ই-কমার্সভিত্তিক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ই-ভ্যালি ডটকম-এর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। গত রবিবার (৪ জুলাই) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ডব্লিউটিও সেলের উপ-সচিব খলিলুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই চিঠি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব বরাবর পাঠানো হয়।
বাংলাদেশ ব্যাংকের পত্র নং পিএসডি/এডিসি অ্যান্ড এল (বিবিধ)/৪/২০২১-১১২৫; তারিখ-১৬/০৬/২০২১ খ্রি.-এর পরিপ্রেক্ষিতে এই চিঠি দেওয়া হয়।
দুর্নীতি দমন কমিশন চেয়ারম্যানের কাছেও একই চিঠি পাঠানো হয়েছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ই-ভ্যালি ডটকম নামক ডিজিটাল কমার্স প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে তদন্ত পরিচালনা করে এবং এ বিষয়ে একটি প্রতিবেদন পাঠায়। প্রতিবেদনে দেখা যায়, গত ১৪ মার্চ ই-ভ্যালির মোট সম্পদ ৯১ কোটি ৬৯ লাখ ৪২ হাজার ৮৪৬ টাকার মধ্যে চলতি সম্পদ ৪ কোটি ১৭ লাখ ৮ হাজার ৩৭০ টাকা এবং মোট দায় ৪০৭ কোটি ১৮ লাখ ৪৮ হাজার ৯৯৪ টাকা। ওই তারিখে ই-ভ্যালির গ্রাহকের কাছে দায় ২১৩ কোটি ৯৪ লাখ ৬ হাজার ৫৬০ টাকা এবং মার্চেন্টের কাছে দায় ১৮৯ কোটি ৮৫ লাখ ৯৫ হাজার ৩৫৪ টাকা। গ্রাহক থেকে অগ্রিম হিসাবে গৃহীত ২১৩ কোটি ৯৪ লাখ ৬ হাজার ৫৬০ টাকা এবং মার্চেন্ট থেকে ১৮৯ কোটি ৮৫ লাখ ৯৫ হাজার ৩৫৪ টাকার মালামাল গ্রহণের পর স্বাভাবিক নিয়মে প্রতিষ্ঠানটির কাছে কমপক্ষে ৪০৩ কোটি ৮০ লাখ এক হাজার ৯১৪ টাকার চলতি সম্পদ থাকার কথা; কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির কাছে চলতি সম্পদ রয়েছে মাত্র ৬৫ কোটি ১৭ লাখ ৮৩ হাজার ৭৩৬ টাকার।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও প্রতীয়মান হয় যে ই-ভ্যালির চলতি সম্পদ দিয়ে মাত্র ১৬.১৪ শতাংশ গ্রাহককে পণ্য সরবরাহ করতে পারবে বা অর্থ ফেরত দিতে পারবে। বাকি গ্রাহক এবং মার্চেন্টের পাওনা পরিশোধ করা ওই কোম্পানির পক্ষে সম্ভব নয়। তদুপরি গ্রাহক ও মার্চেন্টের কাছ থেকে গৃহীত ৩৩৮ কোটি ৬২ লাখ ১৮ হাজার ১৭৮ টাকার কোনও হদিস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে গ্রাহক ও মার্চেন্টের কাছ থেকে গৃহীত ৩৩৮ কোটি ৬২ লাখ ১৮ হাজার ১৭৮ টাকা আত্মসাৎ কিংবা অবৈধভাবে অন্যত্র সরিয়ে ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে।
এতে বলা হয়, বর্ণিত অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনের আলোকে ই-ভ্যালির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ জানানো যাচ্ছে।