প্রফেসর ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ
প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের কবলে পড়ে স্থবির হয়ে পড়েছে সারা পৃথিবী। এ ভাইরাস মোকাবিলা করতে হিমশিম খাচ্ছে বর্তমানে বিশ্ব। বাংলাদেশেও এর প্রভাব পড়েছে ব্যাপক হারে। ঘরে খাবার নেই, তবুও মধ্যবিত্তদের অনেকেই চক্ষুলজ্জায় মানুষের কাছে সাহায্য চাইতে পারছেন না। নিজেদের পরিস্থিতি বাইরের কাউকে তারা জানাতেও পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে নীরবে কেঁদে চলেছেন দেশের কয়েক কোটি মধ্যবিত্ত। প্রকৃতপক্ষে মধ্যবিত্তের তেমন কোনো সঞ্চয় থাকে না। যেটুকু জমা করেছিল, তা এক বছরের বেশি সময়ের করোনকালে সেই সঞ্চয় ভেঙে খেয়ে এখন নিরুপায়। বিপুলসংখ্যক মধ্যবিত্ত এই পরিস্থিতিতে নিম্নবিত্তে পরিণত হচ্ছেন। এমন পরিস্থিতিতে লকডাউনের আওতার ভেতরেই চলে এলো ঈদুল ফিতর। ঈদুল ফিতর মানেই অন্যরকম নতুন পোশাকের ব্যবহার। মিষ্টি-মিষ্টান্নের উৎসব। অথচ এবারে ঈদে অধিকাংশ মানুষের চোখে-মুখে হতাশা ছাড়া আর কিছু নেই। তবুও মহান আল্লাহর ওপর ভরসা করেই ঈদ উদযাপনের প্রস্তুতি চালিয়ে যেতে হচ্ছে।
রাসূলুল্লাহ সা.-এর হিজরতের পরপরই মুসলমান সংস্কৃতিতে ঈদ উৎসবের সূচনা হয়। জমি-জমা, ধন-সম্পদ, ঘরবাড়ি সব ছেড়ে মক্কার মুসলমানগণ রাসূলের সাথে মদীনায় হিজরত করেন। নিজের কোনো কিছুই আনতে পারেননি। নিঃস্ব মানুষগুলো আনসারদের জমিতে বসবাস করতে থাকলেন। জাগতিকভাবে কষ্টেই ছিলেন তাঁরা। সুখ-শান্তি-আনন্দ ছিল তাদের ধরাছোঁয়ার বাইরে। মদীনাবাসীরা তখন শরতের পূর্ণিমায় নওরোজ এবং বসন্তের পূর্ণিমায় মিহিরজান নামে দু’টি উৎসব পালন করতো। উৎসব দু’টি প্রথমে ৬ দিনব্যাপী এবং পরবর্তীতে ৩০ দিনব্যাপী পালন করা হতো। নওরোজ ছিল নববর্ষ বরণের উৎসব। মিহিরজান ছিল পারসিকদের অনুকরণে আনন্দ উৎসব। জাহেলি ভাবধারা, স্বভাব, প্রকৃতি ও ঐতিহ্যানুযায়ী এ দু’টি উৎসব উদযাপিত হতো। অশালীন আনন্দ-উল্লাস, কুরুচিপূর্ণ রঙ-তামাশা ও হৈ-হুল্লোড় হতো এসব অনুষ্ঠানে। সমাজের বিত্তশালীরা নানা ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হয়ে এ উৎসব পালন করতো। নারী-পুরুষের অবাধ মিলনকেন্দ্র ছিল এসব উৎসব। রাসূলুল্লাহ সা. এসব আনুষ্ঠানিকতা দেখে দারুণভাবে ব্যথিত হন এবং উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি মদীনাবাসীকে এসব অশালীন অন্তঃসারশূন্য ও লক্ষ্যহীন উৎসব পালন করা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান। এর পরিবর্তে তিনি স্বমহিমা ও নির্মল আনন্দে ভাস্বর পবিত্র স্পর্শম-িত বহুবিধ কল্যাণধর্মী ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা নামে দু’টি উৎসব পালনের জন্য নির্ধারণ করে দেন। সেদিন থেকে জাহেলিয়াতপূর্ণ ইসলাম পরিপন্থী নওরোজ ও মিহিরজান উৎসব বন্ধ করা হয় এবং তদস্থলে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উৎসবের প্রচলন করা হয়। এ সম্পর্কে হাদীস শরীফের ভাষ্য হলো, আনাস রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন- নবী করীম সা. যখন মদীনায় উপস্থিত হলেন, তখন তিনি দেখতে পেলেন মদীনাবাসীরা দু’টি জাতীয় উৎসব পালন করছে। আর এ ব্যাপদেশে তারা খেল-তামাশার আনন্দ-অনুষ্ঠান করছে। নবী করীম সা. তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, তোমরা এই যে দু’টি দিন উৎসব পালন কর, এর মৌলিকত্ব ও তাৎপর্য কী? তারা প্রতিউত্তরে বললো, ইসলামের পূর্বে জাহেলিয়াতের যুগে আমরা এ উৎসব এমনি হাসি-খেলা ও আনন্দ-উৎসবের মাধ্যমেই উদযাপন করতাম, এখন পর্যন্ত তাই চলে আসছে। এ কথা শুনে নবী করীম সা. বললেন, আল্লাহ তায়ালা তোমাদের এ দু’টি উৎসব দিনের পরিবর্তে তদুপেক্ষা অধিক উত্তম দু’টি দিন ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা দান করেছেন। অতএব পূর্বের উৎসব বন্ধ করে এ দু’টি দিনের নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানাদি পালন করতে শুরু কর।” নওরোজ-মিহিরজান আর আমাদের দুই ঈদের মধ্যে মূল যে পার্থক্য তা হলো- ওদের অনুষ্ঠান দু’টি ছিল অশ্লীলতায় ভরপুর আর ধনিকশ্রেণির জন্য পালনীয়। অপরদিকে আমাদের ঈদ হলো অশ্লীলতামুক্ত এবং ধনী-দরিদ্রের ব্যবধানমুক্ত। সেই থেকে ঈদ উৎসব আমাদের প্রাণের উৎসবে পরিণত।
ঈদ মানেই আনন্দ এবং খুশির উৎসব। নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা ‘ঈদুল ফিতর’কে মুসলমানদের জন্য আনন্দ-উৎসবের দিন হিসেবেই স্বীকৃতি দিয়েছেন। বাৎসরিক আনন্দের বিশেষ দিবস হিসেবে মনোনীত করেছেন। এমনকি এ বিষয়টিও শরিয়তে স্বীকৃত ও প্রমাণিত যে, এই দিনে কোনো উত্তম থেকে উত্তম পোশাক কেউ যদি সহজে লাভ করতে পারে, সে যেন তা পরিধান করে। ফলে ঈদ উৎসবে এক ধরনের কেনাকাটা এবং খরচাপাতির একটা সংস্কৃতি আমাদের মধ্যে প্রবহমান। কিন্তু এ বছর অধিকাংশ মানুষের পকেটের অবস্থাই নাজুক। লকডাউন এবং করোনা সতর্কতার কারণে অর্থনৈতিক মন্দা চলছে সর্বত্র। এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে পুঁজিবাজারের সঙ্গে জড়িত লাখ লাখ বিনিয়োগকারীদের যাপিত জীবনে। করোনার প্রভাবে এবার অধিকাংশ বিনিয়োগকারী, কাছে ঈদ আনন্দ বিবর্ণ হয়ে পড়েছে। বিনিয়োগকারীদের অনেকেরই এটাই সম্বল। সেজন্য তাদের সবসময়ই পুঁজিবাজারের দিকে তাকিয়ে থাকতে হয়। কারণ এই আয় দিয়েই তারা সংসার চালান। কিন্তু করোনা ভাইরাসের ছোবলে পড়ে প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে তাদের আয়-রোজগার। ফলে ঈদ-উৎসব তাদের জন্য বিবর্ণ হয়ে আসছে। এমন ব্যক্তিও আছেন যে, সরকারি চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের পর পেনশনের প্রায় সব টাকাই পুঁজিবাজারে নিয়ে এসেছেন। বর্তমানে তাদের আর কোনো আয় নেই। দীর্ঘদিন আয়ের পথ রুদ্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে চলে এসেছে ঈদ। অর্থ না থাকায় এবারের ঈদ অন্যবারের মতো হবে না। কিছু করারও নেই। এমন হতাশা অনেকের চোখে-মুখে।
ঈদের বাজারে বিনিয়োগকারী ব্যবসায়ীরাও পড়েছেন মহাবিপাকে। কোনো ধরনের কোনো আয় নেই। দোকানের কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছেন না। দোকান খরচ, শ্রমিক মজুরি দিতে পুঁজিতে হাত পড়েছে। ফলে অনেকেই কর্মচারীকে বাদ দিয়ে দিয়েছেন। ছাঁটাইকৃত কর্মচারীদের সংসার চলার কোনো উপায় নেই। সেলিম হোসেন দর্জির কাজ করেন। তিন মেয়ে নিয়ে কোনোমতে সংসার চলে তাদের। করোনায় স্বামী-স্ত্রীর কোনো কাজ না থাকায় তীব্র খাবার সংকটে পড়েছেন এই দম্পতি। সেলিম হোসেন বলেন, নিরুপায় হয়ে তিনি স্থানীয় থানার ওসিকে ফোন দিয়েছিলেন। ওসি অপারগতা প্রকাশ করেন। পরে ওই এলাকার কাউন্সিলর কিছু সাহায্য দেওয়ার আশ্বাস দিলেও চারদিনেও কিছু পাননি। পরে একটি বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তাদের কিছু সাহায্য দিয়েছে। কাপড়ের দোকানদার ও টেইলার কাটার মাস্টার হেলাল বলেন, এবারের ঈদের মতো সাদামাটা ঈদ জীবনে কখনো উদযাপন করিনি। হেলাল বলেন, আমি কোনোভাবেই কর্মচারীদের বেতন দিতে পারব না। নিজেই খাওয়ার জন্য এক আত্মীয়ের কাছ থেকে কিছু টাকা ধার করেছি। এখনও বাড়ি ভাড়া দিতে পারিনি। মালিক চাপ দিচ্ছে। চার সদস্যের পরিবার নিয়ে খুবই সংকটে আছি। এই অবস্থায় কীসের ঈদের আনন্দ বলুন! সত্যি এ ধরনের লাখো হেলালের জন্য ঈদের আনন্দ বিবর্ণ রূপ ধারণ করেছে।
করোনার মারাত্মক হামলায় মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ নেমে যাচ্ছেন নিম্নবিত্তের কাতারে। তাদের সংসার চালানোর মতো পয়সা নেই। যারা ভাড়া বাড়িতে থাকেন, তারা বাড়ি ভাড়া পরিশোধ করতে পারছেন না। জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে ছোটখাটো বেসরকারি চাকরিজীবীদের। বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মরতদের অনেকে বেতন পাচ্ছেন না। সঞ্চিত অর্থ শেষ, অনেকেই চাকরি হারিয়েছেন। বাকিরা আছেন চাকরি হারানোর শঙ্কায়। সরকারের কোনো প্রণোদনার মধ্যেও নেই তারা। ফলে করোনাকালীন চলমান লকডাউনের মধ্যে মহাসংকটে পড়েছেন বাংলাদেশে গৃহবন্দি কয়েক কোটি মধ্যবিত্ত। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, এইসব পরিবারের অনেকেই এখন নিম্নবিত্তের স্তরে নেমে আসছেন। বাংলাদেশে ১৬ কোটি মানুষের চার কোটি পরিবার আছে। এর মধ্যে নিম্নবিত্ত ২০ ভাগ আর উচ্চবিত্ত ২০ ভাগ। মাঝের যে ৬০ ভাগ এরা নিম্ন, মধ্য ও উচ্চ মধ্যবিত্ত। এই সংখ্যা আড়াই কোটি পরিবার হবে। এর মধ্যে সরকারি চাকরিজীবী, মাল্টিন্যাশনাল ও বড় কোম্পানিতে কাজ করা কিছু মানুষ বাদে অন্যরা সবাই সংকটে আছেন। এদের মধ্যে বড় একটা অংশ চাকরি ঝুঁকিতে আছেন। অনেকেরই বেতন হয়নি, অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। ফলে তারা বেতন তো পাননি, উল্টো চাকরি ঝুঁকিতে আছেন। এই মানুষগুলো সরকারি কোনো কর্মসূচির মধ্যেও নেই। বিপুল জনগোষ্ঠী এখনো সহায়তার বাইরে। সবচেয়ে বড় সংকট হচ্ছে এখন বিপুলসংখ্যক মানুষ চাকরি হারাচ্ছেন। উন্নত দেশে তো বেকার ভাতা দেওয়া হয়। এখানে সেই ব্যবস্থা নেই। তাহলে এই মধ্যবিত্ত বেকার শ্রেণি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? সরকারের যে প্রণোদনা, সেখানেও কিছু মধ্যবিত্তের কোনো অবস্থান নেই। আসলেই বাংলাদেশে মধ্যবিত্তরা ভয়াবহ সংকটে আছেন।
ঢাকায় থাকেন জসিম উদ্দিন ও ফাতেমা দম্পতি। একটি ‘ল্যান্ড ডেভেলপমেন্ট’ কোম্পানিতে চাকরি করেন জসিম। তার স্ত্রী ফাতেমা একটি বেসরকারি স্কুলে চাকরি এবং টিউশন করে সংসার চালান। কিন্তু করোনা পরিস্থিতির কারণে তিনি বেতন পাচ্ছেন না। জসিম অর্ধেক বেতন পেয়েছেন। কোনোমতে চলছে সংসার, কিন্তু এখনো বাসাভাড়া মেটাতে পারেননি। সামনের মাসে বেতন দিতে পারবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে তার চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান। এমনকি চাকরি থাকবে কি না, তা নিয়েও রয়েছে অনিশ্চয়তা। এপ্রিল মাসের বেতন না পেলে ঢাকা ছেড়ে গ্রামে চলে যাওয়া ছাড়া উপায় নেই পরিবারটির। তাদের মতো অনেকেই আছেন চাকরি হারানোর এমন আতঙ্কে। এমতাবস্থায় তাদের পরিবারে ঈদের খুশি ফুটিয়ে তোলা অনেক কষ্টের বৈকি। এমন পরিস্থিতিতে বিত্তশালীদের অনেক কিছু করণীয় আছে এবারের ঈদে।
আমরা ভালো করেই জানি যে, ঈদ মুসলমানদের ধর্মীয় উৎসব হলেও এটি ন্যায়, সাম্য ও মানবতাবোধের প্রেরণায় উজ্জীবিত হবার একটি সর্বজনীন উৎসব। ঈদ উপলক্ষে সবার মাঝে একটি সাজ সাজ রব পড়ে যায়। ধনী-দরিদ্র সবাই কমবেশি ঈদের নতুন জামাকাপড় ক্রয় করে। গরিবদের সামর্থ্য না থাকলে সামর্থ্যবানরা ফিতরা এবং অন্যান্য দানের মাধ্যমে তাদের ঈদ উৎসবকে প্রাণবন্ত করতে সাহায্য করে। এমনকি বিত্তশালীরা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে নতুন জামা কাপড় ক্রয়ে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়। ঈদের মাঠে এবং ঈদ-উৎসবে তাই ধনী-দরিদ্র সকল মানুষের পরনে নতুন কাপড়ের এক অনন্য ঘ্রাণ বেরিয়ে আসে। মূল্যের তারতম্য থাকলেও নতুনের সাজে সেজে ওঠে পাড়া-মহল্লা। আতরের মৌ মৌ গন্ধ আর সাম্য ন্যায় ও মানবপ্রেমের এ এক অসাধারণ আনন্দঘন দৃশ্য। ঈদ উপলক্ষে ‘উত্তম পোশাকের’ অজুহাতে যে অসীম-অগণিত বেহুদা খরচের জোয়ার সৃষ্টি করা হয়, অন্যায়-অপব্যয়ের যে মহাপ্লাবন বইয়ে দেওয়া হয় এবং সেটাকে ঈদের অপরিহার্য অনুষঙ্গ বলে মনে করা হয়, তার সঙ্গে দীন ও শরিয়তের কোনো সম্পর্ক নেই। হালাল উপার্জনের মাধ্যমে পরিবারের সবার চাহিদা ও আবদার পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না এবং বৈধ টাকা-পয়সা তার জন্য পর্যাপ্ত হচ্ছে না, তখন সে অবৈধ পথের সন্ধান করে। বিভিন্ন পন্থায় অন্যের পকেট মেরে টাকা-পয়সার ব্যবস্থা করে। যা দ্বারা সেই লাগামহীন চাহিদা ও অন্তহীন কুপ্রবৃত্তির পেট ভর্তি করে। অসহায় মানুষের দিকে হাত না বাড়িয়ে লাখ টাকার পোশাক-আশাকে আবৃত করে নিজেকে গর্বিত মনে করা ঈদ উৎসবের অংশ হতেই পারে না। তাই করোনাকালীন এ ঈদে সামর্থ্যবানদের দায়িত্ব অনেক বেশি। কষ্টে থাকা অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে মানবিকতার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে।
পরিশেষে বলা যায়, সিয়াম আমাদের বিশ্বাসের অন্যতম প্রধান স্তম্ভ। নিজেদের সত্যিকার মানবিক অনুভূতিসম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়বার জন্য এর যথার্থতা অনস্বীকার্য। তাই তো এ বিধানকে সকল ধর্মেই বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এর মাধ্যমে মানবিক গুণে গুণান্বিত হয়ে পবিত্র ঈদ উদযাপনের মধ্য দিয়ে সামাজিকভাবে ন্যায়, সাম্য ও মানবতাবাদের সত্যিকার রূপ ছড়িয়ে দেয়াই এ উৎসবের উদ্দেশ্য। পবিত্র কুরআনের বিধান শুধু মুসলমানের জন্য নয়, বরং এটি একটি সর্বজনীন জীবনবিধান। জাতি-ধর্ম-বর্ণ-নির্বিশেষে পৃথিবীর সকল মানুষই এ গ্রন্থকে ঘিরে নিজেকে সত্যিকার মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন মানুষ হিসেবে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। তবে মুসলমানদেরই এর উজ্জ্বল সাক্ষী হিসেবে আগে দাঁড়িয়ে যেতে হবে, যেমনটি দাঁড়িয়ে যেতে সক্ষম হয়েছিলেন ইতিহাসের সোনালি যুগের মুসলমানরা। মানবিকতার অনন্য নজির হিসেবে সর্বজনীন ঈদ উৎসব উপস্থাপিত হোকÑ এ প্রত্যাশা আমাদের সকলের।
লেখক: কবি ও গবেষক; প্রফেসর, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।
Check Also
আশাশুনির খাজরা ইউনিয়নের খালিয়া রাস্তার বেহাল দশা।। বিপত্তিতে শতাধিক পরিবার।।দ্রুত সংস্কার দাবি
এস,এম মোস্তাফিজুর রহমান,আশাশুনি।।আশাশুনি উপজেলার খাজরা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড খালিয়া গ্রামের সানাপাড়ার প্রায় শতাধিক পরিবার একটি …