দেবহাটায় ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষয়ক্ষতি ও দুর্ভোগ বাড়াতে পারে সড়কের দুপাশে মরা রেইনট্রি গাছ

  1. দেবহাটা ব্যুরো: পূর্ব-মধ্য বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট সুষ্পষ্ট লঘুচাপটি আরও ঘণীভূত হয়ে ইতোমধ্যেই নি¤œচাপে পরিণত হয়েছে। সেটি শীঘ্রই আরও শক্তি সঞ্চয় করে ঘূর্ণিঝড় ‘ইয়াস’ এ পরিণত হয়ে আগামী ২৫ মে মধ্যরাত থেকে ২৬ মে সন্ধ্যার মধ্যে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা ও খুলনা এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও উড়িষ্যার উপর দিয়ে প্রবল বেগে আঘাত হানতে পারে বলে শঙ্কা আবহাওয়াবিদদের।
    ফলে বিগত বছরের আম্পানের চেয়ে ইয়াস এর তান্ডবে বেশি ক্ষয়ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে বলেও ধারনা সংশ্লিষ্ট আবহাওয়া অধিদপ্তরের। এবারের ঘূর্ণিঝড়ে সাতক্ষীরার দেবহাটাসহ আশপাশের এলাকাগুলোতে ক্ষয়ক্ষতি ও দুর্ভোগের অন্যতম কারণ হয়ে উঠতে পারে সাতক্ষীরা-কালীগঞ্জ সড়কের দুপাশে কঙ্কাল রূপে দাঁড়িয়ে থাকা অসংখ্য মরা রেইনট্রি জাতের গাছ।
    দীর্ঘদিন মরা অবস্থায় রোদ-বৃষ্টিতে দাঁড়িয়ে থাকা এসব গাছের ডালপালা শুকিয়ে প্রতিনিয়ত সামান্য বাতাসেই ভেঙে পড়ছে সড়কে। গাছ থেকে আচমকা রাস্তার ওপর ডালপালা ভেঙে পড়ায় আহত হচ্ছেন পথচারীরা, ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনাও। জায়ান্ট মিলিবাগসহ বিভিন্ন প্রজাতির পোকামাকড় ও ছত্রাকের আক্রমন, চলন্ত গাড়ির সাথে গাছ ও ডালপালার ধাক্কা এবং রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা সড়ক ও জনপথ বিভাগের অযতœ-অবহেলায় দেবহাটার কুলিয়া, সেকেন্দ্রা, পারুলিয়া, সখিপুর মোড়, গাজীরহাট এলাকায় সড়কের দুপাশে মরে কঙ্কাল রূপে দাঁড়িয়ে আছে শতাধিক রেইনট্রি গাছ।
    ঘূর্নিঝড় ইয়াস সাতক্ষীরা উপকূলে আঘাত হানলে এসব মরা রেইনট্রি গাছ ভেঙে পড়ে সাতক্ষীরা-কালীগঞ্জ সড়কের যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যাহত হতে পারে বলে ধারণা সর্বসাধারণের। একইসাথে ওইসব মরা গাছের আশপাশে থাকা বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানও ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
    দেবহাটা উপজেলা কৃষি অফিসার শরীফ মোহাম্মদ তিতুমীর বলেন, জায়ান্ট মিলিবাগ পোকারা ছিদ্রাকার ও শোষক প্রকৃতির। মুখোপাঙ্গ থাকায় এরা গাছ থেকে রস শোষণ করে। পোকামাকড় ছাড়াও বিভিন্ন ছত্রাকের আক্রমন সহ নানা করনে সড়কের দুপাশের রেইনট্রি গাছগুলো সম্ভবত মারা যেতে পারে। ঘূর্নিঝড়ে এসব মরা গাছগুলো জণজীবনে আরোও বেশি ক্ষয়ক্ষতির কারন হতে পারে। বর্ষা মৌসুমের আগেই এসব মরা গাছগুলো অপসারণ করা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিৎ ছিল বলেও মনে করেন তিনি।
    দেবহাটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাছলিমা আক্তার বলেন, সড়কের দুপাশে মরা গাছগুলো অপসারণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের টেন্ডার প্রক্রিয়া বেশ সময়সাপেক্ষ। সেজন্য বিলম্বিত টেন্ডার প্রক্রিয়ার আগেই গাছগুলো অপসারণ করে সংরক্ষনের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে।
    এদিকে এখনও সড়ক ও জনপথ বিভাগের পক্ষ থেকে কোন পদক্ষেপ না নেয়ায় এবং ঘূর্ণিঝড় ইয়াস এর মতো বড় ধরনের প্রাকৃতিক দূর্যোগ অচিরেই আঘাত হানার সম্ভাবনা থাকায় জানমালের নিরাপত্তা ও ক্ষয়ক্ষতি হ্রাসে দ্রæত সময়ের মধ্যে এসব ঝুঁকিপূর্ণ মরা রেইনট্রি গাছ গুলো কেটে অপসারনের উদ্যোগ নিতে জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন সর্বস্তরের মানুষ।

Check Also

কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ দেবে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন

কুমিল্লা ও ফরিদপুরকে বিভাগ করার সুপারিশ করতে যাচ্ছে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন। মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সচিবালয় …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।