দুই সপ্তাহে উপসর্গে ৪৮৬ মৃত্যু, তৃতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু সাতক্ষীরায়

দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে করোনা সংক্রমণের উপসর্গে মৃতের সংখ্যা বেড়ে গেছে। সর্বশেষ দুই সপ্তাহে (২৩ জুন থেকে ৬ জুলাই) সারা দেশে মারা গেছেন ৪৮৬ জন। সব মিলিয়ে দেশে এ পর্যন্ত করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ২ হাজার ৯৩৯ জন। এরমধ্যে সাতক্ষীরা জেলায় মারা গেছেন ২৪৫ জন বলে জানিয়েছে বিপিও। আর এর সাথে গত ৭ থেকে ১০ জুলাই পর্যন্ত ৪ দিনে মারা গেছে আরো ৩৩ জন। অর্থাৎ বিপিও এর হিসাবে ১৯ দিনে মারা গেছে ২৭৮জন।

দেশের করোনা পরিস্থিতি তুলে ধরতে গিয়ে এমনটাই জানিয়েছে বাংলাদেশ পিস অবজারভেটরি (বিপিও)। এটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর জেনোসাইড স্টাডিজের (সিজিএস) একটি প্রকল্প। জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনডিপির আর্থিক সহায়তায় কয়েকটি বিষয় নিয়ে নিয়মিত প্রতিবেদন প্রকাশ করে আসছে বিপিও। করোনা পরিস্থিতি নিয়ে ২৫টি গণমাধ্যমের সংবাদ বিশ্লেষণ করে শনিবার নতুন প্রতিবেদন দিয়েছে বিপিও।

তবে স্থানীয়ভাবে সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী ২৩ জুন থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলায় মারা গেছে ১১৯ জন। জুলাই মাসের গত ১০ দিনে ৭৬ জন এবং গত ১ জুন থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলায় মারা গেছে ১৩৫ জন। এছাড়া কোভিড পজিটিভ মারা গেছে জুলাই মাসের গত ১০ দিনে ২ জন এবং জুন মাসের ১ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত ২৯ জন।

গবেষণা প্রতিবেদন বলছে, করোনার উপসর্গে সর্বোচ্চ ২৭০ জন মারা গেছেন রাজশাহী জেলায়। এরপর কুমিল্লায় ২৫২ জন, সাতক্ষীরায় ২৪৫ জন, চাঁদপুরে ১৬১ জন, খুলনায় ১৪৯ জন, চট্টগ্রামে ১০৪ জন, বরিশালে ৯৮ জন, ঢাকায় ৯২ জন, বগুড়া ও ফরিদপুরে ৭১ জন মারা গেছেন করোনার উপসর্গ নিয়ে। বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ৭৪২ জন মারা গেছেন চট্টগ্রাম বিভাগে।

খুলনা বিভাগে ৬৬২, রাজশাহী বিভাগে ৫২৪ জন, ঢাকা বিভাগে ৪৬৪ জন, বরিশাল বিভাগে ২৫৩ জন, সিলেট বিভাগে ১০৩ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৯৬ জন ও রংপুর বিভাগে ৯৫ জন করোনার উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন। এখন পর্যন্ত উপসর্গে মৃতের মধ্যে নারীর তুলনায় পুরুষের সংখ্যা পাঁচ গুণ। নারী মারা গেছেন ৪৮৯ জন, আর পুরুষ মারা গেছেন ২ হাজার ৪৫০ জন।

বিপিও বলছে, ৮ মার্চ থেকে করোনার বিষয়ে গণমাধ্যমের প্রকাশিত তথ্য সংগ্রহ করে প্রতি সপ্তাহে একটি প্রতিবেদন দেওয়া শুরু হয়। এতে দেখা যায়, ২২ থেকে ২৮ মার্চের সপ্তাহে করোনা উপসর্গ নিয়ে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে। পরের সপ্তাহে এটি বেড়ে দাঁড়ায় ৬৩ জনে। এরপর এটি বাড়তে থাকে। এক সপ্তাহে সর্বোচ্চ ২২২ জনের মৃত্যু হয়েছে গত ২১ থেকে ২৭ জুন-এই এক সপ্তাহে। এ বছরের শুরু থেকে দুই সপ্তাহ পর প্রতিবেদন দেওয়া শুরু হয়। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত উপসর্গে মৃত্যুর তথ্য পাওয়া যায়নি। সংক্রমণ বেড়ে গেলে জুন থেকে আবার উপসর্গে মৃত্যুর খবর আসতে থাকে।

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, দেশে এ পর্যন্ত করোনায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৯ হাজার ৩১৫। মোট মৃত্যু হয়েছে ১৬ হাজার ১৮৯ জনের। আর গত ২৪ ঘণ্টায় (শুক্রবার সকাল আটটা থেকে শনিবার সকাল আটটা পর্যন্ত) মোট ২৭ হাজার ৮৮৪ জনের নমুনা পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার বিপরীতে রোগী শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৪৬ শতাংশ।

Check Also

তালায় ইউপি পরিষদ কক্ষে দুই সাংবাদিকের উপর হামলা, প্রতিবাদে মানববন্ধন

তালা প্রতিনিধি তালার ইসলামকাটি ইউনিয়ন পরিষদে সাংবাদিক আক্তারুল ইসলাম ও আতাউর রহমানের ওপর সন্ত্রাসী রমজান আলী …

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

***২০১৩-২০২৩*** © ক্রাইমবার্তা ডট কম সকল অধিকার সংরক্ষিত।