আবু সাইদ বিশ্বাসঃ ক্রাইমবার্তা রিপোর্ট:সাতক্ষীরাঃ মুসলিম স্থাপত্যশৈলীর উজ্জ্বল নিদর্শন সাতক্ষীরার ঐতিহাসিক তেতুলিয়া শাহী জামে মসজিদ । এটি জেলার তালা থানার অন্তর্গত তেতুলিয়া গ্রামে অবস্থিতিত।এটি প্রায় দেড় শত বছরের পুরাতন একটি ঐতিহাসিক মসজিদ। বর্তমানে অযতœ আর অবহেলায় ঐতিহ্যবাহী এ মসজিদটির সৌন্দর্য নষ্ট হতে বসেছে। সংস্কারের না করলে ঐতিহ্যের স্বাক্ষী তেঁতুলিয়া শাহী জামে মসজিদ কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাবে।
মুসলিম স্থাপত্যশিল্পের এক অনন্য নিদর্শন তেঁতুলিয়া মসজিদ, যা স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে মিয়ার মসজিদ নামেই পরিচিত। তবে মসজিদটির নামকরন করা হয়েছিল “খান বাহাদুর কাজী সালামতউল¬াহ জামে মসজিদ” নামে, যিনি এই মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন । প্রতিষ্ঠাতা জমিদার কাজী সালামতউল¬াহ মোঘল আমলে (১৮শতকে) এই মসজিদটি নির্মান করেন।
মসজিদের সাথেই রয়েছে বিশাল আকারের পুকুর, যার আয়তন প্রায় ২ একর।
মসজিদটিতে ৭ টি দরজা আছে। প্রতিটি দরজার উচ্চতা ৯ ফুট এবং প্রস্থ ৪ ফুট। ১০ বর্গফুট বেড় বিশিষ্ট ১২ টি পিলারের উপর মসজিদের ছাদ নির্মিত। চনসুরকি ও চিটাগুড়ের গাঁথুনিতে নির্মিত মসজিদটিতে ১৫ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট ৬ টি বড় গম্বুজ ৮ ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট ১৪টি মিনার রয়েছে। ২৫ফুট উচ্চতাবিশিষ্ট চার কোনে ৪টি মিনার। মসজিদের ভিতরে ৫টি সারিতে ৩২৫জন ও মসজিদের বাইরের চত্বরে ১৭৫ জন নামাজী একসাথে নামাজ আদায় করতে পারে। ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটি বাংলাদেশের সরকারের প্রতœতত্ম অধিদপ্ত প্রতœতাত্ত্বিক হিসেবে গ্রহণ করেছে।
মসজিদের বারান্দায় একবারে পূর্ব কোণে একটা সিঁড়ি রয়েছে এবং এর মাথায় রয়েছে ছোট একটি চৌকণাকৃতির জায়গা। মসজিদের মুয়াজ্জিন সাহেব জানান এই স্থানটিতে উঠে আযান দেওয়া হত, যখন মাইকের চল ছিলনা। মাইক আসার পর আযানের সেই পদ্ধতি আর নেই। বর্তমানে সেই স্থানটিতে মাইক বসানো হয়েছে।
বর্তমানে অযতœ আর অবহেলায় ঐতিহ্যবাহী এ মসজিদটির সৌন্দর্য নষ্ট হতে বসেছে। ৭টি মিনার ভেঙে পড়ার উপক্রম। মসজিদের বাউন্ডারি এলাকায় বহু অজানা ব্যক্তিদের কবরের চিহ্ন থাকলেও সেগুলো অরক্ষিত। মসজিদটির ফ্লোরে ও পশ্চিম পাশের দেয়ালের উপরের অংশে ফাটল ধরেছে। যদি সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহণ না করা হয় তবে ইতিহাস আর ঐতিহ্যের স্বাক্ষী তেঁতুলিয়া শাহী জামে মসজিদ (মিয়ার মসজিদটি) কালের বিবর্তনে হারিয়ে যাবে।