বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজকে আহবান জানাতে চাই। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই ভয়াবহ এই দানবের সরকার কে সরিয়ে দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করি। স্পষ্ট ভাষায় আওয়ামী লীগকে বলতে চাই, আপনারা অবিলম্বে পদত্যাগ করুন, নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। অন্যথায় প্রতিটি বিকৃত সরকারকে যেভাবে পদত্যাগ করতে হয়েছে, আপনাদেরকে একইভাবে বিদায় নিতে হবে।
সোমবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। হেফাজতে ইসলামের সাথে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষে নিহতের ঘটনার প্রতিবাদে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ বিএনপি এ বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে ।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই সরকার স্বাধীনতা দিবসের দিনে, ৫০ বছর পূর্তির দিনে সারাবাংলাদেশের মাটিতে সাধারণ মানুষের রক্ত ঝরিয়েছে। গত তিন দিনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া , ঢাকা এবং চট্টগ্রামে সাধারণ মানুষের যে প্রাণ গেল এর জন্য এই সরকার সম্পূর্ণভাবে দায়ী, এজন্য এই সরকারকে জনগণের কাছে জবাব দিতে হবে এবং এই রক্তের ঋণ শোধ করতে হবে। এই সরকার খুব পরিকল্পিতভাবে অবৈধভাবে ক্ষমতায় আসার পর থেকে তারা বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। বাংলাদেশের মানুষের যে আশা ভরসা তা শেষ করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, পরিকল্পিতভাবে একদলীয় শাসনব্যবস্থা বাকশাল প্রতিষ্ঠিত করেছে।
আমরা গত কয়েকদিন ধরে লক্ষ করেছি, এই সরকার তার পেটুয়াবাহিনী সহ আওয়ামীলীগ সহ তারা নিরীহ মানুষদের উপর অত্যাচার করেছে, হত্যা করেছে, গ্রেফতার করেছে। আমাদের দলের নির্বাহি কমিটির সদস্য নিপুন রায়সহ ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবকদলের অনেক নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করেছে। আমরা খুব পরিষ্কার করে বলতে চাই, এইভাবে কখনো একটি দেশ চলতে পারেনা।
ফখরুল বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরে জনগনের আশা আকাংখাকে পদদলিত করে কুলন্ঠিত করে দিয়ে কখনোই এই আওয়ামীলীগ সরকার টিকে থাকতে পারবেনা। তাদেরকে অবশ্যই চলে যেতে হবে৷
তিনি বলেন, আজকে পরিকল্পিতভাবে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা হরণ করা হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে পেটুয়াবাহিনিতে পরিণত করেছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন,এই সরকারকে অবশ্যই চলে যেতে হবে। আজকে সময় এসেছে, আজকে খবরের কাগজে দেখলাম নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম আকাশচুম্বী হয়ে গেছে।
তিনি বলেন,আজকে আমাদের এই সরকার ভারতের সংগে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক করেছে, অত্যন্ত ঘনিষ্ঠপূর্ণ সম্পর্ক। ভালো কথা। আমরাও চাই প্রতিবেশীদের সঙ্গে সম্পর্ক সুন্দর হোক, সুষ্ঠু হোক। কিন্তু এখন পর্যন্ত তিস্তা পানি চুক্তি হয়নি, সীমান্তে হত্যা বন্ধ হয়নি। পৃথিবীর কোনো সভ্য দেশে এটা আছে কিনা আমার জানা নেই।শুধুমাত্র বর্ডার ক্রস করার জন্য গুলি করে হত্যা করা হয়। এর জন্য বিচার ব্যবস্থা থাকতে পারে কিন্তু গুলি করে হত্যা করার বিধান আছে বলে আমার জানা নেই।
ফখরুল বলেন,তাদের সাথে আমাদের যে ব্যবসা বাণিজ্য আছে সেই ব্যবসার কোনো সমাধান আমরা এখন পর্যন্ত পাইনি। এই সরকার এতোটাই নতজানু সরকার, যে সরকার ভারত কিংবা অন্যান্য দেশ থেকে কোনোভাবে আমাদের যে ন্যয্য দাবী সেগুলো আদায় করে দিতে পারছেনা। আপনাদের শুধু এটা বলতে চাই, এই সরকার কে রেখে জনগণের যে আশা আকাঙ্ক্ষা, স্বাধীনতা রক্ষা করতে পারব না। দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে তিন বছর ধরে আটক করে রাখা হয়েছে। তাকে অবশ্যই আমাদের মুক্ত করতে হবে। তারেক জিয়া নির্বাসিত আছেন, তাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হবে।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানী, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-জলবায়ু বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মুন্সী বজলুল বাসিত আঞ্জু, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবিব, যুবদলের সভাপতি সাইফুল আলম নীরব, সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দীন টুকু, যুবদলের সিনিয়র সহসভাপতি মোর্তাজুল করিম বাদরু, কেন্দ্রীয় নেতা গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান, সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ প্রমুখ।