নাগরিকের জান-মালের হেফাজতের দায়িত্ব থাকে রাষ্ট্রের। অথচ আমাদের দেশে জনপ্রিয় চিত্র নায়িকা পরিমনি থেকে শুরু করে তরুণ ইসলামি বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনানের স্ত্রীকে বিচারের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর শরণাপন্ন হতে হয়।
শুধু নিখোঁজের সন্ধান পেতে আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনানের স্ত্রীকে থানা পুলিশের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হয়। তবু সন্ধ্যান মেলেনি নিখোঁজ হওয়া চার যুবকের।
অন্যায়ভাবে একজন মানুষকে হত্যা করা মনে দুনিয়ার সকল মানুষকে হত্যা করার শামিল। গুম খুন ধর্ষন চাঁদাবাজি হামলা মামলা একটা সমাজকে তথা রাষ্ট্রকে অকার্যকর রাষ্ট্রে পরিনত করে।
একটা নিদারুণ কঠিন বাস্তবতা পার করছে বাংলাদেশ। মেজর সিনহা থেকে শুরু করে সর্বশেষ কুষ্টিয়ায় পুলিশের এক এএসআই এর গুলিতে প্রকাশ্য দিবালোকে স্ত্রী সন্তানসহ সহ তিন তিনটি প্রাণ গেলো।
নৈতিক অধপতনের চূড়ান্ত স্খলন জাতি দেখেছে শাহেদ-সাবরিনা ও পাপিয়া কেলেংকারীতে। প্রকাশ্যে অপ্রকাশ্যে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে শত শত নারী, অসংখ্য তরণী যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে।
সম্প্রতি সাংবাদিক রোজিনা ইসলামসহ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন দৈনিক সংগ্রাম, দৈনিক আমারদেশ পত্রিকার সম্পাদকসহ অসংখ্য সাংবাদিক। দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন আরো কয়েক ডজন সাংবাদিক লেখক বক্তাসহ সত্য প্রকাশে অগ্রণী ভূমিকা রাখা দেশপ্রেমিক বিজ্ঞজন।
তরুণ ইসলামি স্কলার মিজানুর রহমান আজহারীকে দেশ ছেড়ে যেতে হয়েছে অদৃশ্য ইশারায়। আরেক তরুণ বক্তা মুফতি আমির হামজা ঠুনকো অজুহাতে মিথ্যা মামলায় জেল-হাজতে।
নিখোঁজের সারিতে সম্প্রতি শামিল হয়েছেন তরুণ ইসলামি বক্তা আবু ত্বহা মুহাম্মদ আদনানসহ ৪ জন। এর আগে সিলেটের ইলিয়াস আলী, ব্রিগেডিয়ার আমান আযমি, ব্যারিস্টার আরমান, ইবির মেধাবী দুই ছাত্রসহ কয়েক শত মানুষ গুম/নিখোঁজের শিকার হয়েছেন।
আসলে টার্গেট আবু ত্বহা আদনান নয়,
টার্গেট যুবসমাজ কে দ্বীনের পথ থেকে ফিরিয়ে রাখা। এই ট্র্যাকে যেই আসবে, সেই গুম/খুন/দেশ ত্যাগে বাধ্য হবে। এমনটাই পরিলক্ষিত হচ্ছে।
মিজানুর রহমান আজহারি মাহফিল করেন ২০১২ সাল থেকে, কিন্ত যতো দিন যুবকদের গনজাগরণ তার দিকে ছিলো না, ততদিন তার কোন শত্রুও ছিলো না, কিন্ত যখনই যুবসমাজের বিরাট একটা অংশ তার দিকে ঝুকে গেলো, তখনই তাকে আটকে দেয়া হলো, বাধ্য করা হলো দেশত্যাগে। একইভাবে সাংবাদিক মাহমুদুর রহমান, শফিক রেহমান, লেখক পিনাকী ভট্টাচার্যরাও প্রবাসী হতে বাধ্য হয়েছেন।
নারীর সম্ভ্রম রক্ষা, গুম খুন ধর্ষন চাঁদাবাজি হামলা মামলা যেনো নিত্য দিনের ঘটনা। এক দিকে কিছু কুচক্রী মহল সরকারের ভাবমূর্তি নস্যাৎ করতে কিছু ঘটনা ঘটিয়ে থাকে। আবার নৈতিক অধঃপতন, পরমত সহিষ্ণুতার অভাব, গণতন্ত্রহীনতা, ক্ষমতা ও সম্পদের মাত্রাতিরিক্ত লোভ লালসা আমাদের দেশটাকে অধঃপতনের তলানিতে নিয়ে গেছে।
এর থেকে উত্তরণে নৈতিকতা সমৃদ্ধ পরমত সহিষ্ণু একটি মজবুত ও কার্যকর গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করা দরকার।