সব্যসাচী বিশ্বাস, ইউনিয়ন প্রতিনিধি (অভয়নগর)যশোর :
যশোরের অভয়নগর উপজেলার ৮নং সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নের ধুলগ্রাম হাসপাতাল খেয়া ঘাটের নিকটে ফুলতলা উপজেলা হাসপাতালের পার্শ্বে অবারও ৩ মালিকের ৩০-৩৫টি চুল্লিতে কাঠপুড়িয়ে কয়লা উৎপাদন শুরু করেছে বলে খবর পাওয়া গেছে।
সরেজমিনে শনিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, একই জায়গায় পাশাপাশি ৩ মালিকের প্রায় ৩ডজন চুল্লিতে কাঠপুড়িয়ে কয়লা উৎপাদনের কাজ চলমান রয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক শ্রমিক জানালেন, মজিদ হওলাদারের ছেলে ফারুক হাওলাদারের ১০টি চুল্লির দেখাশোনা করেন তিনি। বর্তমানে নদী পথে এ সব কয়লা বিক্রি হচ্ছে।
দেখাগেছে একই এলাকার মৃত তোরাব সরদারের ছেলে হরমুজ সরদার ১৫ টি চুলার মালিক। চুলায় কয়লা পোড়ানোর কাজ চলছে। খোজ নিয়ে জানা গেছে ৩ বার প্রসাশনের অভিযানের পরও তার চুলা বহাল তবিয়তে চলছে।
অন্যদিকে একই জায়গায় মৃত সৈয়দ আলী সরদারের ছেলে রোকছেদ সরদারের রয়েছে ১০ টি চুলা। যে চুলা গুলা সবই চলমান রয়েছে। নির্ভর যোগ্য সূত্রের তথ্য মতে জানা গেছে স্থানীয় কয়েকটি প্রিন্ট ও অনলাইন গণমাধ্যমে একাধিক বার কাঠ কয়লা চুল্লির সংবাদ প্রকাশ হওয়ার পর একাধিক চুলার মালিক কয়লা উৎপাদন সাময়িক বন্ধ রাখলেও নতুন করে প্রশাসন ম্যানেজ করে! কথিত এই ৩ মালিক নব উদ্যমে শুরু করেছে কয়লার উৎপাদন। ফলে বৃক্ষ নিধন ও পরিবেশ বিপর্যয়ের আশংকা করছেন সচেতন মহল।
প্রকৃত পক্ষে, দেখা গেছ কয়লার ধোঁয়ায় এলাকা ধূষর থাকে সর্বক্ষন। অসম্ভব যন্ত্রনাভোগ করছে পথচারি ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
পথচারি আযুব আলি জানালেন, ধোঁয়ার জন্য এই ঘাট দিয়ে পারাপার বন্ধ করে দিয়েছে শতশত মনুষ। একমাত্র বিপদে না পড়লে আমরা এই ঘাট পার হইনা। স্থানীয় আমজাদ হোসেন (৬৫) জানালেন ধোয়ার কারনে সে শ্বাস কষ্টের রুগিতে পরিনত হয়েছে।
অভয়নগর উপজেলার সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নের ধুলগ্রাম হাসপাতাল খেয়াঘাটে প্রশাসনকে এ ভাবে চ্যলেঞ্জ করে কথিত এই ৩ মালিক একটি স্বার্থান্বেষী প্রভাবশালী মহল ও প্রশাসন ম্যানেজ করে ফের কয়লার চুল্লি চালু করার অভিযোগ প্রকাশ্য আসতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, একাধিকবার প্রশাসন এসকল চুল্লি ভেঙ্গে দিলেও রাতারাতি প্রশাসনকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বারবার এ ব্যবসা চালু করায় স্থানীয়দের মাঝে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সেই সাথে শুরু হয়েছে নানামুখি সমালোচনা। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলে আক্রান্ত এই কৃত্রিম ধোঁয়ায়। তারপরও বন উজাড় করে পুনরায় কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি হচ্ছে দেদারছে। জানা গেছে, চলতি বছরের শুরুর দিকে ও পরে বেশ কয়েকবার পরিবেশ অধিদপ্তর ও উপজেলা প্রশাসন একাধিক অভিযানে চুল্লিগুলি ভেঙ্গে দেয়ার পরও আবার নতুন করে কাঠ পুড়ানোর কাজ শুরু হয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, পরিবেশ দূষণের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন এলাকাবাসী। অসাধু চক্রের ভয়ে মুখ খুলতে পারছেন না অনেকে। তাদের মতে, প্রশাসন যদি জোরালো কোনো ভূমিকা রাখে তাহলে হয়তো এই গাছ কেটে কয়লা তৈরি চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে।