চৌগাছা(যশোর)প্রতিনিধিঃ
যশোরের চৌগাছায় পাটক্ষেতে লাশ উদ্ধার হওয়ায় স্কুলছাত্র মাহমুদ হাসান রাতুর (১৭) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। শ্বশুরবাড়িতে অপমানিত হওয়ায় বদলা নিতে শ্যালককে হত্যার পরিকল্পনা করে আপন ভগ্নিপতি শিশির আহমেদ। পরিকল্পনা অনুযায়ী বোনের ফোন দিয়ে ডেকে নিয়ে গাঁজা সেবন ও কোমল পানীয়র সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে পান করান। এক পর্যায়ে মুখে স্কচটেপ মেরে শ্বাসরোধে হত্যা করে পাটক্ষেতে ফেলে রেখে যায়।
শনিবার ( ১৭ জুলাই) প্রেসব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন যশোর জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) জাহাঙ্গীর আলম।
বিফ্রিংয়ে জানানো হয়, গত ১২ জুলাই চৌগাছা উপজেলার লস্করপুর শ্মশান মাঠে পাটক্ষেত থেকে মুখে স্কসটেপ মোড়ানো রাতুলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রথমে অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধার হলেও পরবর্তীতে স্বজনরা শনাক্ত করেন রাতুলের মরাদেহ। নিহত এহতেশাম মাহমুদ রাতুল (১৮) মহেশপুর উপজেলার বাজিপোতা গ্রামের মহিউদ্দিনের ছেলে ও স্থানীয় সামবাজার এম.পি.বি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের থেকে এবছলের এসএসসি পরীক্ষার্থী ছিল। এই হত্যাকান্ডে জড়িত রাতুলের আপন ভগ্নিপতি শিশির আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। একই সঙ্গে ভিকটিমের মোবাইল ফোন, পরিহিত বস্ত্র ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সরঞ্জাম জব্দ করা হয়েছে।
প্রেসবিফ্রিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) জাহাঙ্গীর আলম জানান, শুক্রবার চট্টগ্রামের সিএমপি বন্দর থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আসামি শিশির আহম্মেদকে গ্রেফতার করা হয়। তার স্বীকারোক্তি মতে একই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে যশোরের চৌগাছা থানা লস্করপুর শ্মশান মাঠে ঘটনাস্থলের অদূরে একটি পাটক্ষেত থেকে ভিকটিমের পরিহিত বস্ত্র ও হত্যা কাজে ব্যবহৃত স্কচটেপ ও হ্যান্ড গ্লাভস উদ্ধার করা হয়। একইদিন ঝিনাইদহ জেলার কোটচাঁদপুর থানাধীন কাশিপুর গ্রামে গ্রেফতার আসামির বসতবাড়ি থেকে মামলার ভিকটিমের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে শিশির আহমেদ জানিয়েছেন, আসামির শ্বশুর (নিহতের বাবা) একদিন বাড়িতে ডেকে নিয়ে অপমান অপদস্ত করে। এতে শিশির ক্ষুব্ধ হন। সেই থেকে শ্বশুরের একমাত্র ছেলে রাতুলকে হত্যার পরিকল্পনা করতে থাকে। পূর্বপরিকল্পনা অনুয়ায়ী ভিকটিমের বোনের (আসামির স্ত্রী) মোবাইল ফোন দিয়ে রাতুলকে ডেকে নিয়ে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাস্থলে নিয়ে যায়। গাঁজা সেবন ও কোমল পানীয়ের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে পান করায়।
এক পর্যায়ে রাতুলের নাক মুখে স্কসটেপ মুড়িয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে শিশির আহমেদ। রাতুলের মৃত্যু নিশ্চিত করে ঘটনাস্থলে মরদেহ গুম করার জন্য ফেলে রাখে ও ভিকটিমের গায়ের কাঁপড় খুলে ঘটনাস্থলের পাশে আরেকটি পাট ক্ষেতে ফেলে রাখে। ভিকটিমের মোবাইলটির সিম খুলে আসামির বসত কক্ষে ইটের নীচে পুতে রাখে।
ব্রিফিংয়ে আরো উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) বেলাল হোসাইন, জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুপন কুমার সরকার, ডিবির এসআই মফিজুল ইসলাম।