ক্রাইমবাতা ডেস্করিপোট: গাইবান্ধায় প্রায় এক ঘণ্টার কালবৈশাখী ঝড়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দশজনে দাঁড়িয়েছে। রোববার বিকালে গাইবান্ধা জেলার ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া এ ঝড়ে কাঁচা ঘরবাড়ি ও গাছপালার ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। জেলাজুড়ে বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সরবরাহ। ডিসি আব্দুল মতিন জানান, ঝড়ে গাইবান্ধা সদরে চারজন, পলাশবাড়ীতে তিনজন, ফুলছড়িতে দুইজন এবং সুন্দরগঞ্জে একজনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতরা হলেন- গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের বাকেরপাড়া গ্রামের ইউনুছ আলীর স্ত্রী জাহানারা বেগম (৫০), একই ইউনিয়নের মোস্তফাপুর গ্রামের আব্বাস আলীর ছেলে আবদুল গোফ্ফার (৪২), গাইবান্ধা সদর উপজেলার মালিবাড়ী ইউনিয়নের ঢনঢনিপাড়া গামের মিঠু মিয়ার স্ত্রী সাহারা বেগম (৪১), সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের কিশামত হলদিয়া গ্রামের সোলায়মান আলীর স্ত্রী ময়না বেগম (৪৭), ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের কাতলামারি গ্রামের বিশু মিয়ার স্ত্রী শিমুলি বেগম (২৬), সদরের রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের হরিণসিংগা গ্রামের হিরু মিয়ার ছেলে মুনির (৫), একই ইউনিয়নের আরিফ খান বাসুদেবপুর গ্রামের রিজু মিয়ার স্ত্রী আর্জিনা বেগম (২৮), বাদিয়াখালী ইউনিয়নের রিফাইতপুর সরকারেরতারি গ্রামের খগেন্দ্র চন্দ্রের স্ত্রী জোৎস্না রানী (৫৫), পলাশবাড়ী উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়নের কুমেদপুর গ্রামের আবদুল কাদের মিয়ার স্ত্রী মমতা বেগম (৬৪) এবং ফুলছড়ি উপজেলার এরেন্ডাবাড়ী ইউনিয়নের ডাকাতিয়ার চর গ্রামের বারেক মিয়ার ছেলে হাফিজ উদ্দিন (৬৫)। পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের ডাকেরপাড়া গ্রামের জাহানারা বেগম রোববার বিকেল ৩টার দিকে বাড়ি উঠানে সাংসারিক কাজ করছিলেন। হঠাৎ কালবৈশাখী ঝড়ে একটি গাছ উপড়ে পড়লে তাতে চাপা পড়ে জাহানারা ঘটনাস্থলেই মারা যান। বেলা সাড়ে ৩টার দিকে আবদুল গোফ্ফার মোস্তফাপুর বাজার থেকে বাড়ি ফিরছিলেন। তিনি বাড়ির কাছাকাছি পৌঁছলে একটি গাছ তার ওপর উপড়ে পড়ে। এতে তিনি চাপা পড়ে ঘটনাস্থলে মারা যান বলে জানানো হয়েছে বলেন ওসি। ধোপাডাঙ্গা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোখলেছুর রহমান গাছ চাপায় ময়না বেগমের মৃত্যুর খবর জানিয়ে বলেন, বেলা সোয়া ৩টার দিকে কিশামত হলদিয়া গ্রামের ময়না বাড়ির আঙিনায় কাজ করছিলেন। এ সময় বাড়ির একটি গাছ ভেঙে পড়লে চাপা পড়ে মারা যান তিনি। ফুলছড়ি থানার ওসি কাওছার আলী জানান, বেলা পৌনে ৪টার দিকে ফুলছড়ি উপজেলার গজারিয়া ইউনিয়নের কাতলামারি গ্রামের বিশু মিয়ার স্ত্রী শিমুলি বেগম একইভাবে বাড়ির উঠানে কাজ করার সময় গাছ চাপায় মারা যান। মালিবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আলী আজম জানান, গাইবান্ধা সদরের ঢনঢনি পাড়ার সাহারা বেগম ঝড় শুরু হলে খড়ি কুড়াইতে বাড়ির উঠানে যান। এ সময় গাছের ডাল তার মাথায় ভেঙে পড়লে তিনি মারা যান। জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা ইদ্রিশ আলী জানান, ঝড়ে শতাধিক মানুষ আহত হওয়ার খবরও পাওয়া গেছে । জেলার অসংখ্য কাঁচা ঘরবাড়ি ও গাছপালার ক্ষতি হয়েছে। কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তা জরিপ করে দেখা হচ্ছে। এদিকে ঝড়ের শুরু থেকেই জেলার বিভিন্ন এলাকা বিদ্যুৎহীন রয়েছে জানিয়ে পিডিবির নির্বাহী প্রকৌশলী এমদাদুল হক বলেন, ঝড়ে খুঁটি ভেঙে, গাছ পড়ে তার ছিঁড়ে গেছে বিভিন্ন জায়গায়। রাতের মধ্যে জেলা শহরের কিছু কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
কালবৈশাখী ঝড়ে গাছচাপায় ছোটভাই নিহত, আহত বড়ভাই
চাঁদপুরের মতলব উত্তরে ঝড়ের কবলে পড়ে গাছচাপায় শাহাদাত (১৩) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে। এ সময় আহত হয়েছেন তার বড়ভাই সাব্বির (১৮)।
রোববার রাত ৮টার দিকে উপজেলার বেলতলী বাজারে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত শাহাদাত উপজেলার গোপালকান্দি গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে শাহাদাত। আহত বড়ভাই সাব্বিরকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাত ৮টার দিকে শাহাদাত ও সাব্বির বেলতলী বাজারে তাদের ওয়ার্কশপে কাজ শেষ করে বাড়ি ফিরছিল।
পথিমধ্যে প্রচণ্ড ঝড়ে একটি গাছের নিচে চাপা পড়ে দুইভাই।
স্থানীয়রা তাদের মতলব উত্তর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক শাহাদাতকে মৃত ঘোষণ করেন। সাব্বিরের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।