চলতি বোরো মৌসুমে সরকারিভাবে ধান সংগ্রহ পরিস্থিতি অত্যন্ত হতাশাজনক বলে জানিয়েছে খাদ্য অধিদফতর। ধান কেনার লক্ষ্য অর্জন না হলে সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে বলে হুঁশিয়ারিও দিয়েছে অধিদফতর।
সম্প্রতি এ বিষয়ে সব আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কাছে চিঠি পাঠিয়েছেন খাদ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক শেখ মুজিবর রহমান।
বিজ্ঞাপন
খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চলতি বোরো মৌসুমে অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে মোট ১৮ লাখ টন ধান ও চাল কিনবে সরকার। এর মধ্যে মিলারদের কাছ থেকে ৪০ টাকা কেজি দরে ১০ লাখ টন সিদ্ধ চাল, ৩৯ টাকা কেজি দরে দেড় লাখ টন আতপ চাল এবং কৃষকদের কাছ থেকে ২৭ টাকা কেজি দরে সাড়ে ৬ লাখ টন ধান কেনা হচ্ছে।
গত ২৮ এপ্রিল থেকে ধান কেনা শুরু হয়েছে। শুক্রবার (৭ মে) থেকে শুরু হয়েছে চাল সংগ্রহ। গত বছর বোরোতে এবং এবার আমনে সরকারের ধান-চাল সংগ্রহ কর্মসূচি ব্যর্থ হয়। তাই তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে সরকারি খাদ্যশস্যের মজুত। এই পরিস্থিতিতে মজুত সন্তোষজনক পর্যায়ে উন্নীত করতে বোরো সংগ্রহ শুরু করেছে খাদ্য বিভাগ।
বিজ্ঞাপন
খাদ্য অধিদফতরের চিঠিতে বলা হয়, চলতি বোরো মৌসুমে সাড়ে ৬ লাখ টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা মাঠ পর্যায়ে পাঠানো হয়েছে। চলতি বোরো সংগ্রহ মৌসুমের আওতায় গত ২৮ এপ্রিল থেকে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম শুরু হয়েছে, যা আগামী ১৬ আগস্ট পর্যন্ত চলবে। নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১৭ মে পর্যন্ত সারাদেশে ১৬ হাজার ৯৭৪ টন ধান সংগৃহীত হয়েছে। সংগ্রহের শতকরা হার ২ দশমিক ৬১।
বিভাগভিত্তিক ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা, সংগ্রহের পরিমাণ এবং সংগ্রহের হারের পরিমাণ উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, ধান সংগ্রহের এ গতি অত্যন্ত হতাশাব্যঞ্জক। ধান সংগ্রহের এ গতি অব্যাহত থাকলে সংগ্রহের সময়সীমার মধ্যে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার অবশিষ্ট পরিমাণ ধান সংগ্রহ করা দূরূহ হয়ে পড়বে।
বিজ্ঞাপন
বোরো মৌসুমে সারাদেশে ধানের উৎপাদন সন্তোষজনক এবং বর্তমানে ধানের বাজার মূল্য সংগ্রহের অনুকুলে রয়েছে উল্লেখ করে চিঠিতে বলা হয়, ‘এ বাস্তবতার নিরিখে সরকার ঘোষিত ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের সুবর্ণ সুযোগ। তাই ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের স্বার্থে স্ব স্ব বিভাগের ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে সচেষ্ট থাকতে হবে।’
চিঠিতে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের উদ্দেশে বলা হয়, এ ব্যাপারে এখন থেকে ধান কেনায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নির্দেশনা প্রদান করা যেতে পারে। এছাড়াও প্রয়োজন অনুযায়ী জেলা সংগ্রহ কমিটির সভাপতি হিসেবে জেলা প্রশাসকের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করা যেতে পারে। অপরদিকে সরকার উৎপাদক কৃষকদের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিতে ধানের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে অত্যন্ত দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে ১৩ দফা সম্বলিত নির্দেশনাবলী প্রদান করা হয়েছে, যা মাঠ পর্যায়ে সংগ্রহ বিভাগ থেকে গত ৬ মে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া খাদ্যমন্ত্রীর দেশের সব বিভাগের সাথে জুম মিটিংয়ে দেয়া নির্দেশনাবলী অনুসরণ করতে হবে।
যেসব এলাকায় কৃষকের তালিকা পেতে বিলম্ব হচ্ছে যেসব এলাকায় গত বছরের তালিকা অনুসরণ করে লটারি বা আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে এবং অ্যাপভুক্ত যে সকল উপজেলায় পর্যাপ্ত সংখ্যক কৃষক নিবন্ধন বিলম্বিত হচ্ছে সেসব এলাকায় অ্যাপের পাশাপাশি ‘আগে আসলে আগে পাবেন’ ভিত্তিতে ধান ক্রয় করে সংগ্রহ কার্যক্রম শতভাগ সফল করার জন্য ইতোমধ্যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে বলেও চিঠিতে জানানো হয়।
এতে আরও বলা হয়, ‘এছাড়াও যথাসময়ে কৃষক তালিকা প্রাপ্ত উপজেলাগুলোতে যদি লটারিতে নির্বাচিত কৃষক ছাড়া তালিকাভুক্ত অন্য কোন কৃষক ধান বিক্রয়ে আগ্রহী হয় তার কাছ থেকেও ধান ক্রয় করতে পারবে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। চলতি বোরো সংগ্রহ মৌসুমে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও বৃহৎ কৃষক নির্বিশেষে সকলের কাছ থেকে সর্বোচ্চ ৩ টন পর্যন্ত ধান কেনা যাবে। ফলে উৎপাদক কৃষকদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ ধান কেনার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’
এমতাবস্থায়, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের ১৩ দফা নির্দেশনা ও সরাসরি কৃষকদের কাছ থেকে ধান কেনার বিষয়ে জারিকৃত পত্র অনুযয়ী নিজ নিজ বিভাগে দেয়া লক্ষ্যমাত্রার শতভাগ অর্জনের লক্ষ্যে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণের বিষয়ে সংশ্লিষ্টদেরকে নির্দেশনা প্রদানের জন্য অনুরোধ জানিয়ে চিঠিতে বলা হয়, অন্যথায় মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অবহেলার কারণে ধান সংগ্রহ কার্যক্রম সফল না হলে সংগ্রহের সাথে সংশ্লিষ্ট সবার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতে পারে।
আরএমএম/এসএস/জেআইএম
বিজ্ঞাপন
চীনা টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুর
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে চীনা টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (২৫ মে) সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পরীক্ষামূলকএ টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক।
রাজধানীর চারটি সরকারি হাসপাতাল- ঢাকা মেডিকেল কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ, মুগদা ও সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজে চিকিৎসক, নার্স ও টেকনোলজিস্টদের পরীক্ষামূলকভাবে এ টিকা প্রদান করা হবে।
বিজ্ঞাপন
পরীক্ষামূলক টিকা প্রদানের পর টিকা গ্রহণকারীদের সাত থেকে ১০ দিন পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। এরপর চীন থেকে পাওয়া উপহারের পাঁচ লাখ ডোজ টিকা আড়াই লাখ মানুষকে দেয়া হবে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের মুখপাত্র ও পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো.নাজমুল ইসলাম এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে চীনের উপহারের এ টিকা ১ হাজার জনকে দেয়া হবে। এ মুহূর্তে মেডিকেল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট, ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি’র শিক্ষার্থী এবং করোনা রোগীদের চিকিৎসার সঙ্গে জড়িতদের টিকা দেয়া হবে।’
বিজ্ঞাপন
তিনি আরও বলেন, ‘পরবর্তীতে বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পসহ বাংলাদেশে বিভিন্ন কাজে অবস্থানরত চীনা নাগরিক ও চীনে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের এ টিকার আওতায় আনা হবে। চীন সরকারের উপহারের পাঁচ লাখ ডোজ টিকায় আড়াই লাখ মানুষকে টিকাদান করা সম্ভব