বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ২০০৯ সালের ২৫ এবং ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় তৎকালীন বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহে ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তা নিহত হন। মাত্র ৩৬ ঘণ্টায় পিলখানায় যে হত্যাযজ্ঞ ঘটেছিল এদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধেও এতো সংখ্যক সেনা কর্মকর্তা নিহত হননি। আধিপত্যবাদী শক্তি বাংলাদেশকে একটি তাবেদারী রাষ্ট্র হিসেবে দেখতে চাই। দেশ ও জাতির বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই এই ঘটনা সংগঠিত হয়। আমাদের এই বাংলাদেশকে নিয়ে আগ্রাসী শক্তির একটা প্যাকেজ ষড়যন্ত্র আছে। তারা আমাদের অর্থনীতি, রাজনীতি, সংস্কৃতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প-কলকারখানাসহ সকল ক্ষেত্রে গোলামী বা পরাধীনতার শিকলে আবদ্ধ করতে চাই। আধিপত্যবাদীদের ষড়যন্ত্রে দেশের সীমানা আজ অরক্ষিত। যখনই তারা সুযোগ পায় তখনই বাংলাদেশে পরিকল্পিতভাবে আক্রমণ করে। ফলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে দেশপ্রেমিক জনতাকে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি পিলখানা হত্যাযজ্ঞের শহীদদের স্মরণে আয়োজিত ‘আলোচনা সভা ও দোয়া’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমীর নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মুহাম্মদ আবদুল জব্বার, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য যথাক্রমে আব্দুস সবুর ফকির ও অধ্যাপক মোকাররম হোসাইন খান। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শুরা সদস্য সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য আশরাফুল আলম ইমন, শাহিন আহমদ খান প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, বাংলাদেশে আমরা এমন এক দুঃসময় পার করছি, যেখানে মানুষের ভোটের অধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই, মানবাধিকার লঙ্ঘন হচ্ছে প্রতিনিয়ত। পিলখানার ঘটনার যারা কুশিলব ছিলেন, তারা আজ ধরা-ছোঁয়ার বাইরে অথচ সেই ঘটনায় অসংখ্য নিরাপরাধ বিডিআর সদস্যদের বিনা বিচারে বছরের পর বছর কারান্তরীন করে রাখা হয়েছে। এই বিভীষিকাময় ঘটনার পিছনে ভূ-রাজনীতির ওতপ্রোত সম্পর্ক রয়েছে। তাই দেশপ্রেমিক রাজনীতিক ব্যক্তিসহ দেশের সকল নাগরিকগণকে এ ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, এই ঘটনায় দেশ ও জাতির যে অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে তা সহজে পূরণ হবার নয়। ইতিহাসের এই কলঙ্কজনক অধ্যায় দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে দীর্ঘমেয়াদে হুমকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। একদিকে এদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বের অতন্দ্র প্রহরী সেনাবাহিনীকে দুর্বল করে ফেলার অপচেষ্টা করা হয়েছে। অপরদিকে এ ঘটনার মধ্যদিয়ে এদেশের সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর মনোবল ধ্বংস করে দিয়ে আমাদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সীমানাকে অরক্ষিত করে দেয়ার নীল নকশা আঁকা হয়েছে। এই ভূখণ্ড ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সকলকে দেশপ্রেম ও ইসলামের সুমহান আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালন করতে হবে।
অনুষ্ঠানে শহীদ ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ নিহতদের রুহের মাগফেরাত ও তাদের শাহাদাতের মর্যাদা কামনা করে মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে বিশেষ দোয়া ও মুনাজাত করা হয়। প্রেস বিজ্ঞপ্তি।