রিমান্ডে থাকা হেফাজাত কমীর মৃত্যু

ফরিদপুরের সালথায় গত ৫ এপ্রিল তাণ্ডবের ঘটনায় ফরিদপুর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে রিমান্ডে থাকাকালীন অবস্থায় আবুল হোসেন (৫০) নামের এক আসামির মৃত্যু হয়েছে।

শনিবার সকাল ৬টায় ডিবি পুলিশের একটি দল ওই আসামিকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ষোষণা করেন।

আবুল হোসেন মোল্যা সালথা উপজেলার সোনাপুর ইউনিয়নের গোপালীয়া গ্রামের মৃত ইমানউদ্দিন মোল্যার ছেলে। তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ের বাবা।

এদিকে, এ মৃত্যুর সংবাদ তার বাড়িতে পৌঁছালে স্বজনদের মাঝে চলছে আহাজারি ও কান্নার রোল।

সূত্র জানায়, আবুল হোসেনকে গত ৫ এপ্রিল রাতে সালথায় সংঘটিত সহিংস ঘটনার জন্য গত ১৬ এপ্রিল গ্রেফতার করে পুলিশ। গত ২৮ এপ্রিল পাঁচ দিনের রিমান্ডে তাকে ফরিদপুর ডিবি কার্যালয়ে নেয়া হয়। সেখানে তার রিমান্ড চলছিল।

গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুনীল কুমার কর্মকারের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশার সঙ্গে কথা বলতে বলেন।

এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল পাশা  বলেন, ডিবির রিমান্ডে থাকা আসামি আবুল হোসেন ভোররাতে সাহরি খেয়েছিলেন এবং অন্য আসামিরর সঙ্গে নামাজ পড়েন। পরে সকাল সোয়া ৫ টার দিকে হঠাৎ শব্দ হলে দায়িত্বে থাকা প্রহরী দেখতে পান আবুল হোসেন বাথরুমে অচেতন হয়ে পড়ে আছেন। তড়িঘরি করে তাকে ফরিদপুর জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

জেনারেলর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক মো. তোফাজ্জেল হোসেন জানান, পুলিশ আবুল হোসেনকে হাসপাতালে নিয়ে এলে পরীক্ষা করে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।

আবুল হোসেনের মেয়ে তানিয়া আক্তার (১৮) কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, আমার বাবা নিরীহ মানুষ। গরুর খামার নিয়ে ব্যস্ত থাকতেন। আমার বাবা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তিনি কোনো অপরাধ করেননি। আমার বাবাকে ওরা রিমান্ডে নিয়া মাইরা ফেলেছে। এর বিচার কার কাছে চাইব। আল্লাহর কাছে বিচার চাওয়া ছাড়া আমাদের আর কে আছে।

সোনাপুর ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি চেয়ারম্যান মো. খায়রুজ্জামান বলেন, মৃত আবুল হোসেন আমার জানামতে ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি একটি গরুর খামার করেছেন। ওই খামার নিয়েই থাকতেন তিনি।

ফরিদপুর পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, এ বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও অপারেশন) জামাল পাশাকে আহ্বায়ক করে চার সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, লকডাউনকে কেন্দ্র গুজব ছড়িয়ে গত ৫ এপ্রিল সালথা উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন সরকারি অফিসে একদল উত্তেজিত জনতা তাণ্ডব চালায়। এ সময় দুটি সরকারি গাড়িসহ বেশ কয়েকটি অফিসে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এ ঘটনায় দুই যুবক নিহত হয়। এ ঘটনায় কয়েক হাজার ব্যক্তিতে আসামি করে ৪টির বেশী মামলা দায়ের করা হয়।

 

Check Also

তাবলীগ জামায়াতের সাদপন্থীদের নিষিদ্ধের দাবিতে সাতক্ষীরায় বিক্ষোভ-সমাবেশ

মুহাম্মদ হাফিজ, সাতক্ষীরা : তাবলীগ জামাতে সাদপন্থীদের বর্বোরিচত হামলার প্রতিবাদ ও সাতক্ষীরা জেলা আ.লীগের সহসভাপতি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।