সচিবঃ আব্দুস সামাদঃ পশু পালন আদি একটি পেশ।এক সময় আমাদের প্রাচুর্য বলতে “ গোলা ভরা ধান,পুকুর ভরা মাছ আর গোয়াল ভরা গরু” বুঝানো হতো।একশত বছর আগে সম্পন্ন গৃহস্থ বাড়ীতে ১০০/২০০ গরু থাকতো। আরব দেশেও ধনী বলতে উটের সংখ্যা কার কত বেশী বুঝানো হতো।হযরত উসমান (রা:) সাহাবাদের মধ্যে ধনী ছিলেন কারন তাঁর উটের সংখ্যা বেশী ছিল।
আমাদের বহু জমি শুধু গরু/মহিষ বিচরনের জন্য নির্ধারিত থাকতো।মহিষ বাথান শব্দটি বহুল ব্যবহৃত।গরু চলাচলের জন্য গোপাট ছিল।রাজশাহী শহরে মহিষ বাথান বলে একটা এলাকা।এককালে মহিষ নিশ্চয় ছিল।এখন বাড়ী ঘরে পরিপূর্ন।
শাহজাদপুরে রবীন্দ্রনাথ মহিষ বাথানের জন্য জায়গা দিয়েছিলেন।পশু পালনে উৎসাহ দিয়েছিলেন।আজ বেড়া শাহজাদপুরে গাভীর খামার ও দুধ
উৎপাদন ব্যবস্থার শুরুর পর্বে তাঁর অবদান রয়েছে।
প্রানী সম্পদ মন্ত্রনালয়ের হিসাব অনযায়ী এ বার কুরবানী হয়েছে গরু/মহিষ ৪০,৫৩,৬৭৯ টি এবং ছাগল/ভেড়া ৫০,৩৮,৮৪৮টি।মোট ৯০,৯৩,২৪২ টি।
গড়ে গরু কিংবা মহিষের মূল্য এক লক্ষ টাকা ধরা হলে চল্লিশ হাজার পাঁচশত ছত্রিশ কোটি টাকার বিক্রয় সংঘটিত হয়েছে।
কয়েক বছর পূর্বে ভারত গরু আসা বন্ধ
করে দেয়।ইহাতে উচ্চ মহল পর্যন্ত শংকিত ছিল এ বারের ঈদ কি হবে।ফল উল্টা হলো।একটি বাড়ী একটি খামার প্রকল্পের কাজ দেখতে খুলনা থেকে কুষ্টিয়া ও চুয়াডাংগা গেলাম।একেক টা বাড়ীতে ষাড় পালন চলছে গাভী পালন চলছে।ইনাদের জন্য পাকা ঘর আর খামারীরা থাকেন মাটির ঘরে।সত্যিকার অর্থেই গরু পালন, গাভী পালন,ছাগল/ভেড়া পালনে বিপ্লব এসে
গেছে।উদ্ভাবনী উদ্যোগ নিয়ে খুলনায় কাজ করার সময় দেখলাম মেহেরপুরে গুজরাট ভেড়ার খামার গড়ে উঠেছে।
নিউটনের তৃতীয় সূত্র:Every action has equal and opposite reaction.
এ সূত্র বিজ্ঞানের জন্য যেমন সত্য সামাজিক ও অর্থনৈতিক রসায়নের ক্ষেত্রে সমান প্রযোজ্য।আমাদের খামারীরা তা দেখালেন।
এ বছর সরকার অভিনন্দন পাওয়ার যোগ্য যে কারনে তা হলো ভারত,মিয়ানমার এবং অন্য দেশ থেকে পশু আমদানী বন্ধ করে দিয়ে খামারীদের স্বার্থ সংরক্ষন করেছেন। তাছাড়া রেলে পশু পরিবহনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
সাতক্ষীরার তালার জিয়ালা এক বিখ্যাত দুধ গ্রাম।সেরকম খুলনার ডুমুরিয়ার কৃষ্নপুর।৩০/৪০ লিটার দুধ দেয় এ রকম অজস্র গাভী।মূলত গরীব খামারীর করেছেন এখন ধনী।সারাদেশেই এ রকম উদ্যোগ আছে।
সুনামগন্জের বিশ্বম্ভরপুে ইউএনওর কাজ করার সময় এক এনজিও সার্ভে করে আমাকে জানালেন যে কয়েকটি গ্রাম আছে যারা সারাবছরে কুরবানীর সময় মাংস খাওয়ার সুযোগ পায়।গরীবদের কাছে কুরবানীর মাংস যায় তবে তা বেশী যাওয়া দরকার।
পশুপালনে বাংলাদেশের পূর্বের সুদিন ফিরে আসুক।আমাদের গরীব মানুষদের আয় বৃদ্ধি পাক।
@ কুরবানীর পরিসংখ্যান তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন জনাব আজিজুল ইসলাম উপসচিব মৎস ও প্রানী সম্পদমন্ত্রনালয়।