স্টাফ রিপোটার: সাতক্ষীরায় এক ইউপি চেয়ারম্যানের পক্ষে বিপক্ষে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকাল ১০টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে আশাশুনি উপজেলার শ্রীউলা ইউপি চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিলের অত্যাচারে অতীষ্ট হয়ে এবং তার অনিয়ম দুর্নীতির শাস্তি দাবি জানিয়ে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন, শ্রীউলা ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নুর মোহাম্মদ সরদার। বক্তব্য রাখেন, জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আমির হোসেন জোয়ার্দ্দার, ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ময়নুল ইসলাম বুলু, থানা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান এড. জহুরুল হক, ত্রাণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম, থানা কৃষকলীগের সহ-সভাপতি দিপংকর বাছাড় প্রমুখ। পরে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে উপস্থিত হয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা বলেন, শ্রীউলা ইউনিয়নে চেয়াম্যান মহাদুর্নীতিগ্রস্থ একজন ব্যক্তি। খেয়াঘাট ইট ইজারার লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাথের কারণে তার দুদকের দায়ের মামলার প্রধান আসামী। তিনি গ্রামীন অবকাঠামো উন্নয়নে ভূয়া প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা উত্তোলন করা। কোন কাজ না করে বিভিন্ন প্রজেক্ট দেখিয়ে এডিপি ও এলজিএসপির টাকা তুলে আত্মসাৎ। সুবিধা নিয়ে ধনী লোকদের দিয়েছে ভিজিডি কাড। ১০ টাকা কেজি দরের চাল পেয়েছে ধনী শ্রেণির লোকেরা। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচিত সদস্যদের সম্মানি ভাতা দেয়নি সে। সরকারি খাস জমিতে তৈরি করেছেন বিলাস বহুলবাড়ি। সম্প্রতি শ্রীউলা এলাকার ঠাকুর দাস, মানিক চক্রবতী, রাসেদ সরদার, রহিমা খাতুন অনেক জমির মালিক। তাদের আছে পাকা দালান বাড়ি। ভারতে বসবাসরত বিরেন্দ্র নাথ সানা। সরকারি চাকরিজীবি আব্দুল খালেক। এরকম অসংখ্যা লোকের নামে ১০ টাকা কেজি দরে চাউলের কার্ড দিয়েছে। অথচ দরিদ্র শ্রেণির লোকজন সরকারি এসব সুযোগ সুবিধা পায়নি। পুইজালা গ্রামের রমেশচন্দ্র মন্ডলের স্ত্রী কনিকা মন্ডলের টিপসই জাল দুই বছর ধরে ভিজিডি চাল উত্তোলন করেছেন চেয়ারম্যানও তার লোকজন। ৪০ দিন কর্মসূচীর কাজ ৩০দিনে শেষ করে অতিরিক্ত ১০ দিনের টাকা উত্তোলন করে নিজেদের মধ্যে ভাগবাটেয়ারা করে নিয়েছেন । যাদের প্রকল্পের সভাপতি ও সম্পাদক করা হয়েছে তারা এসবের কোন কিছু খোজ রাখে না। তাদের সহি জাল করে ভূয়া মাস্টার রোলের মাধ্যমে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাথ করেছেন। একই শ্রমিক ৫ বছর ধরে এই কাজ করেছে। এডিপিও এলজিএসপির আওতায় ভূয়া প্রকল্পের তালিকা করে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। রয়ার সিং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাটের নামে ভূয়া প্রকল্প দেখিয়ে ২লাখ ৫০ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন। আবার মহিষকুড়া বিজিএম ক্লাবের মাঠ ভরাট করা হয়েছে বলে ৩ বারে ২৪ টান চাউল উঠানো হয়েছে। বুড়াখারুিট ইয়াংক্লাব, কাকড়া বুনিয়া সবুজ সংঘ, শহিদ মিনার নির্মান, নাকতারা পাঞ্জেগানা সমজিদ সংস্কার করার নামে লক্ষ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে নিজের পকেট ভত্তি করেছে। সেখানে এই সব প্রতিষ্ঠানের কোন অস্তিত্ব নেই। বকচর ডিজিটাল রেডিয়েন্ট এন্ড ফ্রেন্ডশীপ ক্লাব সংস্কার করার কথা বলে একই প্রতিষ্ঠানের নামে ৩ বার টাকা উত্তোলন করেছেন। আর এসব প্রকল্পের বেশির ভাগ সভাপতি চেয়ারম্যান আর সেক্রেটারি তার গাড়িচালক আবদুল্লাহ আল মুামন। এখন তার আছে প্রাইভেট গাড়ি, মাছের ঘের, বাগান বাড়ি আর কাড়ি কাড়ি টাকা। তার এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করলে তার মাদকাসক্ত পুত্র সৌরভ রায়হান সাদ তার সন্ত্রাসী বাহিনীর লোকজন নিয়ে হামলা, মারপিট ও লাঞ্চিত করে। এমনকি মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে হয়রানিও করা হয়। চেয়ারম্যান আবু হেনা শাকিল ইউনিয়নের খেয়াঘাট ইজারা নিয়ে সরকারের ১৪ লক্ষ টাকা রাজস্ব আত্মসাথে অভিযোগে দুদক কর্তৃক দায়েরকৃত মামলার প্রধান আসামী তিনি। তার আশু গ্রেফতার পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
এদিকে, একই দিন বেলা ১২টায় চেয়ারম্যান শাকিলের অনুসারীরা তাকে নির্দোশ দাবি করে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সামনে একটি মানববন্ধন করে। শ্রীউলা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাংগঠণিক সম্পাদক আবু সাঈদের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন আশাশুনি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অসীম বরণ চক্রবর্তী, আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের আব্দুস সামাদ বাচ্চু, শ্রীউলা ইউনিয়নের পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপক কুমার মন্ডল, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা মাওলানা মনিরুল ইসলামসহ আরও অনেকে।
এবিষয়ে চেয়ারম্যান শাকিল তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ অস্বীকার বলেন, আসন্ন ইউপি নির্বাচন উপলক্ষ্যে আমরা বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।
Check Also
সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন এর আয়োজনে বিজয় দিবস পালন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান
নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,পুরুষ্কার বিতারণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। …