরা টেলিভিশন ও তাদের ওয়েবসাইটে প্রচারিত বাংলাদেশ বিষয়ক একটি রিপোর্ট নিয়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সোমবার ওই রিপোর্টটি প্রকাশের পরপরই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কড়া প্রতিবাদ জানায়। পরে সেনাসদর দপ্তরের তরফে মঙ্গলবার প্রতিবাদ জানানো হয়। গতকাল ওই প্রতিবেদনের বিষয়ে কথা বলেছেন অন্তত চারজন মন্ত্রী। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, ভুল তথ্যসহ রিপোর্ট প্রকাশ করায় সরকার আল জাজিরার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে। ভুল তথ্য দিয়ে সংবাদ প্রকাশ করায় আল জাজিরা বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ওদিকে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রতিবেদনটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলক ও অপপ্রচারের নোংরা বহিঃপ্রকাশ। লন্ডনে বসে যারা সরকারের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে তাদের সঙ্গে ওই প্রতিবেদন প্রকাশ সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশ থাকতে পারে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আল জাজিরা কর্তৃপক্ষকে এ ধরনের সংবাদ প্রকাশ থেকে বিরত থাকারও আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক। ওদিকে পৃথক অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিদেশি মিডিয়ার স্লট ভাড়া করে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রকারীরা এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাদের উদ্দেশ্য দেশবাসীর কাছে পরিষ্কার। তিনি বলেন, আল জাজিরায় যে প্রতিবেদন এসেছে তা দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল আল জাজিরার প্রতিবেদনকে হলুদ সাংবাদিকতা উল্লেখ করে বলেন, এই প্রতিবেদনটি তৈরি ও প্রকাশের ক্ষেত্রে সাংবাদিকতার নিয়ম মানা হয়নি।
আল জাজিরার প্রতিবেদন উদ্দেশ্যমূলক-ওবায়দুল কাদের: আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আল জাজিরার প্রতিবেদন উদ্দেশ্যমূলক ও অপপ্রচারের নোংরা বহিঃপ্রকাশ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যম স্বাধীনভাবে কাজ করছে, সরকারের সমালোচনাও করছে, দেশের এত ‘ভাইব্রেন্ট এবং অ্যাক্টিভ মিডিয়া’ যেখানে কোনো ধরনের তথ্য পায়নি সেখানে আল জাজিরা টেলিভিশন শেখ হাসিনাকে নিয়ে অসত্য তথ্য প্রচার অত্যন্ত নিন্দনীয়। গতকাল সংসদ ভবন এলাকায় তার সরকারি বাসভবনে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন। লন্ডনে বসে যারা দেশবিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং উস্কানি দিচ্ছে, সেই অশুভ চক্রের যোগসাজশ রয়েছে উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণ মনে করেন এ প্রতিবেদন লন্ডনভিত্তিক অংশ। এর কোনো সত্যতা নেই। শেখ হাসিনা সরকার অন্যায়, অনিয়ম আর দুর্নীতির বিরুদ্ধে অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে রয়েছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ইতিমধ্যে সরকার শুদ্ধি অভিযানের মাধ্যমে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ‘শূন্য সহিষ্ণুতা’ নীতি গ্রহণ করেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের আইন নিজস্ব গতিতে এবং স্বাধীনভাবে চলছে। দুর্নীতি দমন কমিশন নিজস্ব আইনগত ক্ষমতা ও কর্তৃত্ব অনুযায়ী চাপমুক্ত হয়ে কাজ করছে। কোনো ব্যক্তি বিশেষের দায়কে সরকার প্রধানের সঙ্গে যুক্ত করা সাংবাদিকতার নীতিবোধকে প্রশ্নবিদ্ধ করে-এটি সঠিক সাংবাদিকতা নয়। ’৭৫ পরবর্তী সময় দেশে সবচেয়ে সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তার সাহসী ও সুদক্ষ নেতৃত্ব বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত উল্লেখ করে ওবায়দুল কাদের বলেন, দেশ-বিদেশে বসে দেশ এবং সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও অপপ্রচার করা কোনো কাজে আসবে না বরং বুমেরাং হবে। তিনি বলেন, জনগণ শেখ হাসিনার পাশে রয়েছে, বিগত সময় এত অপপ্রচারের পরেও চলমান পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের বিপুল বিজয় তারই প্রমাণ বলেও দৃঢ়তার সঙ্গে জানান ওবায়দুল কাদের। সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী আল জাজিরা টেলিভিশন কর্তৃপক্ষকে দেশবিরোধী অপশক্তির এজেন্ডা বাস্তবায়নে সহযোগী না হয়ে এধরনের উদ্দেশ্যমূলক, বিভ্রান্তিকর এবং একপেশে প্রতিবেদন বন্ধের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, যারা দেশের স্বাধীনতা ও দেশের উন্নয়ন, অর্জন এবং অগ্রগতিকে এখনো মেনে নিতে পারেনি তারাই এই প্রতিবেদনের কৌশলী ষড়যন্ত্রের ধারাবাহিকতায় লিপ্ত।
দেশবিরোধী ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়-তথ্যমন্ত্রী: তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বিদেশি মিডিয়ার স্লট ভাড়া করে একটি চিহ্নিত চক্র দেশবিরোধী অপপ্রচার চালাচ্ছে। তিনি এদের বিরুদ্ধে সজাগ ও সতর্ক থাকতে দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে মুজিববর্ষ উপলক্ষে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পরিষদ আয়োজিত ‘একুশের চেতনায় বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি প্রধান অতিথির বক্তৃতায় একথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, যারা যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচানোর চেষ্টা করেছে, মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে যারা প্রশ্ন তুলেছিল, স্বনামধন্য একজন আইনজীবীর মেয়ের ইহুদি জামাতাসহ স্বাধীনতাবিরোধী জামাত চক্র, যারা আজ দেশের মানুষের কাছে নিন্দিত, ঘৃণিত, ধিকৃত ও বর্জিত, তারা এখন তাদের অর্থ-বিত্ত দিয়ে মানুষ ভাড়া করে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়ার স্লট ভাড়া করে, মানুষ ভাড়া করে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। সামপ্রতিক সময়ে বিভিন্ন মিডিয়ায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু প্রতিবেদন সেই অপচেষ্টারই প্রতিফলন মাত্র। কিছু ভুল ও অসত্য তথ্য কাট-পেস্ট করে যে ধরনের প্রতিবেদন প্রচার করা হচ্ছে, সেটি আসলে দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কিছুই নয়।
অতীতে যেমন বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছিল, এখনো দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এগুলো করা হচ্ছে উল্লেখ করে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, এই ধরনের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে দেশবাসীকে সজাগ থাকতে হবে। কারণ দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, এটি অনেকের পছন্দ হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ সঠিকভাবে করোনা মোকাবিলায় সমর্থ হয়েছে, এটি অনেকের গাত্রদাহ, এজন্যই তারা এই ঘৃণ্য নতুন খেলায় মেতে উঠেছে। কিন্তু এই খেলা খেলে কোনো লাভ হবে না। বিশ্বব্যাংক এক সময় বড় একটি দেশের সহায়তা নিয়ে এদেশে পদ্মা সেতুর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছিল, সেটি ভেস্তে গেছে। এখনো যেসব ষড়যন্ত্র হচ্ছে, সেগুলোও ভেস্তে যাবে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ও চাঁদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য নূরুল আমিন রুহুল, আওয়ামী লীগ নেতা বলরাম পোদ্দার ও এমএ করিম বিশেষ অতিথি হিসেবে সভায় বক্তব্য রাখেন। স্বাধীনতা পরিষদের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার জাকির আহম্মদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাত হোসেন টয়েলের সঞ্চালনায় সংগঠনের সভাপতি জিন্নাত আলী জিন্নাহ, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক অরুণ সরকার রানা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
তথ্যভিত্তিক নয়, হলুদ সাংবাদিকতা -স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী: কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক টেলিভিশন চ্যানেল আল জাজিরা সমপ্রচারিত ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার মেন’ শিরোনামের প্রতিবেদনটি সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, এটি তথ্যভিত্তিক নয়, হলুদ সাংবাদিকতা। বুধবার রাজধানীর হাতিরঝিল এলাকায় পুলিশ প্লাজা কনকর্ডে নৌ-পুলিশের বঙ্গবন্ধু কর্নার উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এই মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, আইএসপিআর ওই প্রতিবেদনের জবাব দিয়েছেন। প্রতিবেদনটি তথ্যভিত্তিক নয়। এটা হলুদ সাংবাদিকতা। এগুলো সাংবাদিকতার নর্মসের ভেতরে পড়ে না। তিনি আরো বলেন, আমি মনে করি, যারা এটা করেছে তাদের একটি উদ্দেশ্য ছিল। সে উদ্দেশ্য নিয়ে তারা এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছেন। আমরা মনে করি এগুলো ভিত্তিহীন এবং দেশবিরোধী একটি ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ।
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা দখলের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমার কী করছে সেটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। মিয়ানমারে আগেও সামরিক শাসন ছিল। পরে সরকার বদলালেও সামরিক নিয়ন্ত্রণ একটা ছিল, সেটাও আমরা দেখেছি। সেই শাসকদের কতখানি ক্ষমতা ছিল সেটা আমাদের বোধগম্য ছিল না। সরকার বিষয়টি সতর্কতার সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছে। সীমান্তে কড়া পাহারা দেয়া হচ্ছে। সীমান্তরক্ষীরা সতর্ক রয়েছে।
আইনি ব্যবস্থার বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে: আল জাজিরার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি খতিয়ে দেখছে বাংলাদেশ। এ নিয়ে সরকারের প্রতিনিধি, রাষ্ট্রদূত এবং আন্তর্জাতিক আইনজীবীদের মধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন গতকাল নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপে বলেন, মিথ্যা তথ্য প্রচারের জন্য আল জাজিরার বিরুদ্ধে আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করবো। দেখি কীভাবে কী করা যায়। যেসব ভুল তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে সে বিষয়ে নিশ্চয়ই আমরা আইনি ব্যবস্থা নিতে পারবো। গত ১লা ফেব্রুয়ারি কাতারভিত্তিক গণমাধ্যম আল জাজিরা ‘অল দ্য প্রাইম মিনিস্টার’স মেন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় প্রতিবেদনটি মিথ্যা, সম্মানহানিকর এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত প্রচারণা বলে অভিহিত করে তা প্রত্যাখ্যান করে। আল জাজিরার প্রতিবেদনকে ‘ফেক নিউজ’ আখ্যা দিয়ে এটি প্রচারের জন্য তাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত মন্তব্য করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল বলেন, আল জাজিরা আরো কয়েকটি পর্ব দেখাবে বলে শুনেছি। সরকার আইনি পদক্ষেপের কথা ভাবলেও আল জাজিরার প্রতিবেদন আটকে দেয়ার কোনো চিন্তা নেই জানিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে কেউ চাইলেই আল জাজিরা দেখতে পারে না। এটি দেখতে হলে অপারেটরদের আলাদাভাবে পয়সা দিয়ে কানেকশন নিতে হয়। অনেক দেশে তারা সম্প্রচার করতে পারে না। কিন্তু বাংলাদেশে তাদের সমপ্রচার বন্ধ করার কোনো পরিকল্পনা আমাদের নেই। কারণ বিশ্ব উন্মুক্ত। তবে আমরা আশা করবো প্রতিবেদন প্রচারে আল জাজিরা আরো দায়িত্বশীল হবে। অনেকের ধারণা, কেউ তাদের টাকা দিয়েছে এবং এজন্য তারা এই প্রোগ্রাম করেছে। আল-জাজিরার প্রতিবেদনের প্রসঙ্গ তুলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিজে থেকে বলেন, ওই প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রীর একটি অনুষ্ঠানের ছবি দেখানো হয়েছে। তারা বলেছে প্রধানমন্ত্রীর পেছনে দাঁড়ানো দুইজন ভদ্রলোক নাকি প্রধানমন্ত্রীর দেহরক্ষী। এখন তো প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তা দেয় এসএসএফ। তিনি যখন বিরোধী দলের নেতা ছিলেন, তখন তার কোনো দেহরক্ষী ছিল না। দলের নেতাকর্মীরাই ওনার দেহরক্ষী। তিনি কোনোকালেই কাউকে দেহরক্ষী হিসেবে নিয়োগ দেননি। কারও পেছনে কেউ দাঁড়িয়ে থাকলেই দেহরক্ষী হয়ে যায় না, এটি ডাহা মিথ্যা। আল জাজিরার মতো নামকরা মিডিয়া কীভাবে মিথ্যা এই রিপোর্ট প্রচার করলো? সেই প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার সময়ও দলের লোকেরাই শেখ হাসিনাকে (তৎকালীন বিরোধী দলের নেতা) রক্ষা করেছিলেন। পয়সা দিয়ে রাখা কোনো দেহরক্ষী নয়। এ সময় সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত, সাবের হোসেন চৌধুরী এবং মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার নাম উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তারা ছিলেন সেখানে। মিথ্যা ও ভুল তথ্যের ওপর ভিত্তি করে এ ধরনের প্রতিবেদন প্রচার করে আল জাজিরা বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে বলেও মন্তব্য করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী। অপর প্রশ্নে আল জাজিরার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ হয়নি জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, লন্ডন বা অন্য কোথাও বসে কাজ করা চরমপন্থি ও তাদের মিত্রদের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে তারা যেটি প্রচার করেছে আমরা তার নিন্দা জানিয়েছি। বাংলাদেশ সরকার অসাধারণ আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং অগ্রগতির পথে এগিয়ে চলছে। অথচ, আল জাজিরা এমন গণতান্ত্রিক দেশকে অস্থিতিশীল করার লক্ষ্যে এটি প্রচার করেছে। তারা বেছে বেছে মুসলিম দেশগুলোর বিরুদ্ধে এমন অপপ্রচার চালায় দাবি করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আল জাজিরা বাংলাদেশের ভালো দেখতে পারে না। বাংলাদেশকে পছন্দ করে না। এটা তাদের ঈর্ষা। শুধু বাংলাদেশ নয়, মুসলমান দেশগুলোর যত দোষ খুঁজে বের করা তাদের কাজ। দোহাভিত্তিক ওই টিভি চ্যানেলের টাকা দেয় কাতার। তবে প্রোগ্রামগুলো বৃটিশরা ডিজাইন করে দাবি করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের একজন জামাই (ডা. কামাল হোসেনের জামাতা ডেভিড বার্গম্যান) ওদের সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়েছেন। এটি খুব দুঃখজনক যে, তারা আমাদের ভালো জিনিসের বিপক্ষে আছেন।