খুলনা অফিস : আবারও মাহামারী করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন নামিদামি বেসরকারী হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক সঙ্কট তৈরি হয়েছে। জীবনের ভয়ে অনেক চিকিৎসক ব্যক্তিগত চেম্বার গুটিয়ে নিয়েছে। এতে করে অন্যান্য রোগের রোগীরা জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন না বলে অভিযোগ রয়েছে। পাশপাশি যে সব চিকিৎসকরা বিভিন্ন বেসরকারী ডায়গনিস্টিক সেন্টার বা ক্লিনিকে রোগীদের চিকিৎসা দেবার জন্য সিরিয়াল নিতেন, তারাও সে সব সিরিয়াল বন্ধ ঘোষণা করেছেন।
খুলনা সবচেয়ে আধুনিক, উন্নত হাসপাতাল খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালেও একই অবস্থা জরুরী ভিক্তিতে নেই কোন রোগীদের কোন সেবার ব্যবস্থা রয়েছে চিকিৎসক সঙ্কট। এমন কি পুর্বের নির্ধারিত সিডিউলের রোগীরাও পাচ্ছে না চিকিৎসকদের সাক্ষাৎ। খুলনা সাত রাস্তা মোড় এলাকার একজন ভুক্তোভোগী রোগীর স্বজন রমজান আলী বলেন, আমার চাচার হার্টের সমাস্যা অনেক আগের থেকে রিং পড়ানো ছিল। হঠাৎ গত ১৪ এপ্রিল বুকে ব্যাথা শুরু হয়, আমি কোন উপায় না দেখে সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসি। কয়েক ঘন্টা অপেক্ষায় থাকার পরও হাসপাতালে কার্ডিওলিজি বিভাগে কোন চিকিৎসক পাওয়া যাইনি। আমি তাৎক্ষণিক বিষয়টি মুঠো ফেনে সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. বিধান চন্দ্র গোম্বীকে অবগত করি। তিনি বলেন আমার ব্যক্তিগত সমস্যা থাকায় আমি হাসপাতালে যাচ্ছিনা। আপনি অপেক্ষা করেন আমি একজন চিকিৎসক পাঠিয়ে দিচ্ছি। তারপরও দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা থাকার পরও কোন চিকিৎসকের দেখা পাওয়া যাইনি। পরবর্তিতে কোন সেবা না পেয়ে ফিরে যেতে হয়েছে।
খুলনা মডার্ণ ফার্নিচারের মোড়ে প্রিন্স আল্ট্রাস্কান এন্ড ডায়াগনিস্টিক সেন্টারে জরুরী ভিত্তিতে আল্ট্রাস্নো গ্রাম করতে এসে ফিরে যাচ্ছেন অনেক রোগী। কারণ করোনা আতঙ্কে ডায়াগনিস্টিক সেন্টারের মালিক আগে থেকে ডায়াগনিস্টিক সেন্টার বন্ধ করে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছেন।
খুলনা বেসরকারী হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনিস্টিক মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. মিজানুর রহমান বলেন, চিকিৎসকদের এমন আচারণ কখনও কাম্য না। কারণ আল্লাহর পর চিকিৎসকদের মানুষ আসন দিয়েছে। তবে বেসরকারী হাসপাতালসহ ক্লিনিকগুলোতে আবারো এমন সমস্যা শুরু হয়েছে বিষয়টি নিয়ে আমি অবগত আছি। তাছাড়া অনেক চিকিৎসক রয়েছে যারা সরকারি হাসপাতালে চাকরি করেন। তাদের সকল বেলা সরকারি হাসপাতালে ব্যস্ত থাকতে হয়। যে কারণে বাইরে চেম্বারে যাচ্ছে না। তাছাড়া অনেকে চিকিৎসক রয়েছেন, যারা জীবনের ঝুকি নিতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। তারপরও এম আচারণ করা ঠিক না। আমরা এবিষয়ে দ্রুত একটি সভা করব এবং প্রতিটি হাসপাতালে যেন চিকিৎসক সার্বক্ষণিক সেবা দেওয়ার জন্য ব্যবস্থা থাকে সে বিষয়টি দেখব।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. রাশেদা সুলতানা বলেন, বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে নিবন্ধন করার সময় তাদেরকে বিভিন্ন নিয়মের বিষয় উল্লেখ্য থাকে। তারা সে নিয়ম মানছে কি মানছে না আমরা তদন্ত করব। পাশাপাশি প্রতিটি বেসরকারী হাপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে নজর রাখব সার্বক্ষণিক মেডিকেল অফিসার আছে কিনা। অন্যান্য রোগের কোন রোগী সেবার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কি না এবং লিখিত কোন অভিযোগ পেলে আমরা সেব ক্লিনিক মালিকদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিব।
Check Also
কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ দেবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন
কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সচিবালয় …