সাতক্ষীরায় যেন মৃত্যুর মিছিল : চলছে লকডাউন( ভিডিও)

আবু সাইদ বিশ্বাস:সাতক্ষীরা: সীমান্তবর্তি সাতক্ষীরা জেলায় কয়েক দির ধরে লাগামহীন ভাবে করোনা ভাইরাসের সংক্রামন বাড়ায় জেলাটিতে ৭দিনের জন্য লকডাউন চলছে। এর মধ্যেও আক্রান্ত ও উপসর্গে মৃত্যুর মিছিল বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন মৃত্যুর সংখ্যা বাড়ছে। কোন কোন গ্রামে একই দিনে কয়েক জনের মৃত্যুর খবর আসছে। এসময় পরীক্ষায় ভাইরাস শনাক্তের হার বেড়ে দাড়িয়েছে প্রায় ৬০ ভাগ।
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার (৫জুন) সকাল পর্যন্ত আরো ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে একজন করোনা আক্রান্ত হয়ে এবং অপর দু’জন করোনা উপসর্গে মারা যান। তারা সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এনিয়ে় হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ৫১ জনে আর করোনা সন্দেহে তথা উপসর্গে মৃত রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ১৭৪ জনে। এর আগে গতকাল শুক্রবার- করোনা আক্রান্ত হয়ে ৩ জন ও করোনা উপসর্গে অপর ৩ জনের মৃত্যু হয়।
করোনার প্রাদুর্ভাবে সাতক্ষীরা জেলাব্যাপী শনিবার (৫জুন) থেকে পরবর্তী ৭দিন লকডাউন ঘোষনা করেছে জেলা প্রশাসন। যানবাহন চলাচল বন্ধসহ নানান বিধি নিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
যশোর ও খুলনা থেকে সাতক্ষীরা জেলায় প্রবেশের মুখে বেশ কয়েকটি চেকপোস্টও বসানো হয়েছে। লকডাউন চলাকালে ভোমরা স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য স্বাভাবিক রয়েছে।
এই সময়কালে বাংলাদেশ ও ভারতে সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে বৈধ ও অবৈধ পন্থায় যাতায়াত পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। বিজিরি টহল জোর দার করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সভাপতিত্বে করোনা প্রতিরোধ বিষয়ক এক বৈঠকে এই লকডাউনের ঘোষণা দেওয়া হয়।
লকডাউনে রিকশা, ভ্যান, ইজিবাইক, মাহেন্দ্র, নছিমন, করিমন সবই চলাচল বন্ধ থাকার কথা থাকলেও সকাল থেকে এসব মটরযান চলাচল করতে দেখা গেছে।
বিকাল ৫টারদিকে সাতক্ষীরা শহরের বাঙ্গালের মোড়, হাটের মোড়,তুফান মোড়,শহরের প্রধান বাণিজ্যিক এলাকা থানামসজিদ সড়কসহ শহীদ নাজমুল সরণিসড়ক ছিল সম্পূর্ণ ফাকা।
সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়াত জানান, করোনা পজিটিভ নিয়ে সাতক্ষীরায় ২৪৫ জন রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ও কোয়ারেন্টিনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় সাতক্ষীরায় ১৮৮ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৮৯ জনের করোনা পজিটিভ পাওয়া গেছে।
হয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফ্লু কর্নারে আয়েশা খাতুন (৬৭) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি জেলার শ্যামনগর উপজেলার গোবিন্দপুর গ্রামের মতলেব গাজীর স্ত্রী। গত ১জুন জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।

এদিকে, একই দিন সকাল ৭টার দিকে করোনা সন্দেহে তথা উপসর্গে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে শামসুর রহমান (৩৫) নামে এক রোগী মারা গেছেন। তিনি শ্যামনগর উপজেলার কৈখালী গ্রামের আহাদ আলী গাজীর পুত্র। আর সাতক্ষীরা সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফ্লু কর্নারে করোনা উপসর্গে আশরাফ হোসেন (৮৭) নামের আরো এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মুন্সিপাড়া এলাকার মৃত ইউসুফ সরদারের পুত্র।
তবে শনিবার সকাল থেকেই যাত্রী গাদাগাদি করেই হরহামেশা মহেন্দ্র, ইজিবাইক ও স্থানীয় অন্যান্য যানবাহন চলাচল করতে দেখা গেছে। যশোর-সাতক্ষীরা মহাসড়কসহ আঞ্চলিক বিভিন্ন সড়ক এবং গ্রামাঞ্চলের রুটেও আগের মতোই ইজিবাইক ও মহেন্দ্র যথারীতি চলতে দেখা গেছে। ফলে লকডাউনের যথার্থতা যেমন প্রশ্নের মুখে তেমনি করোনা সংক্রমন রোধও কঠিন হয়ে পড়বে বলে স্থানীয়রা বলছেন।
ভিডিও  কপোতাক্ষ—

 

 

 

Check Also

যশোর বেনাপোল দিয়ে ভারতে প্রবেশের সময় কলারোয়ার আ’লীগ কাউন্সিলর গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিনিধি :- সাতক্ষীরা: যশোরের বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সময় সাতক্ষীরার কলারোয়া পৌরসভার …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।