আবু সাইদ বিশ্বাস:সাতক্ষীরা: চাহিদার তুলনায় কুরবানির পশুর উৎপাদন বেশি থাকার পরও সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু প্রবেশ করায় দেশী কুরবানির পশু অবিক্রত থাকবে । করোনাভাইরাসের উচ্চ মাত্রার সংক্রমণ ঝুকির মধ্যেও সাতক্ষীরাসহ সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় গরু আসা বন্ধ হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। চলতি সপ্তাহে শ্যামনগর সীমান্তে ৮ ভারতীয় গরু আটক করে কৈখালী উপকূল রক্ষী বাহিনী (কোষ্টগার্ড) সদস্যরা। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে ভারতীয় গরু বেচা কেনার খবর পাওয়া গেছে। তবে ঈদুল আজহা উপলক্ষে সীমান্ত দিয়ে যাতে ভারতীয় গরু না আসতে পারে সে জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষে গ্রহণের কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এদিকে সংক্রমণ ঝুঁকি থাকলেও কুরবাণির পশু হাটে বেশির ভাগ ক্রেতা-বিক্রেতাকে মাস্ক ছাড়াই পশু কেনাবেচা করতে দেখা গেছে। ছিল না সামাজিক দূরত্ব। জেলায় পশুর হাটে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে ইজারাদারদের প্রতি জেলা প্রশাসন থেকে কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চলতি বছর হৃষ্টপুষ্টকৃত ৩৮ লাখ ৫৮ হাজার ৮০০টি গরু-মহিষ ও ২৩ লাখ ৭২ হাজার ৭৪৮টি ছাগল-ভেড়া কুরবাণির জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহায় দেশি গরু দিয়েই কোরবানির সব প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে সম্পন্ন সরকার। এ বছর এক কোটি ১৯ লাখ ১৬ হাজার পশু রয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় ১৯ হাজার বেশি। দেশি পশুতে চাহিদা পূরণ হওয়ায় দেশের বাইরে থেকে গরু আনা বন্ধে কঠোর অবস্থানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
সাতক্ষীরা জেলা জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পরিসংখ্যান থেকে জানা গেছে, জেলায় কুরবাণির পশুর চাহিদা রয়েছে ৪৮ হাজার। সেখানে খামারিদের কাছে প্রস্তুত রয়েছে ৫৬ হাজার ৪০১টি বিভিন্ন প্রজাতির পশু। কুরবাণির চাহিদা মিটিয়েও জেলাতে ৮ হাজার ৪০১টি কুরবাণি যোগ্য পশু অবিক্রি থেকে যাবে। ১২ হাজার ৮শ জন খামারি কুরবাণির এসব পশু দেখা শুনা করছে। জেলার ১১টি স্থায়ী হাট ও অসংখ্য অস্থায়ী হাট বাজারে এবার এসব পশু বেচা কেনা হচ্ছে।
এসব পশুর মধ্যে সদর উপজেলায় রয়েছে ৮১৩০টি গরু ও ৩৩৪৮টি ছাগল, কলারোয়া উপজেলায় ৫২৮৫টি গরু ও ৫৩২২টি ছাগল, তালা উপজেলায় ৭১৬৩টি গরু ও ৪১৮৬টি ছাগল, আশাশুনি উপজেলায় ২৯৯৩টি গরু ও ২০৫২টি ছাগল, দেবহাটা উপজেলায় গরু ১১৫৫টি ও ১১৮৬টি ছাগল, কলিগঞ্জ উপজেলায় ২৮১১টি গরু ও ৩৮২৬টি ছাগল এবং শ্যামনগর উপজেলায় ৩০৩৬টি গরু ও ৫৭৪৩টি ছাগল রয়েছে। জেলাজুড়ে কোরবানিযোগ্য গরু প্রস্তুত রয়েছে ৩১ হাজার ও ছাগল ২৫ হাজার ৪০১টি। এছাড়াও মৌসুমি গরু-ছাগল পালনকারীদের আছেও উল্লেযোগ্য সংখ্যক কোরবানির পশু রয়েছে।
একটি গরু সাত ভাগিতে কুরবাণি করলে ৩১ হাজার গরুর জন্য ২ লক্ষ ১৭ হাজার ধর্মপ্রাণ মুসলিম এবছর জেলাতে গরু কুরবাণি করবে আর ২৫ হাজার ৪০১ জন ছাগল কুরবাণির জন্য প্রস্তু রয়েছে। সবমিলে ২ লক্ষ ৪২ হাজার ৪০১ জন ব্যক্তি চলতি বছরে জেলাতে পশু কুরবাণি করবে। সরকারী হিসাবটা এমন হলে জেলাতে ২০ লক্ষ মানুষ কুরবাণি করতে সমার্থ হবে না। চলতি বছরে খুলনা বিভাগে এক লাখ ৭ হাজার ২২৭ জন খামারির আট লাখ ৭৮ হাজার ২৪২টি হৃষ্টপুষ্ট গবাদিপশু রয়েছে।
সরকারী ভাবে ভারতীয় গরু আমদানি বন্ধ থাকলে লাভবান হবে দেশের ব্যবসায়ীরা। ভারতীয় গরু দেশে প্রবেশের বিষয়ে সাতক্ষীরা ৩৩ বিজিবির অধিনায়ক বলেন, সাতক্ষীরার সীমান্ত এলাকজুড়ে নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। অবৈধভাবে যেন একটি গরুও দেশে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য চেকপয়েন্ট বসিয়ে কাজ করে যাচ্ছে বিজিবি।
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ শহিদুল ইসলাম বলেন, জেলায় ৫৬ হাজারেরও অধিক কোরবানিযোগ্য গরু ও ছাগল প্রস্তুত রয়েছে। ঈদের শেষ মুহূর্তে হাটগুলো জমে উঠতে শুরু করেছে। প্রত্যেকটি পশুর হাটে মেডিকেল টিম কাজ করছে। অসুস্থ ও ওষুধ ব্যবহার করা হয়েছে মোটাতাজা করা হয়েছে এমন সন্দেহ হলে পশুর হাটে থাকা মেডিকেল টিমকে অবহিত করতে বলা হয়েছে।
Check Also
বিএনপি নেতাকর্মীদের জড়িয়ে হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে দেবহাটায় মানববন্ধন
দেবহাটা প্রতিনিধি: স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার দোসর এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাসী ও ভূমিদস্যুদের গ্রেফতার এবং বিএনপির …