নিখোঁজ হওয়া হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদীর সঠিক সন্ধান এবং কেন্দ্রীয় সহ-অর্থ সম্পাদক মুফতি ইলিয়াস হামিদি সহ আটককৃত নকল নেতাকর্মীর নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানিয়েছেন সংগঠনটির মহাসচিব আল্লামা নুরুল ইসলাম জিহাদী। সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি জানান।
নুরুল ইসলাম জিহাদী বলেন, রোববার হাটহাজারীতে অনুষ্ঠিত হেফাজতে ইসলামের বৈঠক শেষে ঢাকায় ফেরার পথে নারায়ণগঞ্জের মদনপুর থেকে হেফাজতের কেন্দ্রীয় সহ-অর্থ সম্পাদক ও ঢাকা মহানগরের সহ-সভাপতি মুফতি ইলিয়াস হামিদিকে আটক করেছে র্যাব। একই বৈঠক থেকে চট্টগ্রাম যাওয়ার পথে আশ্চর্যজনক ভাবে নিখোঁজ হয়েছেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী। গতরাত থেকে এখন পর্যন্ত তার কোন খবর পায়নি পরিবার। তার মোবাইল -ফোন এবং তার সাথে থাকা ব্যক্তির মোবাইল ফোনও বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকেও তাকে গ্রেপ্তারের কোন খবর পাওয়া যায়নি। মাওলানা ইসলামাবাদী কি গ্রেপ্তার হয়েছেন নাকি তাকে গুম করা হয়েছে তা নিয়ে আমরা চিন্তিত। হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দিয়ে হেফাজত নেতৃবৃন্দকে এভাবে গ্রেপ্তার ও গুম করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
দ্রুত সময়ের মধ্যে গ্রেপ্তার হওয়া সকল নেতৃবৃন্দকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে।
তিনি বলেন, আসন্ন পবিত্র রমজান মাস। রহমত,বরকত ও নাজাতের মাস। এ মাসকে সামনে রেখে ওলামায়ে কেরামকে গ্রেপ্তার ও হয়রানি কোনভাবে সহ্য করা যায় না। দেশের তৌহিদি জনতা এসব সহ্য করবে না। নিরীহ নিরস্ত্র মানুষদের উপর হামলা মামলা বন্ধ না হলে দেশের সর্বস্তরের জনগণ এই জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে বাধ্য হবে।
তিনি আরো বলেন, একজন নাগরিকের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্র, সরকার ও প্রশাসনের দায়িত্ব। রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নিরাপত্তা পাওয়া একজন নাগরিকের নৈতিক অধিকার। প্রায় ১২ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে মাওলানা ইসলামাবাদী নিখোঁজ থাকার ঘটনা রাষ্ট্র কর্তৃক একজন নাগরিকের নিরাপত্তা অধিকারকে চরমভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদী নিখোঁজের দায়ভার রাষ্ট্র, সরকার ও প্রশাসনকেই নিতে হবে।
আল্লামা নুরুল ইসলাম জিহাদী বলেন, আমার জানামতে মুফতি ইলিয়াস হামিদির নামে কোন মামলা নেই। রাষ্ট্র কিংবা সরকার বিরোধী কোন কর্মকা-ের সাথেও তিনি জড়িত নন। এরপরও যাতায়াত পথে গাড়ি আটকে তাকে কেন গ্রেপ্তার করা হলো ? কি অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হলো তা অবশ্যই আমাদেরকে জানাতে হবে। সুনির্দিষ্ট কোন অভিযোগ ছাড়া এভাবে রাস্তাঘাটে আটক করে পরে সাজানো মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হলে তা মেনে নেয়া হবে না।
তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলাম একটি সুশৃঙ্খল দল। হেফাজতের সকল আন্দোলন শান্তিপূর্ণ ও সুশৃঙ্খল। হেফাজতে ইসলামের কোন নেতাকর্মী হামলা, ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ ইত্যাদি কর্মকা-ের সাথে জড়িত নয়। ভাংচুর, অগ্নিসংযোগ ইত্যাদির দায়ভার হেফাজতের উপর দিয়ে নেতৃবৃন্দের নামে মিথ্যা আর হয়রানি বরদাশত করা হবে না। রাতের বেলায় বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে আমাদের নেতাকর্মীদের উপর এভাবে হয়রানি ও মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করা হলে আমরা নিশ্চুপ বসে থাকবো না। এভাবে চলতে থাকলে পরামর্শক্রমে হেফাজতে ইসলাম কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন মহাসচিব আল্লামা নুরুল ইসলাম।