ক্রাইমবাতা ডেস্করিপোট: ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে আর্থিক সহযোগিতা ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। আজ শনিবার উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার রমজাননগর ইউনিয়নের গোলাখালি এলাকায় দলটির কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার ক্ষতিগ্রস্থদের পাশের যেয়ে নগদ অর্থসহায়তা ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করেন।
এসময় এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের মত দুর্যোগ মোকাবিলায় উপকূলীয় এলাকায় মানুষের পুনর্বাসন ও বাঁধ নির্মাণে সরকারের পক্ষ থেকে যে ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার ছিল তা করা হয়নি। সবসময় এসকল এলাকার মানুষ অবহেলার শিকার হয়েছে। এমনকি এসকল ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের জন্য যে ত্রাণ বরাদ্দ দেয়া ও বিতরণ করা হয় তা যথেষ্ট নয়।
মিয়া গোলাম পরওয়ার আরো বলেন, প্রতিবারই এমন পরিস্থিতিতে কর্তাব্যক্তিরা শুধু আশ্বাসের কিছু মুখস্থ বুলি শোনান। আমরা নানান ধরনের মেগা প্রকল্পের নাম শুনে আসছি, কিন্তু দুঃখের বিষয় এখনো পর্যন্ত কোন কার্যকর উদ্যোগ আলোর মুখ দেখা পায়নি। আমরা উপকূলের মানুষ টেকসই বেড়িবাঁধসহ এই সমস্যার স্থায়ী সমাধান চাই। যদি সেটা সম্ভব না হয়, তাহলে এ অঞ্চল পরিত্যক্ত ঘোষণা করে উপকূলের মানুষকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত করার দাবি জানাই।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারী ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মুহাদ্দীস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা মহানগরী শাখার আমীর মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, সাতক্ষীরা জামায়াতের আমীর মুহাদ্দীস রবিউল বাশার, শ্যামনগর আসনের সাবেক এমপি গাজী নজরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারী মাওলানা আজিজুর রহমান, শ্যামনগর উপজেলা শাখার সাবেক আমীর অধ্যাপক আব্দুল জলিল,বর্তমান আমীর, প্রভাষক আব্দুর রহমান, খুলনা মহানগর শিবিরের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিরুল ইসলাম,সাতক্ষীরা জেলা শিবিরের সেক্রেটারী ওসমানসহ অনেকে।
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে আর্থিক সহযোগিতা ও খাদ্যসামগ্রী বিতরণকালে জামায়াতের সেক্রেটারী জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার সাতক্ষীরায় ঘূণিঝড়ের দূরাবস্থার কথা তুলে ধরে ক্ষতিগ্রস্থদের শান্তনা দেন। এসময় দুর্গতদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, গত ২৬ মে উপকূলীয় অঞ্চলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া ঘূণিঝড় ইয়াশে যারা বসতবাড়ি, সহায় সম্পত্তি হারিয়েছেন তা অপূরণীয়। অপনারা যারা এই নোনা পানির মধ্যে চরম দুদর্শা ও ঝুকির মধ্যে ভেসে থাকার মত বসবাস করছেন তা চোখে দেখে অনুভব করছি। পাশাপাশি আপনাদের ক্ষতি আমরা পূরণ করতে পারবো না তবে আমাদের সামার্থনুযী আপনাদের সহযোগীত করবো ইনরশাল্লাহ।
তিনি ক্ষতিগস্থ্রদের শান্তনা দিয়ে আরো বলেন, আল্লাহতালা কার তকবিরে কি ভাবে রেখেছে তা মাবুদই ভাল জানেন। কেউ বড় বড় দালান কোটায় আবার কেউ পানিতে ভাসমান অবস্থায়। নিশ্চয় এর প্রতিদান সেই মহান মালিক দিবেন। এজন্য আপনাদেরকে বিপদে আপদে ধৈর্য ধরতে হবে এবং মহান আল্লাহর সাহায্য চাইতে হবে। একমাত্র আল্লাহই তার রহমতের চাদর দ্বারা সকল বালা মছিবত দূরিভূত করে দিতে পারেন।
তিনি উপকূলীয় এলাকার সকল ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের সাহায্য-সহযোগিতার জন রাষ্ট্রের পাশাপশি সমাজের বিত্তশালী ব্যক্তিবর্গ এবং বিশেষ করে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সকল পর্যায়ের জনশক্তির প্রতি আহবান জানান।
উল্লেখ্য গত ২৬ মে “ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে দেশের উপকূলীয় এলাকার সাতক্ষীরা, খুলনা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালি, ভোলা, নোয়াখালি ও লক্ষ্মীপুরসহ ৯টি জেলার ২৭টি উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সংঘঠিত হয়েছে। ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট, শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, হাটবাজার জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। জলোচ্ছ্বাস ও জোয়ারের পানিতে কৃষিজমি, মাছের ঘের, পুকুর ভেসে গেছে। উপকূলবর্তী অঞ্চলের বাঁধ ভেঙ্গে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে লাখ লাখ মানুষ এবং বিপুল ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে।
এই নিউজের ভিডিও দেখতে ক্লিক করুন kopotakkho24
প্রেসবিজ্ঞপ্তি।