সব্যসাচী বিশ্বাস অভয়নগর যশোর:
খরা, তাপ প্রবাহ গত দুই তিন মাস, বৃষ্টির দেখা মেলে না গত আট মাস প্রায়। পানির লেয়ার নিচে নেমে প্রায়ই সব টিউবওয়েল পানি শুন্য মনে হয়েছে। পুকুরে এতটুকু পানি ছিলো না। কাট ফাটা রোদ্দুরে আর গরমে হাফিয়ে উঠেছিল প্রাণীকুল। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক, জমিতে চাষ দিয়ে নতুন বীজ বপন- রোপনের কাজ করতে পারিনি এবার।
এই সময়ে মাঠে মাঠে থাকে পাটের চারা, ধানের চারা, সেখানে এখন ধু ধু করছিলো।
আজ সকালেও মনে হয়ছিলো এবছর আর বৃষ্টি হবে না। আজ যেন আশীর্বাদ এলো আকাশ থেকে। বেশ মেঘ আকাশে বেলা পৌনে একটার দিক থেকে। দেড়টার দিকে নামলো ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি। কৃষকেরা নিজের ঘরের বারান্দায় বসে উপভোগ করছে এই বৃষ্টি। মনে মনে স্বপ বুনছে নতুন বীজ মাটিতে দেওয়ার।
মৎস চাষির মুখে আবার হাসির বন্যা। ঘের পুকুর জলে ভরবে মাছের আবাসে স্বস্তি আসবে। মাছের চারা ঘেরে ছাড়বে এমনি কত স্বপ্ন। শুরু হলো আশার পথ চলা। এতদিন কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ ছিলো, আজ বৃষ্টিতে তা ধুয়ে মুছে সাফ। ক্ষতি হতো হাজার কোটি টাকার।
দিন মজুরেদের এই গরমে হিট স্ট্রোক এর ভয়ে কাজ বন্ধ ছিলো,আবার ব্যস্ত হয়ে পড়বে তারা।বাড়বে কাজের ক্ষেত্র উপার্জিত হবে টাকা ভালো চলবে দিন। মেঘ যেন স্বপ্ন পূরণের হাতিয়ার বাংলার কৃষকের।
সবুজ সবজি ফ্যাকাসে হয়ে গিয়েছিল, আবার সবুজ হবে। বাজারের সবজি বিক্রেতা আর সন্দেহে থাকবে না তার মালামাল বিক্রি হবে কি? শুকিয়ে গিয়েছিল ফল ফুলের বাগান। আবার সবুজে ভরে উঠবে প্রকৃতি।
তৃণভোজী প্রাণীকুলের মিলবে সবুজ ঘাস, এমনই ঘোষণা দিল ২৪ মে ২০২১ সোমবারে দীর্ঘ আট মাসের পর। মেঘের গুড়ুম গুড়ুম শব্দে কেপে ওঠেনি অভয়নগরের ভৈরব উত্তরপূর্ব এলাকার মানুষ। মেঘের গর্জন তাদের কাছে আজ স্বপ্নের গান হিসেবে উপস্থিত।
সাড়া বাড়িতে ধুলো আর ধুলো এমন অস্বস্তিতে থাকা গৃহবধু আজ হাসি খুশি। পরিস্কার হলো প্রকৃতি। ঝকঝকে চকচকে ঘড়বাড়ির ছাদে জমে থাকা ধুলো বালি, যা তাকে প্রতিদিন ঝাড়ু দিতে হতো। তারই কাজে সাহায্য করে গেল। কাপড় ধোয়ার জলের অভাব কেটেছে ধোপাদের। তাপে সকল পুকুর শুকিয়ে তলার মাটি ফেটে চৌচির। আজ সেখানে পানি আর পানি যদিও হয়নি তবে জানান দিল এসেছি আমি।
ফল গাছের ফুল শুকিয়ে ঝরে পড়ে গেছে। ফলের ফলন ভাল হয়নি এবার। তার পরও আজ হতে আবার সুখের হাসি হাসবে অভয়নগরের মানুষ।