সব্যসাচী বিশ্বাস/ (অভয়নগর) যশোর:
সোমবার হতে চলছে টানা বর্ষণ। এতে যশোরের প্রায় সব উপজেলা বিশেষতঃ অভয়নগরের বিভিন্ন গ্রামের মানুষের চলাফেরা এবং দৈনন্দিন কাজে বিঘ্ন সৃষ্টি হচ্ছে। গ্রামের মাটির রাস্তাগুলো কাদা পানিতে ভরে গেছে।
ঘরের বাইরে গেলেই কাঁদা আর পানি। এতদিন বৃষ্টি ছিলো না, কৃষকেরা হতাশায় ছিল। যদিও বৃষ্টি হচ্ছে তবে কাজ নেই, বেকার ঘরে বসেই চলছে জীবন-যাত্রা।
অন্যদিকে করোনা পরিস্থিতিও ভয়াবহ পর্যায়ে রয়েছে যশোর-খুলনা তথা দক্ষিণাঞ্চলে। চলছে বিধিনিষেধ চলাফেরাতে।
গ্রামের হাট বাজার গুলিতে চায়ের দোকানে আড্ডায় এই বিষয় নিয়ে আলোচনা হলেও ঘরে থাকার চেষ্টা নেই কারো মধ্যে। বৃষ্টি যেন আর্শীবাদ হয়ে এসেছে, তাই, ঘরে আবদ্ধ জনমানুষ।
রাস্তাঘাটে পানি জমে যাওয়ায় বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হননি। তবে সবচেয়ে বেশি অসুবিধায় পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষেরা।
ভ্যান বা অটো চালিয়ে যাদের জীবন চলে তারাই বেশি বিপাকে।
এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে কেনা ভ্যানটি। তা চালিয়েই পরিবারের খরচ ছাড়াও অতিরিক্ত হিসেবে ঋণের কিস্তি। ভ্যান চালক বুলবুল বলেন, রাস্তায় বের হতে পারছি না, সারাদিনে একটাকা ইনকাম নেই কিন্তু সপ্তাহ শেষে কিস্তির কি করবো? বাজার করবো কিভাবে?
চায়ের দোকানদার আসর আলী বলেন, সকালে দোকান খুলে বসে আছি, প্রায় একশত (১০০) টাকার কাঠ পুড়ালাম। নেই কোনো খরিদ্দার। বৃষ্টি এবং করোনার কারনে ব্যাবসা শেষ প্রায়। বাজার করার মত টাকা নেই, বৌ ছেলে মেয়ে নিয়ে কিভাবে বাঁচবো?
সবজি চাষীরা সবজি তুলেও বিপদে পড়ে, আসতে পারছে না পাইকারী ক্রেতারা যাদের কাছে সবজি বিক্রি করে থাকে তারা। একদিন রাখলে তা আবার হয়ে যায় বিক্রির অযোগ্য। বিভিন্ন প্রকার সবজি বাগানে পানি বেঁধে গোড়া পঁচে ক্ষতি হচ্ছে গাছের।
তবে মাছ চাষীদের মুখে মুচকি হাসি ফুটেছে বৃষ্টিতে। ঘেরে জমেছে পানি, চারা মাছ ছেড়ে দিচ্ছে তারা। অভয়নগরের মাছ চাষী জয়ন্ত বিশ্বাস বলেন, খরায় চিন্তায় ছিলাম এবার ঘেরে মাছ দিতে পারবো কিনা তবে সে চিন্তা আর রইল না।এই বর্ষা কারো কাছে কষ্টের এবং কারো কাছে হাসি হিসেবে ধরা দেখা দিল।