এ কোন মন্দির- চন্ড ভৈরব ত্রিকোন মন্দির নামে আরও একটি মন্দির আছে বা ছিল যেটি বর্তমান মোহন লাল সেন পিং মৃঃ সতীন্দ্র নাথ সেনের বাড়ির উপরে অবিস্থত। মন্দির টি ধ্বংসস্তুপে পরিনত হয়েছে। জঙ্গলাকীর্ণ অবস্থায় পড়ে আছে। সেনেরা এখানে ৩ পুরুষ ধরে বসবাস করছেন। তার ভাইয়েরা কলকাতা বসবাস করছেন। এই চন্ড ভৈরব মন্দির রাজা লক্ষনসেন নির্মান করেন বলে কথিত আছে। এখানে শিব লিঙ্গের পূজা হত এবং নিত্য পূজা দেওয়া হত। বর্তমান কালিমন্দিরের সামনের পুকুরটা তৎকালিন যুগে পুন্য ক্ষেত্র দর্শনার্থীদের জন্য ব্যবহৃত হত। দুর দূরান্ত থেকে এসে তারা হাত মুখ ধুয়ে মায়ের দর্শনে যেত, কেহ কেহ শনি মঙ্গলবার পূজার দিনে এই পুকুরে স্নান করে, মায়ের ভোগ ডালা দিত, পূজা পাঠ আরাধনা করত। মন্দিরের সম্মুখে গেটের দুপাশে দ্বিতল বিশিষ্ট নহবতখানা ছিল সেটিও এখন ধ্বংস স্তুপে পরিনত হয়েছে উত্তর দিকের গেটের পাশে ছোট ছোট কুটরী বিশিষ্ট রুমগুলিতে কর্মচারীবৃন্দ নহবত খানার লোকজন ঢুলি বেহারা বন্দের বিশ্রামাগার রূপে ব্যবহৃত হত। মন্দিরের পূর্ব দিকে একটি দুই রুম বিশিষ্ট পাকা ঘর ছিল যেখানে পূজার উপকরনাদি ফুল ফল রাখা হত এবং এখান থেকে বাটা ভরা প্রসাদ ও ফুল পুষ্পাদি মায়ের মন্দিরে আনা হত। উত্তর দিকে দুই রুম বিশিষ্ট একটি ঘর আছে অফিস ঘর হিসাবে ব্যবহৃত। যেখানে বর্তমান ব্রাহ্মনের বিশ্রামাগার এবং নাইট গার্ডের বিশ্রাম স্থান রূপে ব্যবহৃত হচ্ছে। বর্তমান সেখানে পৌরহিত্য করছেন বাবু দীলিপ কুমার মুখার্জী পিং মৃঃ নিরাপদ মুখার্জী মাতা গীতারানী মোবাইল নং- ০১৭২৪-৮৪৮২৮৪ পুরোহিতের বাড়ি বর্তমান বংশীপুর, নাইট গার্ড কাশিনাথ দাস পিং সুরেন্দ্র নাথ দাস মাতা মালতি রানী, মোবাইল নং- ০১৭২৪-৮৪৮০৭৪, দীলিপ মুখার্জীরা ১ ভাই ৩ বোন তার পূর্বে পুজারী হিসাবে নিয়োজিত ছিল গোপালপুরের বিশ্বনাথ ভট্টচার্য জয়ন্ত চট্টপাধ্যায় পরিবারের সঙ্গে দুর্ব্যবহারের ফলে তার পরিবর্তন ঘটে। ফুল পুকুর- কালিমন্দিরের দঃ দিকে ফুল পুকুর নামে একটি ত্রিকোন চৌবাচ্চা এখনো আছে যাতে পুজায় বাসী ফুল তুলসী ও মায়ের গলার মাল্য ফেলা হয়। পাশেই একটি ছোট আকারের কুয়া যাতে ১২ মাসই জল থাকে। ঐ জল দ্বারাই মায়ের মন্দিরে ব্যবহৃত জল হিসাবে গ্রহন করা হয় এবং ফুল ফলাদি ধৌত করা হয়। মন্দিরটি পূর্বে প্রাচীর ঘেরা ছিল। প্রাচীরের নমুনা এখনও আছে কিন্তু তার গেট দরজা কিছুই নেই ভগ্নদশা, শুধুমাত্র মন্দির টুকুর সংস্কার হয়েছে মাত্র। মন্দিরে এখনও লোহার কড়ি বর্গা আছে। ৭১ এ মন্দিরটির যতপর নাস্তি অবস্থা ঘটে। মায়ের মন্দিরের মধ্যে মাতৃমূর্তি পাথর নির্মিত। মুখ অবয়ব বাহির থেকে ভিতর দেখা যায় না। যেখানে মায়ের কর কমল পড়েছিল সেটি অন্ধকারময় সুগভীর স্থান। দেখানো নিষিদ্ধ। এবং দেখলেও কিছু অনুমান করা যায় না। ইষধপশ ঐড়ষষ অর্থাৎ সুগভীর অন্ধকারময় স্থান স্বরূপ। ভক্তি এবং বিশ্বাসই এখানে মূল মন্ত্র হিসাবে কাজ করে। সপ্তাহের প্রতি শনি ও মঙ্গলবারে পূজা হয় এবং নিত্য সকাল সন্ধ্যা প্রদীপ দান চলে। প্রতি বৎসর শ্যাম পূজার সময় মূল উৎসব পালিত হয় এবং মহা ধুমধামে বাদ্যবাজনা পূজা পাঠ হয় ও মেলা বসে। বহু স্থান থেকে পূণ্যার্থী, দর্শনার্থী, ভক্ত সাধারন লোকের মিলন মেলায় পরিনত হয়। সম্মুখে- পুকুর সম্পর্কে একটি অলৌকিক ঘটনার কিংবদন্তী আছে যেটি বর্তমান প্রজন্মের মানুষের কাছে স্মৃতির অতলে তলিয়ে গেছে। তা হল একদা একদল জেলে ৫/৬ জন ঐ পুকুরে মাছ চুরি করতে আসে। এই চোর দলের সর্দার যে ছিল যার ইঙ্গিতে অন্যান্যরা এসেছিল সেই লোক পুকুরে জাল টানতে টানতে মাছ পুকুরে জাল যেন কোন কাঠের মুড়ায় বেঁধে গেছে এমন অনুভূত হলে সে ডুব দিয়ে জাল ছাড়াতে চেষ্টা করে। সে ডুবই তার শেষ ডুব ছিল সে আর কখনও ভেসে ওঠেনি। তার মরা লাশও পাওয়া যায়নি। অন্যান্যরা তার দীর্ঘক্ষনের মধ্যে তাকে উঠতে না দেখে ভয় চকিত অবস্থায় জালে টান দেয় জাল ছিড়ে আসে। এবং চোর দল কোন মাছ না পেয়ে খালি হাতেই বাড়ি চলে যায়। পরবর্তীতে ঐ লোকটির সন্ধান না পাওয়ায় কঠোর গোপনীয়তার মাঝেও ঘটনাটি প্রকাশ হয়ে পড়ে এবং চাপা গুঞ্জন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। সেই থেকে ঐ পুকুরে নামতে মানুষের মনে একটি ভীতিও কাজ করে। এবং প্রায় কেউ একা নামতে চায় না। এমনকি ভয়ে স্নানানও করেনা। পুকুরের ভাঙ্গা ঘাটে কেউ নামার সাহস রাখেনা। এই ঘটনার সত্যতা যাচাই এর মত তেমন কোন বয়স্ক ব্যাক্তিত্ব এখন আর বেঁচে নেই। ঈশ্বরীপুর মায়ের মন্দির- পশ্চিম দিকে ১ দরজা সামনে গ্রীল। দরজার দুই পাশে দুটি জানালা। দক্ষিন দিকে একটি দরাজ, দরজার বামে জানালা পূর্ব দিকে দুইটি জানালা। উত্তর দিকে ১টি দরজা বারান্দায় চার কোনায় ৪টি খ বাঁকানো থাম উত্তর দিকে পথ আছে পথের দুপাশে দুটি করে ৪টি থাম, কাঠের জানালা লোহার শিব। পূর্ব দিকে ৪টি জোড়া থাম উত্তর দিকে ৩টি জোড়া থাম বারান্দায় উত্তর দিকে ১০টি লোহার কড়ি পশ্চিম দিকে ৮টি লোহার কড়ি, দক্ষিন দিকে ১০টি লোহার কড়ি, পূর্ব বারান্দায় ৭টি লোহার কড়ি, সর্বমোট ৩৫টি লোহার কড়ি, নাট মন্দিরের সামনে ২টি বলিদানের যুপ কাষ্ট। এখনও বিদ্যমান তবে এ দুটি প্রাচীন আমলের নয়। সদর দরজার দুপাশে নহবত খানা, মুল মন্দিরের চূড়ায় চক্র, চুড়ার ৪ পাশে ৪টি চুড়া বিশিষ্ট মন্দির। নাইট গার্ড কাশিনাথ দাস দিবারাত্রি থাকেন। ৫১ পীঠ মাতৃ তীর্থের ৫১ খন্ডের মধ্যে মোট ৭টি বাংলাদেশে অবস্থিত তন্মধ্যে বরিশালে-১টি চট্টগ্রামে ২টি সিলেটে ২টি বগুড়ায় ১টি ও যশোরে ১টি। ১) বরিশালে সতীর নাসিকা। দেবী সুনন্দা ভৈরব ত্রাম্বক। পুরাকালে এই স্থানের পাশ দিয়ে সুগন্ধা নদী প্রবাহিত ছিল এবং সুনন্দা উগ্রতারা নামেও অবিহিতা ছিলেন। সুনন্দার আধুনিক নাম সকারপুর। সুগন্ধা গঙ্গার শাখা নদীর তীরে। বরিশাল হতে ১৩ মাইল উত্তরে শিকারপুর গ্রামে ভৈরব ত্রাম্বকেশ্বর মন্দির, ঝালকাটি স্টেশন হতে ৩ মাইল দক্ষিনে পোনাবালিয়া সাসরাইল গ্রামে অবস্থিত। সুগন্ধা বা সুনন্দা নদীর তীরে অবস্থিত। এখানে শিব চতুর্দশী উপলক্ষে মেলা হয়। ২) চট্টগ্রামে সতীর দক্ষিন স্তম্ভ (১৪) দেবী ভৈরব চন্দ্র শেখর সীতাকুন্ড রেল ষ্টেশন হতে গোয়ালন্দ ও চাঁদপুর হয়ে ৩৪০ মাইল দুরে অবস্থিত। চন্দ্রনাথ পর্বতের সমতাল ভূমি সীতাকুন্ড হতে ১ মাইল দূরে সর্বোচ্চ শিখরে মহাপীঠ অধিষ্টাত্রী ভৈরব চন্দ্র শেখর শিবলিঙ্গ বিরজিত। চন্দ্র নাথ পর্বতে ব্যামকুট, সীতাকুন্ড জ্যোতিময় সুরধ্বনী ভবানী ভৈরব চন্দ্র শেখর স্বয়ম্ভু নাথ গয়াক্ষেত্র সরস্বতী শীরা নিরুপাক্ষ হরগোষ্ঠী চন্দ্রনাথ লবনাক্ষ সহস্রধারা বড়েরবানাল জ্বালামুখী ইত্যাদি বহু তীর্থ সমাবেশ রয়েছে। ব্যামকুট অগ্নিকোটে পীঠ অধিষ্টাত্রী ভবানী দেবীর মান্দার, সপ্তদশ সতাব্দীতে ত্রিপুরেশ্বর জেষ্ঠী গোবিন্দ মানিক্য পর্বত চুড়ায় চন্দ্র নাথ দেবের মন্দির নির্মান করে দিয়েছেন অধিষ্টাত্রী দেবী ভবানী চত‚ভূজা কালিমূর্তি। তার চারিপাশে কোটি চামন্ডা অবস্থান করিতেছেন। সমুদ্র হতে ১২০০ ফুট উচ্চে চন্দ্র নাব পর্বত, শিখর অবস্থান করলে এক অপূর্ব প্রাকৃতিক দৃশ্য দর্শকের মন প্রান হরন করে। শিব চতুর্দশী ও কার্তিক পূর্নিমাতে বিরাট মেলা হয়। বাংলাদেশের অপর ৫টির বিবরন পাঠক চাইলে প্রয়োজনে দেওয়া সম্ভব। (সমাপ্ত)
Check Also
বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়িয়ে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেবহাটায় মানববন্ধন
দেবহাটা প্রতিনিধি: স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের গ্রেফতার এবং বিএনপির …