সাবেক সচিব, দিগন্ত মিডিয়া কর্পোরেশন ও ইবনে সিনা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান শাহ আবদুল হান্নান আর নেই। আজ বুধবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে ইবনে সিনা হাশপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজেউন)। বার্ধক্যজনিত অসুস্থতা নিয়ে তিনি হাশপাতালে ভর্তির পর একাধিকবার হার্ট এটাকের শিকার হন। একই সাথে তিনি মস্তিষ্কে প্রদাহের কারণে স্মৃতি শক্তি হারিয়ে ফেলেছিলেন।
জনাব শাহ আবদুল হান্নানের মৃত্যুর খবর জানান তার একান্ত সচিব জনাব তোফাজ্জল হোসেন। এর আগে শাহ হান্নানের ভাই শাহ আবদুল হালিম জানিয়েছিলেন অরেক দফা হার্ট এটাকের কারণে শাহ হান্নানের অবস্থার আরো অবনতি ঘটেছে।
আজ বাদ জোহর মরহুমের প্রথম জানাজা ধানমন্ডি ইদগাহ মসজিদে, বাদ আছর দ্বিতীয় জানাজা বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদে এবং এর পরে শাহজাহানপুরের কবর স্থানে তার দাফন সম্পন্ন হবে বলে জানানো হয়েছে।
শাহ আব্দুল হান্নান ছিলেন একজন ইসলামী চিন্তাবিদ, শিক্ষাবিদ, লেখক, অর্থনীতিববিদ ও সমাজ সেবক। তিনি জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ছিলেন। এছাড়াও তিনি দারুল ইহসান বিশ্ববিদ্যালয় ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা উদ্যোক্তা এবং ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের সাবেক চেয়ারম্যান ছিলেন।
শাহ আব্দুল হান্নান ১৯৩৯ সালের ১লা জানুয়ারি বৃহত্তর ময়মনসিংহের কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী থানার বিখ্যাত শাহ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি ও রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে স্নাতক এবং ১৯৬১ সালে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন।
শাহ হান্নান তার কর্মজীবন শিক্ষকতার পেশা দিয়ে শুরু করেন। তিনি ১৯৬২ সালে ঢাকা কলেজে রাষ্ট্রবিজ্ঞানের প্রভাষক হিসাবে যোগ দেন। ১৯৬৩ সালে তিনি পাকিস্তান ফিন্যান্স সার্ভিসে যোগ দেন। ১৯৯৮ সালে সর্বশেষ বাংলাদেশ সরকারের সচিব পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেছিলেন।এর মাঝে তিনি ছিলেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান, যেখানে তিনি ভ্যাট চালুর অন্যতম প্রবক্তা ছিলেন। তিনি অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং বিভাগ, সমাজ কল্যাণ ও সর্বশেষ অর্থ মন্ত্রণালয়ের আভ্যন্তরীন সম্পদ বিভাগের সচিব ছিলেন। এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর, দুর্নীতি দমন ব্যুরোর মহাপরিচালক হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন । জনাব হান্নানের এক ছেলে, এক মেয়ে, তিন ভাই অনেক আত্মীয় স্বজন ও গুণগ্রাহি রয়েছেন।