সব্যসাচী বিশ্বাস, অভয়নগর,যশোরঃ
বিশাল আকারের কৃষি ও মৎস্য প্রকল্প সংকটের মুখে। অভয়নগর উপজেলার চলিশিয়া ইউনিয়নের বলারাবাদ গ্রামের বিলে ১৭৮ বিঘা জমিতে রয়েছে কুমোর ঘাঁড়ে কৃষি ও মৎস্য প্রকল্প।
তীব্র তাপদাহের ফলে অক্সিজেন সংকট দেখা দেওয়ায় প্রকল্পটিতে চাষকরা প্রায় ৩৫ লাখ টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মরে ভেসে উঠেছে। এ অবস্থায় প্রকল্পের সদস্যরা উপজেলা মৎস্য অফিসের মাধ্যমে সরকারি সহযোগিতা কামনা করেছেন। রবিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মৎস্য প্রকল্পের উচু অংশটি শুকিয়ে গেছে। নিচু অংশে বিভিন্ন প্রজাতির হজার হাজার ছোট-বড় মাছ মরে ভেসে রয়েছে। মৃত মাছের দূর্গন্ধে প্রকল্পের সদস্যদের চোখ ভারি হয়ে উঠেছে। হাজার হাজার জীবিত মাছ প্রাণ বাঁচাতে পানির উপরে অক্সিজেন নেয়ার চেষ্টা করছে।
কিন্তু তীব্র খরায় মাছগুলো অল্প সময়ের মধ্যে মরে ভেসে উঠছে। আনুমানিক ৩০ জন শ্রমিক মাছ উদ্ধারের কাজ করছে। এ ব্যাপারে প্রকল্পের সভাপতি কামরুল হাসানের সাথে কথা হলে তিনি জানান, শনিবার দুপুরের পর থেকে মাছ ভাসতে শুরু করে। বিকালের মধ্যে বিভিন্ন প্রজাতির হাজার হাজার মাছ মারা যায়। রবিবার লাখ লাখ মরা মাছ ভেসে উঠে। দুই দিনের মধ্যে প্রকল্পের ৩৫ থেকে ৩৮ লাখ টাকা মূল্যের বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মারা গেছে। মরা মাছ মাটি চাপা দেয়া হয়েছে।
প্রকল্পের সাথে জড়িত মৎস্য চাষিরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এ অবস্থায় কি করতে পারি, কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। প্রকল্পটির ভবিষ্যত হুমকির মুখে পড়ে গেছে। সরকারি সহযোগিতা না পেলে প্রকল্প বন্ধ হওয়া সহ সদস্যরা নিঃশ্ব হয়ে যেতে পারে। উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. ফারুক হোসাইন সাগর জানান, বর্তমানে যশোর জেলায় চলছে তীব্র তাপদাহ।
এ পরিস্থিতির মধ্যে মৎস্য ঘেরে অতিরিক্ত পানি সরবরাহ করতে হবে। পানির প্রবাহ রেখে অক্সিজেন সরবরাহ ঠিক রাখতে হবে। চলিশিয়া ইউনিয়নের কুমোর ঘাঁড়ে মৎস্য প্রকল্পে যেভাবে মাছ মরেছে তার কয়েকটি কারণ থাকতে পারে- অধিক পরিমানে মাছ মজুদ করা, পানির গভীরতা কম, তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে অক্সিজেন ঘাটতি।
এছাড়া পানির তলদেশে পচা কালো মাটি জমে থাকার কারণে ক্ষতিকর গ্যাস তৈরী হয়ে এমনটি হতে পারে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রকল্পের পক্ষ থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে মৎস্য অফিসে যোগাযোগ করলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে বলে তিনি জানান।
ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্চাষীগণ মনে করছেন, বৃষ্টির পানির আশায় থেকে আজ অবধি এই পরিস্থিতি। যদি কৃত্রিম পানি সরবরাহের ব্যবস্থা সম্ভব হতো তাহলেও কিছুটা বিশাল ক্ষতির হাত থেকে কৃষি ও মৎস প্রকল্পটি বাঁচানো যেত।