সাবেক উপরাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদের তৃতীয় জানাজায় নেতাকর্মীদের ঢল নামে। রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে শুক্রবার বেলা ১১টায় এ জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
প্রিয় নেতার জানাজা ও তাকে শেষ বিদায় জানানোর জন্য সকাল থেকেই বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আশপাশে ভিড় করেন বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। তারা অধীর অপেক্ষায় ছিলেন কখন সেখানে মওদুদের কফিন নেওয়া হবে। সুপ্রিমকোর্টে জানাজা শেষে মওদুদের লাশ নয়াপল্টনে নেওয়া হয়ে সেখানে এক আবেগঘন পরিবেশ সৃষ্টি হয়। মওদুদের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহযোদ্ধারা এদিন আবেগ চেপে রাখতে পারেননি। এ সময় অনেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েন।
জানাজায় অংশ নেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ মওদুদ আহমদের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক জীবনের সহযোদ্ধারা।
এর আগে আজ সকাল সোয়া ৯টার দিকে এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে মওদুদ আহমদের মরদেহ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পৌঁছায়। ব্যারিস্টার মওদুদের মরদেহ শহীদ মিনারে আসার আগে থেকে দলীয় নেতাকর্মীসহ সাধারণ মানুষ সেখানে অবস্থান করছিলেন। সকাল ১০টা পর্যন্ত মরহুমের মরদেহ রাখা হয় সেখানে। শ্রদ্ধা নিবেদন করেন বিএনপির নেতাকর্মীদের পাশাপাশি বিভিন্ন দল ও সংগঠন। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে মওদুদ আহমদের মরদেহ নেওয়া হয় তার দীর্ঘদিনের কর্মস্থল সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে।
সুপ্রিমকোর্টে জানাজায় অংশ নেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর (বীর উত্তম), এয়ার ভাইস মার্শাল (অব.) আলতাফ হোসেন চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা তৈমুর আলম খন্দকার, ফজলুর রহমান, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুছ তালুকদার দুলু, সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস কাজল, বিএনপির আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল।
এ ছাড়া জাতীয় দলের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট এহসানুল হুদা, এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান, বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া, এনডিপির মহাসচিব মনজুর হোসেন ঈসা, জাগপা মহাসচিব ইকবাল হোসেনসহ তার দীর্ঘদিনের সহকর্মী আইনজীবীরা জানাজায় অংশ নেন।
সেখান থেকে মওদুদের লাশ তৃতীয় জানাজার জন্য বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে নেওয়া হয়। পরে মওদুদের মরদেহ হেলিকপ্টারে করে নোয়াখালীর উদ্দেশে নেওয়া হবে।
বসুরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা মাঠে বাদ আসর জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে মা-বাবার কবরের পাশে দাফন করা হবে ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদকে।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদের লাশ ৬টা ৩ মিনিটে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছায়। সেখানে বিএনপির মহাসচিবসহ দলের জ্যেষ্ঠ নেতারা লাশ গ্রহণ করেন।
সিঙ্গাপুরের মাউন্ট এলিজাবেথ হাসপাতালে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ। সেখানে প্রবাসীরা তার প্রথম জানাজায় অংশ নেন।