শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালিয়ে প্রশাসন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে: জুনায়েদ বাবুনগরী( ভিডিও)

নেতাকর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বাংলাদেশ হেফাজতে ইসলামের নেতারা বলেছেন, পুলিশ ও সরকারি দলের বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের হেলমেটবাহিনী হেফাজতের ২০ জন কর্মী-সমর্থককে হত্যা করেছে। পুলিশ তাদের গ্রেফতার না করে উল্টো হেফাজত নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি তল্লাশি করে গ্রেফতার-হয়রানি করছে। আজ থেকে যদি আর কোনো হেফাজত কর্মী-সমর্থকদের বাড়িতে তল্লাশি চালানো হয়, কাউকে গ্রেফতার করা হয়, তাহলে হেফাজত আবার কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।

শুক্রবার জুমার নামাজের পর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে হেফাজতের ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সভাপতি জুনায়েদ আল হাবীবের সভাপতিত্বে বক্তৃতা করেন, কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুর রব ইউসুফী, অধ্যাপক ড. আহমদ আব্দুল কাদের, কেন্দ্রীয় যুগ্ম-মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হক, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, আহমদ আলী কাসেমী, জসিম উদ্দিন, মুজিবুর রহমান হামিদী, সাখাওয়াত হোসাইন রাজী, আতাউল্লাহ আমিন প্রমুখ।

আব্দুর রব ইউসুফী বলেন, হেফাজতের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করতে মসজিদ-মাদরাসায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। আইজিপিকে বলবো, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করেছে আওয়ামী লীগের হেলমেটবাহিনী, তাদের গ্রেফতার করুন।

তিনি সাংবাদিকদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করুন। মিডিয়ালীগ হবেন না।

যুবলীগ-ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে তিনি দেশবাসী সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামার আহ্বান জানান।

আহমদ আব্দুল কাদের বলেন, পুলিশ গুলি করে হেফাজতের নেতাকর্মীদের শহীদ করেছে। শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যেতে পারে না। তারা মোদির বিরোধিতা করতে গিয়ে শহীদ হয়েছে। আর যুবলীগ-ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী হেলমেটবাহিনী মোদিকে রক্ষায় মাঠে নেমেছে।

জুনায়েদ আল হাবীব বলেন, গ্রেফতার আতঙ্কে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঘরে কোনো পুরুষ থাকতে পারছেন না। কিন্তু প্রকৃত দোষীরা গ্রেফতার হচ্ছে না। উল্টো ওইদিনের ঘটনায় যারা নিহত হয়েছেন, তাদের পরিবারের সদস্যদের গ্রেফতার-হয়রানি করা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, যিনি মাদরাসায় হামলা করলেন, সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে ককটেল মারলেন, গুলি করে মানুষ হত্যা করলেন; তাদের কিছুই হচ্ছে না। স্থানীয় এমপি ওবায়দুল মোকতাদির ও তার বাহিনী অবাধে ঘুরছে। আমরা তার গ্রেফতার চাই।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, করোনা আতঙ্কের কথা বলে এখন মাদরাসা বন্ধের পাঁয়তারা চলছে। গত রমজানের মতো তারাবি ও নামাজ বন্ধের পাঁয়তারা চলছে। এ দফায় এমন করা হলে কঠোর আন্দোলন হবে। ধর্মপ্রাণদের জুজু বুড়ির (করোনা) ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।

মামুনুল হক বলেন, ২৬ থেকে ২৮ মার্চ এই তিন দিনে হেফাজতের ২০ জনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। অথচ সরকারের মন্ত্রী, এমপি ও প্রশাসনের বড় বড় কর্মকর্তারা ব্রাক্ষণবাড়িয়ায় বিভিন্ন স্থানে বিচ্ছিন্ন ঘটনা নিয়ে মায়াকান্না করছেন। আইজিপি সেখানে গিয়ে একবারের জন্যও ২০ জনকে হত্যার বিষয়ে কিছু বলেননি।

মামুনুল হক হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, আমাদের চোখ রাঙানি, বন্দুকের নলের ভয় দেখাবেন না। হেফাজত আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পায় না।

পুলিশ হেফাজতে থাকা অবস্থায় হেফাজতের নেতাকর্মীদের উপর হেলমেটবাহিনী অত্যাচার করেছে এমন অভিযোগ করে তিনি এ ব্যাপারে বিশ্বের মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতি তদন্তের আহ্বান জানান। তিনি হেলমেটবাহিনীকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবি জানান।

গণমাধ্যমকে জাতির সামনে সঠিক তথ্য তুলে ধরার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, অন্যথায় জাতি আপনাদের বয়কট করতে বাধ্য হবে।

মামুনুল হক বাড়ি বাড়ি তল্লাশি, গ্রেফতার বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেন, অন্যথায় হেফাজত আবারো কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবে।

এদিকে হেফাজতের কর্মসূচিকে ঘিরে নামাজের আগে থেকেই বায়তুল মোকাররম এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, পল্টন মোড়, বায়তুল মোকাররম চত্বর, উত্তর গেট ও পশ্চিম পাশে অবস্থান করছেন র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরা। এছাড়া পুরানা পল্টনে প্রস্তুত রাখা হয় সাঁজোয়া যান।

https://youtu.be/ZswQXvcJwIQ

Check Also

সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন এর আয়োজনে বিজয় দিবস পালন ও ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠান

নিজস্ব প্রতিনিধি : সাতক্ষীরায় বিজয় দিবস উপলক্ষে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা,পুরুষ্কার বিতারণ ও আলোচনা সভা  অনুষ্ঠিত হয়েছে। …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।