সব্যসাচী বিশ্বাস (অভয়নগর) যশোরঃ
সারা বিশ্বের করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী সকল জেলার অবস্থা বিবেচনায় এনে হঠাৎ করে সীমান্তবর্তী জেলা যশোরে করোনার সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় এবং ভারতীয় ভ্যারিয়েন্ট শণাক্ত হওয়ায় আতংকিত হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। সেই সাথে স্বাস্থ্য বিভাগসহ সর্বমহলে দেখা দিয়েছে উদ্বেগ-উৎকন্ঠা। বিশেষ করে ভারত ভ্রমনের ইতিহাস না থাকার পরও ৮ জনের শরীরে ভারতীয় ভ্যরিয়েন্ট শনাক্ত হওয়ায় এ উদ্বেগ আরও বহুগুনে বেড়ে গেছে। আর জেলার এ ৮ জনের মধ্যে চারজনের বাড়ি অভয়নগরে হওয়ায় অভয়নগরবাসীর মধ্যে উৎকন্ঠা চরমে পৌছেছে।
করোনা রোধে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। সেই সাথে নড়ে চড়ে বসেছে করোনা প্রতিরোধ কমিটিসহ অভয়নগর উপজেলা প্রশাসন। এদিকে এ উপজেলায় প্রতিনিয়ত সাধারণের মাঝে করোনার সংক্রমন বেড়েই চলছে। বাড়ছে শনাক্তের সংখ্যা। ফলে করোনা প্রতিরোধ কমিটি কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
মঙ্গলবার সকালে অভয়নগর উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে করোনা প্রতিরোধ কমিটির এক জরুরী সভায় এ কঠোর সিদ্ধান্তের ঘোষণা দেয়া হয়। যদিও এখনই কঠোর লকডাউনে যাচ্ছেনা উপজেলা প্রশাসন। তবে কঠোর বিধি নিষেধ না মানলে কঠোর লকডাউন হবে অভয়নগর উপজেলা এমনটিই জানিয়েছেন উপজেলা করোনা প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অভয়নগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আমিনুর রহমান।
তিনি জানান, নওয়াপাড়া পৌরসভার মেয়রসহ উপজেলার সকল ইউপি চেয়ারম্যানদের স্ব স্ব এলাকায় এ সংক্রান্তে মাইকে প্রচারণা চালাতে বলা হয়েছে। বিধি নিষেধ সমূহ মাইকে প্রচারের পরই প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর অভিযান চলবে। বিধি নিষেধ সমূহের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হিসেবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, নওয়াপাড়া নদী বন্দর এলাকায় অবস্থানরত কোন কার্গো জাহাজের মাস্টার সুকানিসহ কর্মরতরা কার্গো জাহাজ থেকে নামতে পারবে না। নওয়াপাড়া বন্দর এলাকার কোথাও ঘোরাফেরার ক্ষেত্রে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে। মাস্ক বিহীন কেউ বাড়ির বাইরে বের হতে পারবেনা। বিনা প্রয়োজনে বাইরে ঘোরাফেরা বা আড্ডাবাজি করা যাবেনা। নওয়াপাড়া বাজারের দোকানগুলোকে অবশ্যই স্বাস্থ্য বিধি মেনে দোকান খোলা রাখা বা ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে। মাস্ক বিহীন কোন ক্রেতার কাছে পন্য বিক্রয় করা যাবেনা। কোন দোকানী এ বিধি নিষেধ না মানলে সেই দোকান বন্ধ ঘোষণা করা হবে। অফিস, ব্যাংক, বীমা সমূহে অবশ্যই মাস্ক পরিধান বাধ্যতামূলক করতে হবে। এবং স্বাস্থ্য বিধি মানতে হবে। যে সকল করোনা রোগী শনাক্ত হচ্ছে তারা বা তাদের পরিবারের কোন সদস্য বাইরে ঘোরাফেরা করতে পারবেনা। এবং সেই বাড়িগুলো লকডাউন করা হবে। এর পরও যদি বিধি নিষেধ যথাযথভাবে মানা না হয় বা করোনা সংক্রমণ আরও বৃদ্ধি পায় তাহলে গোটা অভয়নগর উপজেলা লকডাউন ঘোষণা করা হবে।
গত ০১/০৬/২০২১ মঙ্গলবার সকালে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুর রহমানের সভাপত্বিতে অনুষ্ঠিত করোনা প্রতিরোধ কমিটির জরুরী বৈঠকে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অভয়নগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি শাহ্ ফরিদ জাহাঙ্গীর, নওয়াপাড়া পৌরসভার মেয়র ও অভয়নগর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সুশান্ত কুমার দাস শান্ত, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) নারায়ণ চন্দ্র পাল, অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহমুদুর রহমান রিজভী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যূান আখতারুজ্জামান তারু ও মিনারা পারভীন, নওয়াপাড়ার সার সিমেন্ট ও খাদ্য শষ্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল গনি সরদার, সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব শাহ্ জালাল হোসেন প্রমূখ।