সাতক্ষীরার সুন্দরবন সংলগ্ন উপকুলীয় জনপদকে প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে রক্ষা করতে টেবসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও জলবায়ু প্রকল্পে সাতক্ষীরার জন্য ন্যয্য বরাদ্দের দাবিতে মানববন্ধন কর্মসুচি পালিত হয়েছে। বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি সাতক্ষীরা জেলা শাখার আয়োজনে শনিবার ১১টায় শহরের মিনি মার্কেটস্থ শহিদ নাজমুল সরণীতে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন, জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি অধ্যাপক মহিবুল¬াহ মোড়ল।
মানুষ বাঁচাও, পরিবেশ বাঁচাও, সম্পদ বাঁচাও স্লে¬াগানের অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন, সাতক্ষীরা জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদক মন্ডলীর অন্যতম সদস্য প্রকৌশলী আবেদুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রউফ, নারী নেত্রী নাছরিন খান লিপি, সরদার রফিকুল ইসলাম, আব্দুর রহমান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, ৬০ এর দশকে নির্মিত বেড়িবাঁধ জোড়াতালি দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ফলে প্রতি বছর প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হচ্ছে সাতক্ষীরার সুন্দরবন সংলগ্ন উপকুলীয় অঞ্চল শ্যামনগর, আশাশুনি, কালীগঞ্জ ও দেবহাটার সাধারণ মানুষকে। তাছাড়া নাইনটি পাইপ বেড়িবাঁধের মধ্যে বসিয়ে চিংড়ি ঘেরে পানি নিয়ে যাওয়ায় জরাজীর্ণ হয়ে পড়ছে বাঁধ।
এ নিয়ে ২০১৭ সালে শ্যামনগর থানায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে পাঁচ শতাধিক ব্যক্তির নামে মামলা করলেও পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার না করায় অপরিকল্পিত চিংড়ি চাষীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জনপ্রতিনিধিদের দূর্ণীতির কারণে সরকারি বরাদ্দের টাকা বাঁধ নির্মাণে যথাযথ খরচ না হওয়ায় গত ২৬ মে ঘুর্ণিঝড় ইয়াশ এর প্রভাবে সাতক্ষীরার চারটি উপজেলার ২৭ টি ইউনিয়নের দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। কয়েক হাজার পরিবার বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।
ইয়াশের প্রভাব কেটে গেলেও বেড়িবাঁধ দুর্বল থাকার কারণে প্রতিদিন নতুন নতুন জায়গায় ভাঙছে বেড়িবাঁধ। প¬াবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। এতে মানুষের দুর্ভোগের সীমা থাকছে না। প্রতাপনগর ও গাবুরায় অনেকেই নৌকায় বসবাস করছেন। জেলায় সাত হাজার ৫৬০টি মাছের ঘের ভেসে ৫৫ কোটি টাকার আর্থিক ক্ষতি হয়েছে। তাই ত্রাণ নয়, ক্ষতিগ্রস্ত পানিবন্দি মানুষদের রক্ষায় অবিলম্বে টেকসই বেড়ি বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।
বক্তারা আরো বলেন, চিংড়ি থেকে যে পরিমান বৈদেশিক মুদ্রা আসে তার একটি অংশ যদি সাতক্ষীরার উন্নয়নে বরাদ্দ করা হতো তাহলে সাতক্ষীরার অবস্থা অনেক পরিবর্তণ হতো। তাই জলবায়ু প্রকল্পে সাতক্ষীরার জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দের আবেদন জানান তারা।
সমগ্র অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন, সাতক্ষীরা জেলা ওয়ার্কার্স পার্টির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য স্বপন কুমার শীল।