সামনে বিএনপি ক্ষমতায় আসবে, এটা মাথায় রাখেন। বিএনপির ব্যর্থতা মনে করার কিছু নেই। বিএনপিকে ২০০৬ বা ২০০৭ এ একটি ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে সরানো হয়েছিল, কোনো ভোটের মাধ্যমে নয়। একবার যদি ভোট হয় আপনাদের অস্তিত্ব রক্ষা করাই কঠিন হবে।
শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক আলোচনা সভায় সরকারকে হুশিয়ার করে এসব কথা বলেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষক দলের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু।
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের রাষ্ট্রীয় খেতাব বাতিলের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এই সভার আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী জিয়া প্রজন্ম দল।
জিয়াউর রহমানের ‘বীর উত্তম’ খেতাব বাতিলের বিষয়ে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) নেওয়া সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানান দুদু। তিনি বলেন, জাতির নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী, মওলানা ভাসানী, শেখ মুজিবুর রহমান ও জিয়াউর রহমান তারা সবাই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছেন। তাদের যা যা ভূমিকা তা ইতিহাসে লিপিবদ্ধ হয়েছে। আমরা আমাদের সেই পূর্বপুরুষদের সফলতা-ব্যর্থতা নিয়েই সামনের দিকে এগিয়ে যাই। তাদের এক এক জনকে আমরা তো এক এক রকমভাবে দেখতে পারি। কিন্তু তাদের যে অর্জন তা আমরা কেড়ে নেব, ফেলে দেব, পদদলিত করব? বাঙালি ছাড়া পৃথিবীর অন্য কোনো জাতি তাদের শ্রেষ্ঠ সন্তানদের এভাবে অপমান করতে পারে, এটা আমার জানা নেই।
বিএনপির এই নেতা বলেন, এ কোন বাংলাদেশ, যারা বাংলাদেশ নির্মাণ করেছেন, সাহসিকতার সঙ্গে যুদ্ধ করেছেন, বাংলাদেশ তাদেরকে অপমানিত করতে ছাড়ছে না। লজ্জার তো একটা সীমা থাকে। এ কোন বাংলাদেশে এসে আমরা দাঁড়িয়েছি? শহীদ জিয়াউর রহমান হচ্ছেন বাংলাদেশের অন্যতম বীর। শুধু যোদ্ধা বললে কম বলা হবে।
বিএনপির এই ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, কোনো সরকারই শেষ সরকার নয়। তাহলে কি ভবিষ্যতে অন্য পদবিগুলো অন্যরা কেড়ে নেবে? এটা কোনো রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা হতে পারে? এই প্রধানমন্ত্রীর আমলে যেগুলো হচ্ছে এগুলো কি দায়িত্বশীলতার ব্যাপার?
ছাত্রদলের সাবেক এ সভাপতি বলেন, শহীদ জিয়া ছোট হয়ে গেলে গণতন্ত্র ছোট হয়ে যায়। শহীদ জিয়া ছোট হয়ে গেলে স্বাধীনতা ছোট হয়ে যায়, মুক্তিযুদ্ধ ছোট হয়ে যায়। এই কথাগুলো মাথায় রাখতে হবে। আপনি (শেখ হাসিনা) শহীদ জিয়াকে ছোট করছেন? কী বলব- ‘গাধা’ বললে তো আপনারা অখুশি হবেন, ‘বুদ্ধিহীন’ বললেও তো অখুশি হবেন। শেরেবাংলা একে ফজলুল হক, জিয়াউর রহমান এদেরকে ছোট করবেন না। পারলে তাদের পদক আরও বাড়িয়ে দিন।
নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে দুদু বলেন, রাস্তায় নামতে হবে। এর কোনো বিকল্প নাই। গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হলে আন্দোলন-সংগ্রামের কোনো বিকল্প নাই। তাই আপনারা রাস্তায় নামার জন্য তৈরি হোন।
আয়োজক সংগঠনের সভাপতি গিয়াস উদ্দীনের সভাপতিত্বে এবং কৃষক দলের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য কেএম রকিবুল ইসলাম রিপনের সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটির সদস্য লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, কৃষক দলের কেন্দ্রীয় নেতা শাজাহান মিয়া সম্রাট, গোলাম সারোয়ার সরকার, মোক্তার আকন্দ প্রমুখ।