‘চেয়ে অধিকার আদায় হয় না, এটি আদায় করে নিতে হয়’—এমনটিই জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নারীদের শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নিজেদের তৈরি করে নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার আন্তর্জাতিক নারী দিবসে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমি নারীদের একটা কথা বলব যে, ‘নারীদের অধিকার দাও, নারীদের অধিকার দাও’ বলে শুধু চিৎকার করা আর বলা আর বক্তৃতা দেওয়া… এতে কিন্তু অধিকার আসে না। অধিকারটা আদায় করে নিতে হবে। আদায় করার মতো যোগ্যতাটা অর্জন করতে হবে। আর সেই যোগ্যতা আসবে শিক্ষা-দীক্ষা, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে।”
নারীদের এগিয়ে নেওয়ার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সরকারের অবদানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার আগে কোনো নারী জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার বা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পদ পেতেন না। আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর সর্বক্ষেত্রে নারীদের অবস্থানটা নিশ্চিত করা হয়েছে।
‘পার্লামেন্টের কথা নাই বললাম। বর্তমানে বাংলাদেশে স্পিকার, লিডার অব দ্য হাউস, লিডার অফ দ্য অপজিশন- সবই নারী। এটি আমরা স্থান করে নিয়েছি। কাজেই আমি মনে করি যে, এটিই আমাদের সব থেকে বড় অর্জন বাংলাদেশের।’
শিক্ষায় নারীদের সুবিধা প্রসঙ্গে সরকারপ্রধান বলেন, এখন একেবারে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শিক্ষা সহায়তা ট্রাস্ট ফান্ড থেকে যে সহায়তা দেওয়া হচ্ছে, তার ৭৫ শতাংশ আগে মেয়েরাই পেত। এখনও প্রায় ৭০ শতাংশ মেয়েরাই পায়। এ ছাড়া সরকার প্রায় দুই কোটি পাঁচ লাখ শিক্ষার্থীকে বৃত্তি ও উপবৃত্তি দিচ্ছে, সেখানেও মেয়েদের অংশটাই বেশি।
‘নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাইকে শিক্ষা দিতে হবে। আর প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রেও আমরা বলছি যে প্রতিটি প্রশিক্ষণকেন্দ্রে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে তারা প্রশিক্ষণ নিতে পারেন, যাতে যে কোনো কাজে মেয়েরা নিজেদের যোগ্যতা দেখাতে পারে এবং তারা কাজ করতে পারে।”
তিনি বলেন, আগে ধর্মের নাম নিয়ে বা সামাজিকতার কথা বলে নারীদের ঘরে বন্ধ করে রাখার যে প্রচেষ্টা ছিল, সেই অচলায়তন ভেদ করে মেয়েরা এখন এগিয়ে যাচ্ছে।
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি মিলনায়তন এ অনুষ্ঠানে সংগ্রামী পাঁচ নারীকে জাতীয় পর্যায়ে ‘শ্রেষ্ঠ জয়িতার’ সম্মাননা দেওয়া হয়।