সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অক্সিজেন সংকটের কারনে ৭ রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে আগামী ৩ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। কমিটির নেতৃত্বে থাকবেন ডা. কাজী আরিফ আহমেদ। এছাড়া দু’জন সদস্য হলেন ডা. সাইফুল্লাহ ও ডা. মারুফ।
এদিকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতারের তত্বাবধায়ক ডা: কুদরত ই খোদা আজ সকালে ৪জনের মৃত্যুর কথা স্বীকার করেছেন। তিনি জানান, অক্সিজেন সংকট ছিল না। কিন্তু প্রেসার কমে যায়। এরফলে সমস্যা হয়েছে।
কেন প্রেসার কমে গেল তার জন্যে ডা. আরিফ আহমেদকে প্রধান করে ৩সদস্যের কমিটিকে আগামী ৩দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
সামেক হাসপাতালে রোগীর মৃত্যুতে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবী করেছে নাগরিক কমিটি
সাতক্ষীরা করোনা ডেডিকেটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অক্সিজেন সরবরাহে বিঘœতায় রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটি। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে নাগরিক কমিটির নেতৃবৃন্দ বলেন, তিনদিন পূর্ব থেকে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্টের সরবরাহ কমে আসায় মিটারে সিগন্যাল পাওয়া যায় বলে আমরা জানতে পেরেছি।
কিন্তু তারপরও কতৃপক্ষ যথাসময়ে অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করেনি। অক্সিজেন অভাবে বুধবার সন্ধ্যায় ছটফট করতে করতে পরপর ৭ থেকে ১০ জন রোগীর মৃত্যুর পর অক্সিজেনের ট্রাক এসে সরবরাহ নিশ্চিত করলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এ সময় কতজন রোগী মারা গেছে তা নিয়েও ধ্র¤্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। যদিও তাৎক্ষণিক কোন কোন রোগীর স্বজনরা বাইরে থেকে অক্সিজেন এনে তাদের স্বজনদের জীবন রক্ষা করে।
নাগরিক নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, গত এক মাসের মধ্যে ৩/৪ জন চিকিৎসক ছাড়া আর কোন চিকিৎসককে মেডিকেল কলেজের কোন ওয়ার্ডে যেতে দেখেননি কোন রোগী বা তাদের স্বজনরা। হাতে গোনা ৩/৪ জন চিকিৎসক ও ইন্টানি চিকিৎসকরা ২৪ ঘন্টা পরিশ্রম করে মেডিকেল কলেজের চিকিৎসা ব্যবস্থা বাঁচিয়ে রাখলেও অন্যারা বেসরকারী ক্লিনিক হাসপাতাল নিয়ে ব্যস্ত। মেডিকেল কলেজের সেন্ট্রাল অক্সিজেন প্লান্ট কখনো পূর্ণ করা হয় না।
ট্রাকে অক্সিজেন এনে অর্ধেক প্লান্টে দিয়ে বাকি অর্ধেক ঐ ট্রাকেই ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। সিলিন্ডারেও অর্ধৈক অক্সিজেন ভরা হয়। এসব অভিযোগ এখন ভিতরের লোকজনই বলাবলি করছে। একটি চক্র এভাবে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালকে হরিলুটের আখড়ায় পরিণত করে প্রকারন্তে রোগীদেরকে বেসরকারী হাসপাতাল ক্লিনিকে যেতে উৎসাহিত করছে। এমনকি টাকা নিয়ে রোগী ভর্তির মত অভিযোগও আমরা শুনতে পাচ্চি।
এমতাবস্থায় আমরা সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির পক্ষ থেকে অক্সিজেন সরবরাহে বিঘœতার কারনে রোগীর মৃত্যুসহ অন্যান্য ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের নিরপেক্ষ তদন্ত দাবী জানাচ্ছি।
জেলা নাগরিক কমিটির পক্ষে বিবৃতিদাতারা হলেন, সাতক্ষীরা জেলা নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক মো. আনিসুর রহিম, যুগ্ম আহবায়ক, এড. শেখ আজাদ হোসেন বেলাল, সদস্য সচিব এড. আবুল কালাম আজাদ, যুগ্ম সদস্য সচিব আলী নুর খান বাবলু, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি অধ্যক্ষ আবু আহমেদ, সাবেক অধ্যক্ষ প্রফেসর আব্দুল হামিদ, দৈনিক দক্ষিণের মশাল সম্পাদক অধ্যক্ষ আশেক-ই-এলাহী, সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এম কামরুজ্জামান, জেলা জেএসডি’র নেতা সুধাংশু শেখর সরকার, বিশিষ্ঠ রাজনীতিবীদ শেখ হারুণ অর রশিদ, জেলা জাতীয় পাটির যুগ্ম সম্পাদক আনোয়ার জাহিদ তপন, জেলা জাসদ সভাপতি ওবায়দুস সুলতান বাবলু, বাংলাদেশ জাসদ জেলা সাধারণ সম্পাদক প্রভাষক ইদ্রিশ আলী, জেলা সিপিবি সভাপতি আবুল হোসেন, বাসদের সমন্বয়ক নিত্যানন্দ সরকার, উদীচীর সভাপতি শেখ সিদ্দিকুর রহমান, জেলা বঙ্গবন্ধু পেশাজীবী লীগের সাধারণ সম্পাদক এড. আল মাহামুদ পলাশ, আসাদুজ্জামান লাভলু, উন্নয়ন কর্মী মাধব চন্দ্র দত্ত, এড. মুনির উদ্দিন, শেখ মনিরুজ্জামান, মোহন কুমার মন্ডল, মরিয়ম মান্নান, মটর শ্রমিক নেতা রবিউল ইসলাম, মহব্বত আলী, ভূমিহীন নেতা কওসার আলী, আব্দুস সামাদ, আব্দুস সাত্তার, সাহিত্যিক গাজী শাহজাহান সিরাজ প্রমুখ। প্রেসবিজ্ঞপ্তি