ইসলামি বক্তা আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানসহ তার সফরসঙ্গী আব্দুল মুকিত, মোহাম্মদ ফিরোজ ও গাড়ি চালক আমির উদ্দিন ফয়েজ বৃহস্পতিবার থেকে নিখোঁজ রয়েছেন। পুলিশ তাদের খুঁজে করতে তৎপরতা চালাচ্ছে। তবে কীভাবে, কোথা থেকে আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনানসহ তার সফরসঙ্গীরা নিখোঁজ হয়েছেন- তা নির্দিষ্ট করে বলতে পারছে না পুলিশ।
পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, ত্ব-হার খোঁজ পেতে রংপুর মেট্রোপলিটন কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক (তদন্ত) রাজিবুজ্জামানের নেতৃত্বে পুলিশের চার সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়েছে। তারা মাঠে কাজ করছেন। সীমান্তের থানা ও ব্যক্তিগত সোর্সে তার ছবি দেয়া হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে নজরদারিও।
এদিকে ত্ব-হার পরিবারের দাবি, বেশ কয়েকদিন ধরে দুই ত্ব-হাকে অনুসরণ করছিল বলে পরিবারকে জানিয়েছিলেন। তবে পুলিশ বলছে- যদি অপরিচিত দুই ব্যক্তি তাকে অনুসরণ করে থাকে, সেটা যদি তিনি বুঝতে পারেন, তাহলে কেন তিনি সেটা পুলিশকে জানালেন না?
এখন এই দুই ব্যক্তি কে, তারা কি তার অনুসারী নাকি তার বক্তব্যের সঙ্গে ভিন্নতা পোষণ করেন? দুই স্ত্রীর পরিবারের মধ্যে কি কোনো অমিল ছিল? এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে পুলিশ।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, আবু ত্ব-হা মুহাম্মদ আদনান বৃহস্পতিবার রাত ২টা ৩৭ মিনিটে রাজধানীর গাবতলী থেকে সর্বশেষ যোগাযোগ করেন তার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিকুন নাহার সারার সঙ্গে। সে সময় দুই ব্যক্তি তাকে অনুসরণ করছে বলে ত্ব-হা তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে জানিয়েছিলেন।
গুগল ম্যাপে দেখা গেছে, ত্ব-হার দ্বিতীয় স্ত্রীর বাসা থেকে তার গাড়ির দূরত্ব ছিল ৬ দশমিক ৪ কিলোমিটার দূরে। সেখানে পৌঁছাতে সময় লাগতো ১৮ মিনিট। এর কিছুক্ষণ পর থেকেই তার ফোন বন্ধ, তিনি নিঁখোজ।
ত্ব-হার দ্বিতীয় স্ত্রী সাবিকুন নাহার সারা মিরপুর আল ইদফান ইসলামী গার্লস মাদ্রাসার পরিচালক ও শিক্ষক। তিন মাস আগে তাদের বিয়ে হয়েছিল। আর প্রথম স্ত্রী আবিদা নুরকে নিয়ে তিনি রংপুরের শালবনের চেয়ারম্যানের গলিতে ভাড়া বাসায় থাকতেন ত্ব-হা।
এ ব্যাপারে রংপুর মহানগর পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন বলেন, ‘সব ধরনের কারণ ও সন্দেহ মাথায় রেখে তদন্ত কাজ চলছে। তবে এখনই স্পেসিফিক কিছু বলা যাচ্ছে না’।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (১০ জুন) বিকাল ৪টার দিকে তিন সঙ্গীসহ আদনান রংপুর থেকে ভাড়া করা একটি গাড়িতে ঢাকায় রওনা দেন। তারপর তারা নিখোঁজ হন। নিখোঁজের সময় ত্ব-হার সঙ্গে আব্দুল মুহিত, মোহাম্মদ ফিরোজ ও গাড়িচালক আমির উদ্দিন ফয়েজ ছিলেন। তারাও নিখোঁজ রয়েছেন।
ওই রাত থেকে সবার মোবাইল ফোনই বন্ধ রয়েছে। এ ঘটনায় শুক্রবার বিকালে রংপুর মহানগরীর কোতোয়ালি থানায় ত্ব-হার খোঁজ চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন তার মা আজেদা বেগম।