সব্যসাচী বিশ্বাস (অভয়নগর) যশোর:
গত ২৬ এপ্রিল অভয়নগরের চলিশিয়া গ্রামের ব্যবসায়ী দেবাশীষ খুন ও বাড়িতে ডাকাতি মামলায় অভিযুক্ত আরো এক আসামিকে আটক করেছে পিবিআই। আটক ট্রাক ড্রাইভার ফেরদৌস হোসেন খুলনা জেলার তেরখাদা উপজেলার মধুপুর গ্রামের সাব্বির হোসেনের ছেলে। যশোর কোতয়ালী থানাধীন চুড়ামনকাটিতে তার মামা-শশুর আঃ রহমানের বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়। পরে তার দেয়া স্বীকারোক্তিতে সাতক্ষীরা জেলার গোপিনাথপুর এলাকা হতে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত মিনি ট্রাক (পিকআপ) ও গ্রীল ভাঙ্গার সরঞ্জামাদি (লোহার রড়, সেলাই রেঞ্জ, স্ক্রু-ড্রাইভার উদ্ধার করা হয়। পরে আদালতে সোপর্দ করলে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মঞ্জুরুল ইসলাম আসামির জবানবন্দি গ্রহণ শেষে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গ্রেফতার হওয়া আসামি তার জবানবন্দিতে বলেন, তিনি পরের পিকআপ চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। তার পাশের গ্রামে মল্লিকপুরের সেলিম নামের এক জন চুরি ডাকাতির সাথে জড়িত। সেলিম তাকে প্রায়ই এসব কাজে তার পিকআপ ব্যবহারের জন্য বলে। করোনার কারণে তিনি রাজি হয়ে যান।
ঘটনার রাতে সেলিমকে নিয়ে তিনি গাড়ি নিয়ে রাত সাড়ে আটটায় ফুলবাড়ি গেটে আসে। সেখান থেকে আরো দুইজন উঠে। রাত ৯ টায় নওয়াপাড়ার দিকে আরো তিনজন ওই পিকআপে উঠে। এদের মধ্যে সেলিম সহ রানা, সুমন মনা ছিলো বাকিদের নাম জানেন না তিনি। পরে তারা নওয়াপাড়া হাসপতালের সামনে যেয়ে নামে। পরে তিনি নওয়াপাড়া ভাঙা গেটের কাছে একটা পাম্পে পিকআপ নিয়ে বসে থাকেন। রাত ৪ টায় সেলিম তাকে কল করে স্কুলের পাশে যেতে বলে। সেখানে গাড়ি নিয়ে যায়। পরে সেলিমসহ অন্যরা কিছু যন্ত্রপাতি নিয়ে গাড়িতে উঠে চলে আসে। এ কাজের জন্য পিকআপ ভাড়া ৩০ হাজার ও তাকে ১৫ হাজার টাকা দেন সেলিম। আদালতকে এসব কথা জানিয়েছেন ফেরদৌস।
উল্লেখ্য, গত ২৬ এপ্রিল রাত আড়াইটার দিকে অভয়নগর উপজেলার চালিশিয়া গ্রামের মৃত গৌর সরকারের ছেলে দেবাশীষ সরকার সঞ্জয়ের বাড়িতে ডাকাতদল প্রবেশ করে দেবাশীষ সরকারসহ তার পরিবারের লোকজনদের মারপিট করে গুরুতর রক্তাক্ত জখম করে। ভয়ভীতি দেখিয়ে দেবাশীষ সরকারের ঘরে থাকা নগদ চারলাখ টাকা এবং ২০ ভরি ৮ আনা বিভিন্ন স্বর্ণালঙ্কার যার মূল্য অনুমান ১৫,০০,০০০/- (চৌদ্দ লক্ষ সত্তর হাজার) টাকা ডাকাতি করে নিয়ে যায়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় দেবাশীষ সরকার ও স্ত্রী রিপা সরকারকে অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে দেবাশীষের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের দুলাভাই (ভগ্নিপতি) এ্যাডভোকেট তপন কুমার বিশ্বাস বাদী হয়ে অভয়নগর থানায় অজ্ঞাতনামা ৭/৮ জনের বিরুদ্ধে অভয়নগর থানার মামলা করেন।