সাতক্ষীরায় যুবলীগ নেতা বাদশা মিয়ার দু’ দিনের রিমান্ড শুরু: পাইলস ডাক্তারে সহকারী থেকে ভয়ংকার সন্ত্রাসী

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দেখানো হলো গ্রেপ্তার
 ক্রাইমবাতা রিপোট: একটি প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলায় সাতক্ষীরার বহুল আলোচিত বাদশা মিয়াকে দু’ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। একইসাথে তার দু’ সহযোগী এসএম জাহানুর হোসাইন সাগর ও মাসুদ পারভেজকে কারা ফটকে একদিন করে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

রোববার সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম মোঃ হুমায়ুন কবীর ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে তদন্তকারি কর্মকর্তার ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন শুনানী শেষে বিচারক এ আদেশ দেন। একই সাথে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়েরকৃত মামলায় বাদশা মিয়াকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।

সাতক্ষীরা জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইয়াছিন আলম চৌধুরী জানান, ৩০ এপ্রিল বৃহষ্পতিবার কামালনগরের শহীদুলের দোকান থেকে বাদশা এর ডেরা থেকে দু’টি নকল সীল, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব লেখা একটি নকল নোট প্যাড, খুলনা-০২ আসনের মাননীয় সংসদ সদস্য এর নকল ডিও লেটার/প্যাডে ওসি দেলোয়ার হুসেনের নামে লিখিত মিথ্যা অভিযোগ সহ বিভিন্ন প্রকার নিয়োগপত্র এবং জমাজমি সংক্রান্ত কাগজ-পত্র, ওসি দেলোয়ার হুসেনের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনের লিখিত কপি উদ্ধার করা হয়।

এ ঘটনায় পহেলা মে গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মোস্তফা আলম বাদি হয়ে বাদশা মিয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে প্রতারণা ও জালিয়াতির মামলা (জিআর-৩০০/২১ সদর) দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক বাবুল আক্তার তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আদালতে ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। রোববার শুনানী শেষে বাদশা মিয়াকে দু’ দিনের রিমান্ড ও তার দু’ সহযোগী জাহানুর হোসাইন সাগর ও মাসুদ পারভেজকে একদিন করে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবদের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।

তিনি আরো জানান, এ ছাড়া পরিচয় গোপন রেখে অবৈধ আর্থিক লাভের উদ্দেশ্যে প্রতারণাসহ মানহানিকর তথ্য ইলেকট্রিক ডিভাইসের মাধ্যমে প্রচারের অভিযোগে ২ মে বাদশা মিয়ার বিরুদ্ধে গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক আরিফুর রহমান ফারাজি বাদি হয়ে সদর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা (জিআর-৩০৬/২১ সদর) দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মোঃ জিয়াউর রহমান জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওইদিন আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন।

একই সাথে তাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলা গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন জানানো হয়। রোববার বিচারক মোঃ হুমায়ুন কবীর তাকে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে গ্রেপ্তার দেখানোর অনুমতি দেন। দবে রিমান্ড আবেদন আদালতে এসে পৌঁছায়নি।

প্রসঙ্গত, পহেলা মে শনিবার ভোরে সাতক্ষীরার বহুল আলোচিত কথিত ডাক্তার শহরের পলাশপোলের বাদশা মিয়াকে বাইপাস সড়ক সংলগ্ন শফিকুল ইসলামের ফাস্ট ফুডের দোকানের পাশ থেকে একটি পিস্তল ও দু’ রাউন্ড গুলিসহ গ্রেপ্তার করা হয়। এ ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মহসিন আলী তরফদার বাদি হয়ে ওই দিনই সদর থানায় অস্ত্র আইনে মামলা (জিআর-২৯৯/২১ সদর) দায়ের করে তদন্তকারি কর্মকর্তা উপপরিদর্শক আরিফুর রহমান ফারাজি তাকে জিজ্ঞাবাদের জন্য আদালতে সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। পরদিন শুনানী শেষে মুখ্য বিচারিক হাকিম মোঃ হুমায়ুন কবীর তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। রিমান্ড শুনানী শেষে তাকে বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়।

পহেলা মে শনিবার বিকেল তিনটায় সাতক্ষীরা পুলিশ সুপার মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান তার কার্যারয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে গ্রেপ্তারকৃত বাদশা মিয়ার প্রতারনার বিভিন্ন কাহিনী তুলে ধরেন। তিনি বলেন, প্রতারণাসহ হাফ ডজন মামলার আসামী বাদশা’র বিরুদ্ধে গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক মহসিন আলী বাদি হয়ে শনিবার অস্ত্র আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় বাদশা মিয়ার সহযোগী শহরের ইটাগাছার জাহানুর হোসাইন সাগরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ছাড়াও তার বিরুদ্ধে আরো মামলার প্রস্তুতি চলছে।

Check Also

তাবলীগ জামায়াতের সাদপন্থীদের নিষিদ্ধের দাবিতে সাতক্ষীরায় বিক্ষোভ-সমাবেশ

মুহাম্মদ হাফিজ, সাতক্ষীরা : তাবলীগ জামাতে সাদপন্থীদের বর্বোরিচত হামলার প্রতিবাদ ও সাতক্ষীরা জেলা আ.লীগের সহসভাপতি …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।