বিলাল মাহিনী / অভয়নগর (যশোর) :
দফায় দফায় সংস্কার করার পরেও যশোর-খুলনা মহাসড়কের বেহাল অবস্থার পরিবর্তন হচ্ছে না কোন ভাবেই। ৩২১ কোটি টাকা ব্যয়ে এই প্রকল্পটি চালু হয় ২০১৭ সালের জুলাই মাসে।
কাজটি দুই ভাগে নির্মাণ প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন এবং মাহাবুব ব্রাদার্স (প্রাঃ) লিঃ হাতে নেয় এবং কাজটি শেষ হয় ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে।
কিন্তু প্রকল্পের কাজ শেষ হতে না হতেই রাস্তার বিভিন্ন স্থানে গর্ত সৃষ্টি হয়ে বেজ টাইপ’র পাথর পর্যন্ত বেরিয়ে আসে।
বিভিন্ন সময়ে ঘটতে থাকে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনা এবং রাস্তাও ক্রমেই হয়ে উঠতে থাকে চলাচলের অনুপযোগী। দফায় দফায় সংস্করণের কাজ চলতে থাকলেও, কোন পরিবর্তন হয়নি সড়কটির। বর্তমানে সড়কের বেহাল দশার দায় এড়াতে চাচ্ছে সকলে।
নির্মান প্রতিষ্ঠানগুলো বলছে, সকল কাজ নিয়ম অনুযায়ী হয়েছে, তারা বলছে সড়ক বিভাগের ডিজাইন অনুযায়ী কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
আর সড়ক বিভাগ বলছে যানবাহনের ওভার লোডের কারণে এমন পরিস্থিতি হয়েছে সড়কটির।
এদিকে স্থানীয় জনগণ বলছে, সড়কের বেহাল দশার জন্য কতৃপক্ষ ও ঠিকাদর প্রতিষ্ঠান দায়ী। ঠিক ভাবে কাজ হলে সড়কটির এমন অবস্থা হওয়ার কথা নয়। স্থানীয় জনগণ সড়ক বিভাগকে প্রশ্ন ছুড়ে দিয়ে বলে, যদি ওভার লোডের কারণে এমন হয়ে থাকে, তবে লোড যানবাহন চলাচলের উপযোগী করে কেন তৈরি করা হল না?
তারা বলেন, সড়ক বিভাগ এবং নির্মাণ প্রতিষ্ঠান সকলেই যদি দায় মুক্ত হয় তবে সড়কের এই অবস্থার জন্য দায়ী কে?
এসময় তারা বলেন, জাতীয় মহাসড়কসহ দেশের বিভিন্ন জাতীয় মহাসড়ক চার লেনে পরিবর্তন করা হলেও যশোর খুলনা মহাসড়কটি ছিলো জাতীয় মহাসড়ক (৭) তার পরেও এই মহাসড়কটি চার লেনে পরিবর্তন না করে, দুই লেনে রাখা হয়েছে।
এখন আবার নিম্ন মানের রাস্তা তৈরি করে বার বার সংস্কারের নামে চলছে আইওয়াশ। রাস্তাটি নির্মানের সময় বিভিন্ন অনিয়ম লক্ষ্য করেছি সাবগ্রেড লেয়ারে পর্যাপ্ত পানি না দিয়ে রোলিং সম্পন্ন এবং পরবর্তীতে সববেজের পরিবর্তে সড়কটিতে পুরাতন সেলবেজ ব্যবহার সহ নানারকম অনিয়ম হয়েছে। যেটা রাস্তার স্থায়ীত্বের জন্য একেবারে অনুপযোগী। এছাড়া ইঞ্জিনিয়ারিং সূত্র অনুযায়ী এসপাল্ট তৈরির কমপক্ষে ৭২ ঘন্টা পরে রাস্তা ছাড়ার নিয়ম থাকলেও মানা হয়নি সে নিয়ম। এসপাল্ট কাজ সম্পন্ন হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চলাচলের জন্য ছেড়ে দেওয়া হয় রাস্তাটি, যার কারণে তখন থেকেই বিভিন্ন জায়গায় রাস্তা বসে যেতে থাকে এবং পরবর্তীতে নষ্ট হতে শুরু হয়।
বর্তমানে যশোর খুলনা মহাসড়কের এই রাস্তাটি দূর্ঘটনার অপর নাম হিসাবে পরিচিত পেয়েছে সাধারণ জনগণের মধ্যে। তাদের দাবি শুধু চালকের ভুল নয় দুর্ঘটনায় পেছনে সড়কের বেহাল দশাও দায়ী।
এসময় তারা সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, আমরা লোক দেখানো উন্নয়ন নয় নিরাপদ সড়ক চাই। সড়কটির স্থায়ী সংস্কার ও উন্নত মানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহারের দাবি সর্বসাধারণের।