কলারোয়া শেখ হাসিনার বহরে হামলা: ৭ জনের জামিন স্থগিত

২০০২ সালে সাতক্ষীরায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত সাতজনকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত থাকবে বলে আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ।

হাইকোর্টের আদেশের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের লিভ টু আপিল নিষ্পত্তি করে সোমবার (২১ জুন) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ভার্চ্যুয়াল আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এম আমিন উদ্দিন। আসামিপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।গত ২৬ মে ওই সাত আসামিকে জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে ২৭ মে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত জামিনের ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছিলেন।

একইসঙ্গে শুনানির জন্য নিয়মিত বেঞ্চে পাঠানোর আদেশ দেন। সে অনুসারে আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য এলে ৩০ মে রাষ্ট্রপক্ষকে তিন সপ্তাহের মধ্যে লিভ টু আপিল করতে বলা হয়। এ সময় পর্যন্ত হাইকোর্টের দেওয়া জামিনাদেশ স্থগিত থাকবে।

এ আদেশ অনুসারে রাষ্ট্রপক্ষ লিভ টু আপিল করেন। সে আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার আদেশ দেন আপিল বিভাগ।

হাইকোর্টে জামিনপ্রাপ্তরা হলেন- আবদুস সাত্তার, গোলাস রসুল, আব্দুস সামাদ, জহিরুল ইসলাম, রাকিব, শাহাবুদ্দিন ও মনিরুল ইসলাম।

২০০২ সালে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ওই মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখে মাগুরায় যাচ্ছিলেন। কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়িবহর পৌঁছালে একদল সন্ত্রাসী লাঠিসোটা, ধারালো অস্ত্র, বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তারা গুলিবর্ষণ করে এবং বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়। এ সময় বিরোধীদলীয় নেতা প্রাণে রক্ষা পেলেও তার গাড়িবহরে থাকা সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেত্রী ফাতেমা জাহান সাথী, জোবায়দুল হক রাসেল, শেখ হাসিনার ক্যামেরাম্যান শহীদুল হক জীবনসহ অনেকেই আহত হন। বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও এ ঘটনায় আহত হন।

ওইদিনই কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

২০১৫ সালে এ ঘটনায় আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়। এর মধ্যে হত্যাচেষ্টা মামলায় এক আসামি রাকিবের বয়স ঘটনার সময় ১০ বছর ছিল উল্লেখ করে হাইকোর্টে মামলা বাতিলে আবেদন করা হয়। ২০১৭ সালে ওই আবেদনে একই সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়ে রুল জারি করেন।

গত বছরের ৮ অক্টোবর ওই রুল খারিজ করে রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাকিব। এ আবেদনে আপিল বিভাগ তিন মাসের মধ্যে নিম্ন আদালতে বিচার সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন। এরপর বিচার শেষে সাতক্ষীরার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গত ৪ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ তিনজনের সর্বোচ্চ ১০ বছর করে এবং বাকী ৪৭ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়ে রায় দেন।

পরে আসামিরা আপিল করেন। এরপর হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন।

Check Also

বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়িয়ে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেবহাটায় মানববন্ধন

দেবহাটা প্রতিনিধি: স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের গ্রেফতার এবং বিএনপির …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।