মুক্তিযুদ্ধ প্রকৃতপক্ষে একটি জনযুদ্ধে রূপ নেয়। এতে অংশ নেন বাংলার সাত কোটি মানুষ। অথচ এই স্বাধীনতাকে পুঁজি করে স্বাধীনতার সুবর্ন জয়ন্তীর পরও চলছে বিভক্তির রাজনীতি।
আজ জাতীয় ঐক্যের অভাব অনুভব করছে সমগ্র বাঙালি জাতি।
যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের বিচারে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হলো, ভালো কথা। কিন্তু ট্রাইবুনালের ফাইন্ডিংস-এ তাদের দলটাকে যুদ্ধাপরাধী দল হিসেবে চিহ্নিত করা হলেও, আজও কেনো সেই দলটাকে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে না??
তবে জনগণ ভেবে নিবে মূলত : যুদ্ধাপরাধ ইস্যুতে হচ্ছে রাজনৈতিক ফায়দা লুটা!
বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ট্রাংকে উল্লাসে ফেটে পড়া ইনু মেনন মতিয়ারা কিভাবে মন্ত্রী হয়??
কিভাবে স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা বাড়তে থাকে??
মুক্তিযোদ্ধাদের খাটো বা অসম্মান করা উদ্দেশ্য নয় প্রিয় ভাই, আমার বক্তব্য হলো, মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলো ৭ কোটি বাঙালি, তখন ৭ বছরের যে ছেলেটি যোদ্ধাদের এক গ্লাস জলপান করিয়েছিলো সে কি সম্মানি পাওয়ার যোগ্য নয়? সম্মানি দিলে হোক অল্প, তবু ৭১ সালে যাঁরাই দেশের জন্য মুক্তি সেনাদের সহায়তা করেছেন তাদেরও সম্মান দিতে হবে।
আর রাজাকার ও পাকিস্তানি দোসরদের তালিকা প্রকাশ করতে হবে।
শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের তালিকা করা হোক। তাদের সম্মানী বাড়ানো হোক।
ব্যক্তি বড় নাকি মুক্তিযুদ্ধ?
আমার একজন গুরুজন একটা কথা প্রায়ই বলে, “ব্যক্তি যত মুক্তিযুদ্ধের থেকে এগিয়ে যাবে মুক্তিযুদ্ধ ততো পিছিয়ে যাবে”। মুক্তিযুদ্ধের অবস্থান সেখানে ঠুনকো এবং তা মুক্তিযুদ্ধের সাথে প্রতারণা করার শামিল। ফলাফলস্বরূপ সৃষ্টি হয় ব্যক্তিতন্ত্র, পরিবারতন্ত্র।
‘৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ছিল একটি গণযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধের থেকে বড় কোন যুদ্ধ এবং তাৎপর্যপূর্ণ ঘটনা এখনও এদেশে হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের থেকে কোন দল, ব্যক্তি কেউই বড় নয়। যারা মুক্তিযুদ্ধকে ছোট করে ব্যক্তিকে বড় করতে চায় ওরা মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন, লক্ষ্য, উদ্দেশ্য মুছে ফেলে প্রতিষ্ঠা করতে চায় ব্যক্তিতন্ত্র-পরিবারতন্ত্র।
স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লিখিত সাম্য মানবিক মর্যাদা এবং সুবিচারের বাংলাদেশ নির্মান হোক, এই প্রত্যাশায়।