চৌগাছা (যশোর) প্রতিনিধিঃ
যশোরের চৌগাছার মোহাম্মদ তানভির হোসেন (২৮) নামে এক যুবক ২৩ দিন ধরে নিখোঁজ রয়েছেন। তিনি উপজেলার নারায়ণপুর ইউনিয়নের হাজরাখানা গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে।
গত ০৮ মে তার শ্বশুর বাড়ি খুলনার ফেরিঘাট রোড এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়। এ বিষয়ে নিখোঁজের শশুরবাড়ির পক্ষ থেকে গত ১১ মে খুলনার সোনাডাঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে। যার নম্বর- ৬১২।
তানভিরের পিতা শুকুর আলী জানান, তার দুই ছেলের মধ্যে তানভির ছোট। ৩ বছর ৪ মাস আগে সে নারায়গঞ্জে চাকরি করা অবস্থায় ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয়ের সূত্র ধরে খুলনার ফেরিঘাট রোডের একটি মেয়েকে বিয়ে করেন। তিনি জানান বিয়ের পর ছেলে তার বৌকে আমাদের বাড়িতে আনে। আমরা গরীব কৃষক হওয়ায় আমাদের বাড়ি বৌমার পছন্দ হয়নি। এক সপ্তাহ থাকার পর ছেলে বৌমাকে নিয়ে নারায়নগঞ্জ চলে যান। এরপর গত প্রায় দুই বছর ধরে ছেলে নওয়াপাড়ায় মেসার্স নওয়াপাড়া ট্রেডার্সে চাকরি করছিলেন এবং নওয়াপাড়াতে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকছিলেন। তিনি আরও বলেন তানভির বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীর সাথে মনোমালিন্য ছিল। বৌমা ছেলেকে বাড়িতে কোন টাকাপয়সা পাঠাতে দিত না। রোজার মধ্যে বৃহস্পতিবার (৬মে) আমি ছেলেকে ফোন দিয়ে বলি ‘বাবা আমার মটরটা নস্ট হয়ে গেছে, ফ্যানেও একটু সমস্যা। তুমি এসে একটু ঠিক (মেরামত) করে দিয়ে যেয়েনে।’ তখন ছেলে বলেছিল ‘আব্বা, ঈদে ছুটি পাবো, তখন এসে ওগুলো ঠিক করে দিয়ে যাবানে।’ এরপর শনিবার (৮মে) বৌমা ফোন দিয়ে বলে আপনার ছেলে কি আপনাদের ওখানে গিয়েছে? আমি বলি না। কেন? তখন বৌমা বলে আপনার ছেলের সাথে আমার ৮ ঘন্টা যোগাযোগ নেই।’ আমি বলি তোমরা কোথায়? তখন সে বলে আমি খুলনায়। তখন আমি বলি তোমরা কখন খুলনায় গেলে? আমাকে তো বলনি। তোমরা তো নওয়াপাড়ায় ছিলে। সেসময় বৌমা আমাকে অনেক কথা শুনিয়ে দেয়। তিনি বলেন এরপর আমার বেয়াইন (ছেলের শ^াশুড়ি), বৌমার ভাই আমাদের ফোন করে নানা ভাবে শাসিয়েছে। বলেছে আপনারা নাটক করছেন। দশ লক্ষ টাকার যৌতুক মামলা দেব। ইত্যাদি। বৌমার ভাই হুমকি দিয়ে বলেছে, তোমার ছেলে পালিয়েছে, ওকে খুন করে ফেলবো। তোমার ছেলের লাশ ধাপের নিচে (নদীর কচুরপানার নিচে) পাওয়া যাবে।
শুকুর আলী বলেন এরপর আমি গ্রামের ইউপি সদস্য মনিরুজ্জামান মিলনকে নিয়ে খুলনায় ছেলের শ^শুর বাড়ি যাই। তার শ^শুর বেচে নেই। সেখানে যাওয়ার পর তারা আমাদের সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করে। পরে আমরা চলে আসি। তিনি বলেন সেখানে যাওয়ার সময় আমরা নওয়াপাড়ায় যে বাসায় ভাড়া থাকতো তাকেও নিয়ে যাই। তিনি আমাদের বলেছেন বৌমা তানভিরের কোন কথাই শুনতে চাইতেন না। এ তানভির অনেকটাই চুপচাপ হয়ে গিয়েছিলেন। প্রায় সময়ই তাদের ঠুকঠাক লেগেই থাকতো। তবে তিনি বলেছেন আপনার ছেলে অনেক ভাল ছেলে। সে কোন কথা বলতো না, বেশিরভাগ সময়ই চুপ থাকতো।
শুকুর আলী বলেন সেখান থেকে আসার পর আমরা চৌগাছা থানায় যাই। সবকিছু শুনে চৌগাছা থানার ওসি আমাদের পরামর্শ দেন সোনাডাঙ্গা থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি করতে। আমি মঙ্গলবার মেম্বারকেসহ সেখানে গিয়ে জিডি করবো।
স্থানীয় ইউ,পি সদস্য মনিরুজ্জামান মিলন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন।