সাতক্ষীরায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় দুজন নিহত ও ২০জন আহত হয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। বুধবার জেলার দেবহাটা, আশাশুনি ও তালা উপজেলায় এসব দুর্ঘটনা ঘটে।
আমাদের দেবহাটা ব্যুরো প্রধান আব্দুল ওহাব জানান, মাটিবাহী ইটভাটার যন্ত্রদানব ডাম্পারের চাকায় পিষ্ট হয়ে আব্দুর রাজ্জাক ওরফে নিজাম কারিকর (৫৫) নামের এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। বুধবার সকাল ৯টার দিকে দেবহাটা উপজেলার পুষ্পকাটি আব্দুর রবের মালিকানাধীন ইটভাটা বিসমিল্লাহ ব্রিকসে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত নিজাম কারিকর সাতক্ষীরা সদর উপজেলার দক্ষিণ আলীপুর গ্রামের আজিজেল কারিকরের ছেলে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে তিনি আরও জানান, বুধবার সকাল ৮টার দিকে বাড়িতে নির্মাণ কাজের জন্য দুই হাজার ইট নিতে বাইসাইকেলে করে নিজাম কারিকর বিসমিল্লাহ ব্রিকসে আসেন। ইট ক্রয় শেষে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে ভাটা থেকে বের হচ্ছিলেন তিনি। সেসময় মাটি বোঝাই একটি ডাম্পার আনলোডের জন্য ইটভাটার মধ্যে প্রবেশ করে। রাস্তা সংকীর্ন হওয়ায় বাইসাইকেল নিয়ে ডাম্পারটির পিছনে অপেক্ষমান ছিলেন নিজাম কারিকর। একপর্যায়ে ডাম্পারের চালক অসাবধানতা বশত: ডাম্পারটি রিভার্জ করলে বাইসাইকেলসহ নিজাম কারিকর তাতে পিষ্ট হয়। তাৎক্ষণিকভাবে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক নিজাম কারিকরকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে দেবহাটা থানার এসআই আবু হানিফ ঘটনাস্থলে পৌছে ডাম্পারটি জব্দ করেন।
এদিকে আমাদের আশাশুনি ব্যুরো প্রধান আহসান হাবিব জানান, আশাশুনির মহেশ্বরকাটি সড়ক দুর্ঘটনায় এক মটরসাইকেল চালক নিহত এবং আরোহী গুরুতর আহত হয়েছে। জানা গেছে, বুধবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলা আনুলিয়া থেকে মাছ ক্রয়ের জন্য বুধহাটা ইউনিয়নের মহেশ্বরকাটি মৎস্য সেটে যাচ্ছিল। পথিমধ্যে উপজেলা চাপড়া-সাতক্ষীরা মেইন সড়কের মহেশ্বরকাটি ইনতি আইচ ফ্যাক্টরীর সামনে পৌছানো মাত্র অপরদিক থেকে হঠাৎ একটি বরফবাহী ভ্যান সামনে পড়লে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মটরসাইকেল পাশে গাছের সাথে সংঘর্ষ হয়। এতে মোটরসাইকেল রাস্তার পাশে ছিটকে পড়ে চালক আনুলিয়ার মৃত বাবু গাজীর পুত্র ওকালত গাজী (৪০) ও পার্শ্ববর্তী বল্লভপুর গ্রামের সুবোল দাশের পুত্র গৌরপদ দাশ (২৭) গুরুতর আহত হয়। সাথে সাথে পার্শ্ববর্তী লোকজন আহতদের উদ্ধার করে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ২.৩০ মি. ওকালত গাজী মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়ে ও অবস্থার অবনতি হলে গৌরপদ দাশকে খুলনা ৫০০ শষ্যা হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
এদিকে তালা থেকে এসএম বাচ্চু জানান, পাইকগাছা-খুলনা প্রধান সড়কের যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে অন্তত ২০ যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে ১০জনকে প্রথমে তালা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরমধ্যে ৪ জনকে গুরুতর অবস্থায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি আরও জানায়, তালার ঘোষনগর এলাকায় পাইকগাছা থেকে যাত্রবাহী বাস বরিশাল জ-১১০০০৬ খুলনা যাওয়ার পথিমধ্যে তালার ঘোষনগর এলাকায় পৌছালে অপর একটি বাসকে অতিক্রম করার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার পাশের শিশু গাছসহ খাদে পড়ে যায়। এসময় কন্ট্রাকটারসহ যাত্রীদের অন্তত ২০জন আহত হয়। ১০জন যাত্রী স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে তালা হাসপাতালে ভর্তি করেন।
এদিকে গুরুতর অবস্থায় খুলনার কয়রা উপজেলার তরিকুল ইসলাম (৩৫), আমজেদ শেখ (৫০), তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগম(৪২) ও একই উপজেলার রেহানা খাতুন(২৮) কে খুলনা মেডিকেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তাদের সকলের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে বাসের চালক কপোতাক্ষ নদ সাঁতরে পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে তালা থানা, পাইকগাছার কপিলমুনি ফাঁড়ি পুলিশ ও ফায়ার স্টেশনের কর্মীরা দ্রুত উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।
Check Also
বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়িয়ে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেবহাটায় মানববন্ধন
দেবহাটা প্রতিনিধি: স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের গ্রেফতার এবং বিএনপির …